নবাবগঞ্জ জাতীয় উদ্যান

স্থানীয়ভাবে পরিচিত পঞ্চবটীর বন নিয়ে নানান কাহিনীও প্রচলিত আছে।

মুস্তাফিজ মামুনবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Feb 2015, 09:46 AM
Updated : 11 April 2015, 03:54 PM

দিনাজপুর জেলায় নবাবগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে প্রায় এক কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে এই উদ্যানের অবস্থান।

নবাবগঞ্জ বনবিটের জগন্নাথপুর, হরিল্যাখুর, বড় জালালপুর, আলোকধুতি, তর্পনঘাট, রসুলপুর ও খটখটিয়া কৃষ্টপুর মৌজা নিয়ে উদ্যান গঠিত। এই জাতীয় উদ্যান আসলে একটি শালবন। স্থানীয়ভাবে পঞ্চবটীর বন নামেও পরিচিত।

২০১০ সালের ২৪ অক্টোবর নবাবগঞ্জ বনবিটের এই অঞ্চলকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করা হয়। আয়তন ৫১৭ দশমিক ৬১ হেক্টর বা ১২৭৮ দশমিক ৫০ একর।

২০১০ সালে জাতীয় উদ্যানের মর্যাদা পেলেও এই বনাঞ্চল বেশ পুরানো। এ জঙ্গল নিয়ে নানান কাহিনীও প্রচলিত আছে স্থানীয়দের কাছে।

জানা যায়— কুশদহ, পার্বতীপুর, ফুলবাড়ী, বিরামপুর ও ঘোড়াঘাট পর্যন্ত এ বনের ৫টি শাখা ছিল। তাই এর আরেক নাম পঞ্চবটী। জনশ্রুতি আছে শিবের কৈলাশবাস আর সীতার বনবাস এই বনেই হয়েছিল। এছাড়া দস্যু রত্নাকর সিদ্ধিলাভ করে বাল্মীকি মুনিরূপে খ্যাতিলাভ করেন এই বনে।

নবাবগঞ্জ জাতীয় উদ্যানের প্রধান বৃক্ষ শাল ও সেগুন। এছাড়াও আছে গামার, ইউক্যালিপটাস, জাম, আকাশমনি ও নানান শ্রেণির অর্কিড। বনের বাসিন্দা বন্যপ্রাণীর মধ্যে আছে বনবিড়াল, শিয়াল, মেছো বাঘ, নানান রকম সাপ। নানান জাতের পাখিও আছে এ বনে।

কীভাবে যাবেন

প্রথমে যেতে হবে দিনাজপুর জেলা শহর। সেখান থেকে বাসে চড়ে নবাবগঞ্জ উপজেলা সদরে। এরপর রিকশা কিংবা অটো রিকশায় যাওয়া যাবে নবাবগঞ্জ জাতীয় উদ্যানে।

রাজধানী থেকে দিনাজপুর সড়ক ও রেলপথে যাওয়া যায়।

ঢাকা থেকে দিনাজপুরগামী বাসগুলো সাধারণত ছাড়ে গাবতলী ও কল্যাণপুর থেকে। এ পথে নাবিল এন্টারপ্রাইজের এসি বাস চলাচল করে। ভাড়া ১ হাজার টাকা।

এছাড়া হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী পরিবহন, নাবিল এন্টারপ্রাইজ, বাবলু এন্টারপ্রাইজ, কেয়া পরিবহন,  সেফ লাইনের নন এসি বাস চলাচল করে এ পথে। ভাড়া ৬শ’ থেকে সাড়ে ৬শ’ টাকা।

ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে আন্তঃনগর ট্রেন দ্রুতযান এক্সপ্রেস ছাড়ে সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে। আর আন্তঃনগর একতা এক্সপ্রেস ছাড়ে সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে। ঢাকা থেকে একতা ও দ্রুতযান এক্সপ্রেস বন্ধ যথাক্রমে মঙ্গল ও বুধবার।

ভাড়া শোভন সিট ৩৬০ টাকা। শোভন চেয়ার ৪৩০ টাকা। প্রথম শ্রেণি চেয়ার ৫৭০ টাকা। প্রথম শ্রেণি বার্থ ৮৫৫ টাকা।

দিনাজপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে দ্রুতযান এক্সপ্রেস ছাড়ে সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে আর একতা এক্সপ্রেস ছাড়ে রাত ৯টা ২০ মিনিটে। দিনাজপুর থেকে একতা ও দ্রুতযান এক্সপ্রেসের বন্ধ যথাক্রমে সোমবার ও বুধবার।

কোথায় থাকবেন

দিনাজপুর শহরে থাকার জন্য ভালো মানের হোটেল হচ্ছে পর্যটন মোটেল (০৫৩১-৬৪৭১৮)। এছাড়া ঢাকায় পর্যটনের প্রধান কার্যালয় থেকেও এই মোটেল বুকিং দেওয়া যায়। ফোন- ৯৮৯৯২৮৮-৯১।

দিনাজপুরের পর্যটন মোটেলে এসি টুইনবেড ১ হাজার ৯শ’ টাকা এবং এসি ডিলাক্স টুইনবেড ২ হাজার ৩শ’ টাকা। ইকনোমি বেড ৪শ’ টাকা, ইকনোমি কাপল বেড ৭শ’ টাকা।

এছাড়া দিনাজপুরের অন্যান্য সাধারণ মানের  হোটেলে ১শ’ থেকে ১ হাজার ২শ’ টাকায় রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা আছে। কয়েকটি সাধারণ মানের হোটেল হল- মালদহ পট্টিতে হোটেল ডায়মন্ড,  নিমতলায় হোটেল আল রশিদ, হোটেল নবীন, হোটেল রেহানা, নিউ হোটেল।

প্রয়োজনীয় তথ্য

নবাবগঞ্জ জাতীয় উদ্যান বেশ নির্জন। পর্যটন সুবিধা এই বনে নেই বললেই চলে। ভ্রমণে গেলে দলবলে যাওয়া উচিৎ।

ছবি: তানভীর আহমেদ।