অথচ এই রাস্তার এ মাথা থেকে ও মাথা চলে যেতে সর্বোচ্চ ১৫ মিনিট লাগবে কিনা তাও সন্দেহ আছে।
এখানকার রেস্তোরাঁর কয়েকজন কর্ণধার জানালেন গত দুই বছরেই নাকি খুলেছে বেশিরভাগ খাওয়ার দোকান। এই এলাকার কয়েকটি রেস্তোরাঁ নিয়ে এই বিশেষ প্রতিবেদন।
কানে কানে কথা বলা থেকে নামকরণ করা হয়নি এর। মাছ অর্থে ফিশের ব্যবহার।
মাছে ভাতের বাঙালিকে শুধুমাত্র মাছ খাওয়ানোর ব্রত করেছেন এরা। মালিবাগ রেইল গেইট থেকে খিলগাঁও ফ্লাইওভারে দিকে যেতে বামদিকে দ্বিতীয় গলিতে ঢুকলে প্রথম রেস্তারাঁ এটি।
আপাতত নিচ তলায় ২২ জনের বসার মতো ব্যবস্থা আছে। তবে দোতালায় আরও প্রায় ৫০ জনের সংকুলান করার কাজ চলছে পুরোদমে। জানুয়ারিতে খুলে দেওয়ার চিন্তা করছেন কর্তৃপক্ষ। এখানেই শেষ নয়। সাত তলার ছাদের অংশে তৈরি করা হচ্ছে ৩২ জনের বসার ব্যবস্থা।
মাস দুই আগে যাত্রা শুরু ফিশ ফিশের। ফিশ অ্যান্ড চিপচ থেকে শুরু করে থাই ঘরানার ফিশ কেইক মিলছে। কয়েক পদের খাবারে মাছের সঙ্গে মিলবে রাইস।
ড্রিংকস মেনুতে ভালো দিক হল এর মূল্যতালিকা। ১৫, ৫০, ৮০, ১২০ ও ২০০ টাকার পানীয় পাওয়া যাবে এখানে।
এখনও ওয়াইফাই চালু হয়নি।
লইট্টা ফ্রাই, ফিশ বার্গার ও ফিশ স্যান্ডউইচ পাওয়া যাবে।
এই রাস্তার রেস্তোরাঁগুলোর মধ্যে অন্দরসজ্জার দিকে বিশেষ নজর দিয়ে শুরু হওয়া প্রথম স্থান হলে এই চেরি ড্রপস।
৭৫ জন বসতে পারবেন এখানে। বাইরে থেকেই কাচের ভেতর দিয়ে দেয়ালে সাঁটানো বোতলগুলো নজরে পড়বে। ভেতরেও বসার চেয়ার, দেয়ালের রং, সিলিং সব মিলিয়ে বেশ আলাদা একটি পরিবেশ পাওয়া যাবে।
২০১৩ সালের নভেম্বরে শুরু হয় এর যাত্রা। দুপুরে তরুণরা বেশি আসলেও রাতে পরিবার নিয়েই আসেন বেশিরভাগ ক্রেতা এমনটাই জানালেন অন্যতম কর্ণধার সাব্বিব আহমেদ খান। কথার ফাঁকে জানা গেল, তারই এক ভাই করে দিয়েছেন অন্দরসজ্জার নকশা।
এখানকার সবচাইতে জনপ্রিয় খাবার রেগুলার প্ল্যাটার, দাম ২৫৫ টাকা, জানান খান। এতে খাকছে রাইস, চিকেন বা বিফ আর পানীয়।
ওয়াইফাই আছে।
প্রধানত চীনা খাবার মিলছে এখানে। দুটি ফ্লোর জুড়ে এই ভোজনালয়। ২৫০ জনের সংকুলান হবে এখানে। ওয়াইফাই আছে। ২০১১ সালে যাত্রা শুরু।
পরিবার নিয়ে এসে খেতে চাইলে এটি অন্যতম সেরা রেস্তোরাঁ বলে দাবি করেন এই রেস্তোরাঁর নজরুল ইসলাম। এখানে সেট মেনু আছে কয়েকটি, শুরু ১৮০ টাকা থেকে, আর শেষ ৩৯৫ টাকায়।
চার জনের জন্য পাঁচ পদের খাবার খেলে জনপ্রতি ন্যূনতম ৩৫০ টাকা করে পড়বে। বাচ্চাদের জন্য ছোট একটি কিডজ কর্নার রয়েছে।
তরুণ আর কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের কাছে খুবই জনপ্রিয় মনে হল এই রেস্তোরাঁ। দুপুর ২টার দিকে দেখা গেল একটি চেয়ারও ফাঁকা নেই।
তারুণ্যের উচ্ছাস আর আওয়াজে একবারে ডগমগ! পিৎজা, পাস্তা আর সরমা এখানে বেশি বিক্রি হয়, জানান চটপটে এক কর্মচারী। ভেতরে বসতে পারবেন ২৫ জনের মতো।
বার্গার ১২৫ থেকে ২২৫ টাকা আর সরমা ১১৫ থেকে ১২৫ টাকা। পিৎজা সাইজভেদে ২৬৫ থেকে ৬৮৫ টাকা।
নামে সরমা কিং হলেও এর পাশাপাশি পিৎজা ও পাস্তা পাওয়া যায়। অন্দরসজ্জাও বেশ আকর্ষণীয় বলা যায়। দোতলায় এর অবস্থান। কাচের পাশের অংশে একবারে সোফায় গা এলিয়ে দিয়ে বসে বাইরের দুনিয়া দেখা যাবে। এই অংশের রংয়ের ব্যবহার বেশ ভালো লাগবে। চেয়ার টেবিলেও সাধারণের থেকে বেশ বৈচিত্র্য চোখে পড়বে।
সাকুল্যে ৫৫ জন বসেতে পারবেন। অন্যতম কর্ণধার রায়হানুল আলম বড় হয়েছেন কাছের পাড়াতেই। মুভেনপিকের আইসক্রিমও আছে এখানে। সরমার জন্য দিতে হবে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা।
আলমের দাবি, খাবার এখানে সবসময় অর্ডার নেওয়ার পর তৈরি করা হয়। ফ্রেশ জুসের দাম ৮০ থেকে ১০০ টাকা।
এই এলাকায় অন্দরসজ্জায় বিশেষ নজর দেওয়া অন্যতম রেস্তোরাঁ এটি। নবীনতম বলা চলে, এখনও দশদিন বয়স হয়নি। এরা আবার মেনুতে স্টেক রেখেছেন।
শারফুদ্দিন মাহমুদ অন্যতম কর্ণধার জানান তারা একটু ভিন্ন মেনু এই অঞ্চলে চালু করার চেষ্টা করেছেন। মেক্সিকান খাবার ট্যাকোস ও নাচোজও মিলবে এখানে।
পিৎজা পাওয়া যাবে ৬ পদের। সাইজ ভেদে ২৫০ থেকে ৬৮০ টাকা গুনতে হবে। ৪ রকম পাস্তার জন্য পড়বে ২৪০ থেকে ২৯০ টাকা।
তিনতলার এই রেস্তোরাঁয় কাচের জানালা থেকে বাইরের রাস্তা পুরাটাই দেখা যায়। আর কাচের চারদিক ঘিরে সচ্ছ বোতলে সবুজ গাছের সমারোহ। টেবিলের উপরে সিলিং থেকে কাচের বোতলের ভেতরে বাতি। পাশের দেয়ালে কাজ অসম্পূর্ণতার ছোঁয়ায় হয়েছে ক্রিম রংয়ের। চেয়ার টেবিলগুলো বানানো হয়েছে রিসাইক্লেবল(পুনঃব্যবহারযোগ্য) কাঠ থেকে। কাচের পাশের দুইটি প্রমাণ সাইজের লাল ল্যাম্প শেইডটি রাতে বেশ ভিন্নমাত্রা যোগ করে।
চমৎকার রংয়ের কয়েকটি পানীয় মিলবে এখানে। লেমন মিন্ট, মোহিতো, ফ্রুটপাঞ্চ স্বাদের সঙ্গে চোখের থোরাকও জোগাবে।
এই পাড়ারই তরুণ চার বন্ধু মিলে দুই মাস আগে শুরু করেছেন এই রেস্তোরাঁ। এটি আবার তালতলার প্রথম রুফটপ রেস্তোরাঁ, জানালেন অন্যতম কর্ণধার কাজী মো. রুশদী। বাকি তিন কর্ণধারের সঙ্গে বন্ধুত্ব নাকি একেবারে স্কুল থেকেই, এটাও জানা গেল এক ফাঁকে।
রুশদী পরিষ্কারভাবে করে জানান, তারা চেয়েছেন একটি রেস্তোরাঁ করতে, যাতে পরিবার ও বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে অথবা অনেক বন্ধুরা মিলেমিশে খেতে পারেন। তাই যুগলদের জন্য বরাদ্দ দুই সিটের টেবিল নেই বললেই চলে।
থাই আর চীনা খাবারের প্রাধান্য এখানে। সেট মেন আছে ৪ রকমের, ২৮০ টাকা একজনের জন্য শুরু করে ১২৮০ টাকা পর্যন্ত যা খেতে পারবেন ৪ জন।
সর্বাধিক বিক্রিত পদ আমেরিকান চপসুয়ে যার দাম ২২০ টাকা। আর পানীয় ক্যারট মিল্ক, দাম ১০০ টাকা।
দোতলায় খোলা ছাদের উপর এর অবস্থান। জায়গা খুব বেশি বড় না হলেও বসতে পারবেন প্রায় ৭০ জন।
এখান থেকে পেট খালি রেখে যাবেন এমন মানুষ হয়ত বেশি পাওয়া যাবে না! কারণ? মেনুতে খাবারের মূল্য ১০ থেকে ৭০ টাকা! এই জামানায় একে দামি বলাটা বোধহয় কঠিন কাজ! আর তাই সন্ধ্যায় ক্রেতাদের ভিড় চোখে পড়ার মতো!
চাপ, কাবাব আর টিক্কাই বিক্রি হয় এখানে। বিকাল ৪টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
লাচ্ছি বানানো হয় পুরান ঢাকার ঘরানায়, ঘটির ভেতরে হাতে ঘুটনি চালিয়ে। নিম্বুপানি ২০ টাকা। লাচ্ছি ৫০ টাকা।
শাহরিয়ার মিলন, বয়সে তরুণ, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ করে অংশিদারে খুলেছেন এই রেস্তোরাঁ। খারাপ করেননি বোধ হয়, ১৭ জন কর্মচারীর কর্মসংস্থান করেছেন এই বয়সেই।
মিলন জানান, বছরখানেক আগে এই রেস্তোরাঁ খোলার পর তালতলা রোডে হয়েছে আরও ৫-৬ টি চাপ-কাবাবের দোকান।
এখানকার রেস্তোরাঁর প্রতিবেদন করার সময় অন্তত ৫ জন রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী অকপটে স্বীকার করেছেন আপন কফি হাউজের কারণেই নাকি প্রথম এই তালতলা রোডে এলাকার বাইরের লোকেরা খেতে আসতে শুরু করেন। পরে আস্তে আস্তে আরও রেস্তোরাঁ খোলার ফলে এই রাস্তাটি এখন খাবার পাড়া বলে দাবি করতেই পারে।
মোহাম্মদ জিয়া এখানে এই দোকান থেকে মূলত কোল্ড কফি পরিবেশন করেই ভোজনরসিকদের মাঝে জনপ্রিয়তা পান। বসার ব্যবস্থা আছে ১৫-২০ জনের। আর মাঝেমধ্যে নাকি রীতিমতো লাইন পড়ে যায় এই দোকানের বাইরে, এমনটা জানা গেল কয়েকজন পথচারির কাছ থেকে যারা এই এলাকার বাসিন্দা বলেই দাবি করেন।
কোল্ড কফি ৪০ টাকা, চকলেট ফ্লেইবার ৪৫ টাকা। সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় চকলেট কফিই জানান জিয়া।
চার বছর আগে তিনি শুরু করেছিলেন এই খাবার দোকান।
ছবি : মামুনুর রশীদ শিশির