বর্ষফল: কেমন যাবে ২০১৫

বছরের বিভিন্ন সময়ের গ্রহাবস্থান থেকে জেনে নেওয়া যাক ২০১৫ সালে বাংলাদেশের জন্য শুভাশুভ পূর্বাভাস।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Jan 2015, 03:52 AM
Updated : 2 Jan 2015, 11:08 AM

বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোলজারর্স সোসাইটি(বিএএস)’র সহায়তায় বছরের বিভিন্ন সময়ের গ্রহাবস্থান থেকে ২০১৫ সালে বাংলাদেশের জন্য শুভাশুভ পূর্বাভাষ জানাচ্ছেন অ্যাস্ট্রোলজার অ্যান্ড সাইকিক কনসালটেন্ট ফজলে আজিম।

বাংলাদেশের জন্মের সময়ে মিথুন লগ্ন ছিল। মিথুন রাশি হচ্ছে বায়ূ রাশি। বায়ূ রাশিতে শনি বক্রী অবস্থায় থাকায় এদেশে বায়ূবাহিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। বক্রস্থ শনির প্রভাবে ধীর গতিতে দেশ সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে। উক্ত সময়ের গ্রহ-নক্ষত্র অবস্থান থেকে বোঝা যায় দেশ একসময় তথ্যপ্রযুক্তিতে বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবে।

পঞ্চমপতি শুক্রের পঞ্চম থেকে চতুর্থে মকরে অবস্থান নির্দেশ করে প্রযুক্তির অপব্যবহারে গৃহশান্তির অভাব দেখা যাবে। নারীঘটিত বহু সংখ্যক কেলেঙ্কারির সূত্রপাত হবে প্রযুক্তিকে ঘিরে। পরকীয়া, সংসারে ভাঙন, পারষ্পরিক ভুল বোঝাবুঝি ব্যাপকভাবে দেখা যাবে। প্রযুক্তির অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি হয়ে পড়বে।

২২ ডিসেম্বর ২০১৪ ভোর ৫টা ০৪ মিনিটে রবি রাশিচক্রের দশমঘর মকরে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী তখন ধনু লগ্ন এবং লগ্নে চন্দ্রের অবস্থান রয়েছে। ২১ মার্চ ২০১৫ সকাল ৪টা ৪৬ মিনিটে রবি মেষ রাশিতে প্রবেশ করবে। ২১ জুন ২০১৫ রাত ১০টা ৩৯ মিনিটে রবি কর্কটে প্রবেশ করবে। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ দুপুর ২টা ২১ মিনিটে রবি তুলা রশিতে প্রবেশ করবে।

এ বছর কেন্দ্রস্থ মকরে রবির প্রবেশকালীন সময়ধনু লগ্নে লগ্নপতির দৃষ্টি রয়েছে। এছাড়া বছরের বিভিন্ন সময়ে গ্রহাবস্থান ও গ্রহণগুলো থেকে আশা করা যায় চলতি বছর সামগ্রিকভাবে দেশের জন্য শুভফল বয়ে আনবে।

অগ্নি রাশিতে চন্দ্রের অবস্থান, দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতিতে শুভাশুভ মিশ্রফল প্রদান করবে বলে আশা করা যায়। তবে মন্দের চেয়ে ভালো ফলই বেশি দেখা যাবে।

বিদেশে বন্ধ থাকা শ্রমবাজার খুলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিভিন্ন দেশে জনশক্তি রপ্তানির দ্বার খুলে যাবে। রেমিটেন্স আদায়ও বাড়বে। বছরের প্রথমার্ধের চেয়ে দ্বিতীয়ার্ধে সরকারের রাজস্ব আদায় বাড়বে।

বিদেশী বন্ধুদের সহযোগিতায় দেশ উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় শীর্ষের দিকে এগিয়ে যাবে। বৈদেশিক বাণিজ্যের বাজার সম্প্রসারিত হওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা থাকলেও এক শ্রেণির অসাধু কালোবাজারীদের কর্মকাণ্ডে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে।

সৃজনশীলতারকারক চন্দ্র অগ্নিরাশি ধনুতে থাকায় লেখক, কবি, নাট্যকার, শিল্পী, সাহিত্যিক ও সাংবাদিকদের জন্য বছরটি হবে স্মরণীয়। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় প্রশাসনের অনেক গোপন রহস্য বেরিয়ে পড়বে।

দেশের রাজনৈতিক আন্দোলন প্রক্রিয়া জনমনে আতংক সৃষ্টি করতে পারে। মাঠ গরম করার আগেই মাঠে থাকা অনেক রাজনৈতিককে কারাগারে যেতে হতে পারে। সরকার পতনের আন্দোলন জোরদার করার চেষ্টা খুব বেশি সফল হবে বলে মনে হয় না।

তবে আন্দোলনে অপ্রত্যাশিত কোন ঘটনার জন্ম দিতে পারে। রহস্যজনক কোন কারণে আন্দোলনের গতিপথ বদলে যেতে পারে।

বর্তমান সরকারের সঙ্গে সংসদীয় প্রধান বিরোধীদলের সঙ্গে সম্পর্ক খুব ভালো যাবে বলে মনে হয় না। উভয়ের মধ্যে ভুলবোঝাবুঝির ফলে দূরত্ব বাড়তে থাকবে। সরকার বিরোধী আন্দোলনে বর্তমান সংসদের প্রধান বিরোধী দলের অবস্থান জনমনে তেমন সাড়া জাগাবে বলে মনে হয় না।

অবকাঠামোগত উন্নয়নে সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে কোন্দলে সরকার বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে পারে।

প্রযুক্তিগত বিষয়ে অগ্রগতি বাংলাদেশকে অনন্য সম্মানে ভূষিত করতে পারে। বছরের শুরু থেকেই পত্রিকা, ফেইসবুক ও ইউটিউবে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবক্ষয়ের মাত্রা অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে।

এ বছর ক্যান্সার, টিউমার, গ্যাস্ট্রিক, এসিডিটি, দন্তরোগ, প্যারালাইসিসে সাধারণ মানুষের চিকিৎসা ব্যয় ও ভোগান্তি বাড়তে পারে। পরিবার ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে স্বার্থ সম্পর্কিত বিরোধিতার জের ধরে গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে যেতে পারে। মীনে নেপচুন ও কেতুর অবস্থান ও রাহুর দৃষ্টি প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে দালালদের তৎপরতা বাড়িয়ে দিতে পারে।

শিক্ষাক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। এ বিষয়ক নতুন কোন নীতিমালা চুড়ান্ত হবে বলে আশা করা যায়। বিদেশে উচ্চশিক্ষায় বাঙালি শিক্ষার্থীদের ব্যাপক সাফল্যের সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে প্রযুক্তিক্ষেত্রে বাঙালি শিক্ষার্থীদের অবদানের খবর বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়তে পারে।

বছরের দ্বিতীয়ার্ধে ক্রীড়া নৈপুণ্যে দেশের সাফল্য বাড়বে। অধিকাংশ সফরেই সাফল্যের দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সার্কভুক্ত দেশের সঙ্গে সম্পর্কে উন্নতি ও বাণিজ্য সম্পর্ক আরও মজবুত হবে বলে আশা করা যায়। নতুন কোনও চুক্তির মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে দীর্ঘদিনের ঝুলে থাকা কিছু বিষয় নিষ্পত্তির সম্ভাবনা রয়েছে।

২০১৫ সালে জলপথে অপরাধ আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে পারে। এ বিষয়ে প্রশাসনিক শৃংখলার অভাব সমালোচনার কারণ হবে। ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, জলোচ্ছাস ও তীব্র শৈত্য প্রবাহে জনজীবন কিছুটা বিপর্যস্ত হয়ে পড়তে পারে।

তুচ্ছ ঘটনা কেন্দ্র করে বছরের দ্বিতীয়ার্ধে দেশের চলমান রাজনীতিতে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে। অসংলগ্ন কথাবার্তা থেকে দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হতে পারে। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারষ্পরিক শ্রদ্ধাবোধ রেখে এগিয়ে গেলে অনেক জটিল সমস্যার অবসান হবে।