চুল পড়ার কারণগুলো

চুল পড়ার সমস্যা নিয়ে চিন্তিত নন এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। নারী এবং পুরুষ উভয়েরই একইভাবে চুল পড়ার সমস্যা হতে পারে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Dec 2014, 12:29 PM
Updated : 21 Jan 2015, 03:21 PM

তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে চুল পড়ার পরিমাণও বৃদ্ধি পেতে পারে। অনেকের ধারণা চুল পড়ে মাথার উপরে ফাঁকা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা শুধু পুরুষদের ক্ষেত্রেই রয়েছে, এটি পুরোপুরি ভিত্তিহীন একটি ধারণা। নারীদের ক্ষেত্রেও এটি সত্যি হতে পারে।

রূপচর্চাবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে চুল পড়ার কিছু সাধারণ কারণ উল্লেখ করা হয় যেগুলো বেশিরভাগ মানুষেরই অজানা। সেই কারণগুলোই এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হলো।

জন্ম বিরতিকরণ পিল

চুল পড়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক চর্মবিশেষজ্ঞ ড. পিলিয়াং বলেন, “পুরুষদের শরীরে কিছু পুরুষালী হরমোন রয়েছে যা চুল পড়ার পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে। অন্য দিকে মেয়েদের মধ্যে যারা জন্ম বিরতিকরণ পিল সেবন করেন তাদের চুল পড়ার পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। কারণ পিলে প্রজেস্টেরন-জাতীয় হরমন থাকে যার প্রভাবে চুল পড়ার পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে।”

তাই এ ধরনের সমস্যায় চুল পড়া বন্ধ করতে চাইলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। তাছাড়া চুল পড়ার সমস্যা বংশগতও হতে পারে।

চুল পড়া স্খায়ী কোন সমস্যা নয়

অনেকেই মনে করেন চুল একবার পড়ে গেলে সেখানে আর চুল গজানোর কোনো সম্ভাবনাই নেই। তবে এটি পুরোপুরি সত্যি নয়। সন্তান জন্ম দেওয়ার পর বেশিরভাগ মেয়েরই চুল পড়ার পরিমাণ বেড়ে যায়। কারণ ওই সময় শরীরে হরমোনের ভারসাম্যে পরিবর্তন আসে। তবে একটা সময় পর ওই সমস্যা কমে আসে এবং নতুন চুল গজাতে শুরু করে।

তাছাড়া শরীরে আয়রন ও জিঙ্কের ঘাটতি হলেও চুল পড়া বেড়ে যেতে পারে। আর মেয়েদের শরীরে পুষ্টির অভাব হওয়ার সম্ভাবনা পুরুষদের চাইতে বেশি। আর এই দুটি উপাদানই সুস্থ ও সুন্দর চুলের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান। তাই এক্ষেত্রে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।

দুশ্চিন্তার কারণে বাড়তে পারে চুল পড়া

অফিসে কাজের বাড়তি চাপ বা পারিবারিক দ্বন্দ্ব মানসিক চাপের অন্যতম কারণ। আর অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তার কারণে চুল পড়ার পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। তাছাড়া শরীরে অন্য কোন ধরনের অস্ত্রোপচার বা বড় ধরনের অসুখ হলেও শরীরের হরমোনের ভারসাম্যে পরিবর্তন আসে আর সে কারণেও চুল পড়ার পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে।

বয়সই চুল পড়ার মূল কারণ নয়

বংশগত কারণেও চুল পড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। যাদের ক্ষেত্রে চুল পড়ার বংশগত সমস্যা রয়েছে বিশ বছর বয়সের পর তাদের চুল পড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে এটি আরও আগেও হতে পারে। তাই বয়স বাড়লেই একমাত্র চুল বেশি পড়বে এটি ভেবে নেওয়া উচিত নয়।

তাছাড়া যে মেয়েদের মাসিক নিয়মিত নয় তাদের ক্ষেত্রেও চুল পড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেক অল্প বয়সেই কোন মেয়ের শরীরে হরমোন পরিবর্তন হলেও চুল পড়ার সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।

চুলের জন্য বায়োটিন

চুল পড়া রোধ করতে অনেকে বিভিন্ন ধরনের সাপ্লিমেন্টজাতীয় ওষুধ সেবন করে থাকেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল বায়োটিন। এটা হল বি কমপ্লেক্স ভিটামিনের সমন্বয়ে তৈরি একটি ভিটামিন। এই উপাদান খাবারকে হজমে সাহায্য করে শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে যা চুল মজবুত করে। তবে ডাক্তারদের মতে চুল পড়ার থেকে চুল ভেঙে যাওয়া ঠেকাতে বায়োটিন বেশি কর্যকর।

প্রতিদিন শ্যাম্পু করা চুলের জন্য ক্ষতিকর

চুল পরিষ্কার করতে চুলে শ্যাম্পু করা খুবই জরুরি। তবে শ্যাম্পু করার জন্য চুল বেশি ঘষলে বা প্রতিদিন শ্যাম্পু করলে চুলের গোড়া দুর্বল হয়ে যেতে পারে, এমনটা মনে করেন অনেকেই। তবে শ্যাম্পু যদি নিয়মিত না করা হয় তাহলেও চুলের ক্ষতি হতে পারে এবং মাথায় খুশকিও হতে পারে। তাছাড়া শ্যাম্পু চুলের গোড়ায় জমে থাকা তেল পরিষ্কার করে চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত শ্যাম্পু করা উচিত।

অতিরিক্ত সূর্য তাপ

ত্বকে সানস্ক্রিন লাগিয়ে ঘর থেকে বেরোলে রোদের তাপে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে, এটি অজানা নয়। অতিরিক্ত তাপে চুল ঝলসে যেতে পারে এবং নষ্ট হয়ে যেতে পারে তবে সূর্যতাপের কারণে চুল পড়া বৃদ্ধি পায় না কখনও। উল্টা সূর্যের ভিটামিন ডি চুলের জন্য উপকারী। চুল বড় হতে ভিটামিন ডি প্রয়োজন।

চুলে রং করা ও স্ট্রেইট করা

যে কোন ধরনের কেমিকলের ব্যবহার চুলের জন্য ক্ষতিকর। আকর্ষণীয় করে তুলতে চুলে রং করা. চুল সোজা করতে আয়রনের ব্যবহার ব্লিচ করা ইত্যাদি চুলের জন্য ক্ষতিকর। চুলে বাড়তি কোন চাপ প্রয়োগ করা হলেই তা চুলের ক্ষতি করবে।

প্রতীকী ছবির মডেল: চৈতি। ছবি: ই স্টুডিও।