অন্ট্রে ক্যাফে লাউঞ্জ

ছিমছাম এই রেস্তোরাঁটির অবস্থান বনানী ১০ নাম্বার রোডের ৩৪ নাম্বার বাড়িতে।

মিথুন বিশ্বাসবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 March 2015, 02:54 PM
Updated : 28 March 2015, 09:29 AM

নাম দেখে বিভ্রান্ত হবার কিছু নেই, হ্যাঁ এখানে কফি পাওয়া যায় তবে এটি একটি পুরোদস্তুর রেস্তোরাঁ। কফির কথায় পরে আসা যাক।

বাইরে থেকে ঢুকতে গেলে ভেতরে কিছুটা সবুজ থাকতে পারে এমন মনে হবে! আর কফিবিষয়ক একটি ইঙ্গিতও আছে। 

মাঝারি আকারের এই রেস্তোরাঁয় একসঙ্গে বসতে পারবেন ৪৯ জন। এর মধ্যে বারান্দার অংশে সংকুলান হবে ১৪ জনের মতো।

ভেতরের একটি আলাদা অংশে বসতে পারবেন ১০ জন। জায়গাটার সজ্জায় বাঁশের চিক যেমন দেশি মোটিফ আনে আবার ৪ রকম ভিন্ন রংয়ের সোফা একধরনের মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করে।

এই অংশের সবুজ ছোঁয়া বোধকরি এই রেস্তোরাঁর একটি বিশেষ দিক। এতে পুরো অবদান যে রেস্তোরাঁ পরিচালকদের, সেটাও বলা যাবে না! বারান্দায় এরা ফার্ন ও অনান্য কয়েক ধরনের ছোট গাছ রেখেছেন যা চোখের জন্য বেশ! তবে বাইরের সবুজ দেখতে আরও ভাল লাগবে, রেস্তোরাঁর আশেপাশের প্রতিটি বাড়িই যেন সবুজের আখড়া!

আসা যাক খাবারের কথায়। কন্টিনেন্টাল ঘরানার খাবার, মূলত ইতালিয়ান। আরও আছে থাই-চীনা খাবার। (বোধকরি বাঙালির জিভে এই দুই ঘরানার খাবারের জনপ্রিয়তার কথা চিন্তা করে রাখা হয়েছে!)

অ্যাপেটাইজার হিসাবে শ্রিম্প ককটেইল (২৩০ টাকা) আর সালাদের চিকেন ক্যাসুনাট সালাদ (২২৫ টাকা) বোধহয় বেশিরভাগ রেস্তোরাঁর মতো এখানেও ‘স্বাভাবিক’ভাবেই জনপ্রিয়।

থাই সুপ ১৫৫ টাকা, ক্রিম অব মাশরুম ১৮৫ টাকায় মিলবে।

ম্যানেজার রাশিদুল হক জানান, দিনের বেলা বনানী অঞ্চলের বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণরা বেশি আসেন।  এই এলাকায় হোটেল ও স্থানীয়ভাবে অবস্থানরত বেশকিছু বিদেশি নিয়মিতই এখানে আসেন, এমন দাবি হকের।  

শেফ বাদল গোমেজ কাজ করেছেন দেশের বাইরে, তবে তার কাজের গণ্ডিকে আবার সীমানায় ফেলা যাচ্ছে না!

গোমেজ যে কাজ করেছেন জাহাজে (!), ক্রুজ লাইন হিসাবে পর্যটকদের ঢেউয়ে ঢেউয়ে ভাসিয়ে নিয়ে বেড়িয়েছে ইউরোপ থেকে দক্ষিণ আমেরিকার আরহেনতিনা (আর্জেন্টিনা) পর্যন্ত।

বছর চারেক কাজ করেছেন আর হাত বেশ ভালোই পাকিয়েছেন ইতালিয়ান খাবার তৈরিতে। খুঁটিনাটিও ভালই শিখেছিলেন, তবে তা কাজে লাগাতে গিয়ে আবার কিছুটা অদল-বদলও করতে হয়েছে।

যেমন এই রেস্তোরাঁর অন্যতম জনপ্রিয় খাবার স্পাগেত্তি বলোনেজ ইতালীয় ঘরানায় তৈরি করলে অনেকেই বলেছেন- ‘এ তো কাঁচা! ঠিক মতো রান্না করা হয়নি’!

‘রহস্য’ হল ইতালিয়ানরা স্প্যাগেত্তি একটু শক্ত খেয়ে থাকে যাতে দাঁতে লাগে! যাকে ওরা বলে থাকেন ‘আল দেন্তে’।

চিকেন মাশরুম এখানে ইতালীয় কায়দায় তৈরি করা হয়, আর একটি বিশষত্ব এর সস! পারমেজান চিজ এই সসের বিশেষ অনুষঙ্গ। এর জন্য গুনতে হবে ৩৫৫ টাকা। আর পেনে আলফ্রেদোর জন্য দিতে হবে ৩৮৫ টাকা।

স্টেক আছে কয়েক ধরনের। বেঙ্গল মিট থেকে আনা হয় স্টেকে ব্যবহৃত মাংস, জানান ম্যানেজার। যাদের সরবরাহকৃত মাংস স্বাস্থ্যকর পরিবেশে উৎপাদন করা হয়। সারলয়েন ৭০০ টাকা, টি-বোন ৮০০ টাকা পড়বে।

কফির কথা বলা হচ্ছিল আগে। এখানকার কফি ঢাকার দুই-একটি ‘নামীদামী’ জায়গার তুলনায় ভালো লাগতে পারে! কারনটা কী? এদের কফি বিনজ আনা হয় এমন এক কোম্পানি থেকে যারা বিশ্বের ১১টি দেশ থেকে কফি আমদানি করে থাকে। আর এই কোম্পানিটি যিনি পরিচালনা করেন তিনি একজন বাংলাদেশি এবং দীর্ঘদীন বিদেশে বারিস্তা (পরিবেশনযোগ্য কফি যিনি তৈরি করেন) হিসাবে কাজ করেছেন।

ভালো কথা অন্ট্রে’র বারিস্তা নিজেও এই কফি কোম্পানিতে ট্রেইনিং নিয়েছেন ও কাজ করেছেন ১ বছরেরও বেশি সময়। সোনায় সোহাগা মনে হচ্ছে কী!

এখানকার বারিস্তা বনি আমিন জানান, বাংলাদেশিরা কাপুচিনো (১৬০/ ২৮০ টাকা) বেশি পছন্দ করেন। আর বিদেশিদের পছন্দ এসপ্রেসো (১২০/ ১৬০ টাকা)। এছাড়া লাত্তে, আমেরিকানো, মাকিয়াতো মিলবে।

ছবি: লেখক ও ফেইসবুক