আরও একটি হিমালয় অভিযাত্রা শেষে দেশে ফিরেছেন ছয় বাংলাদেশি পর্বতারোহী।
আগে থেকেই জানা ছিল এবারের অভিযান অন্য সববারের থেকে একটু ভিন্ন হবে। কারণ লক্ষ্য ছিল, মায়াবী হিমালয়ের বুকে বিদেহী সজল খালেদের স্মৃতিস্মারক স্থাপন করে তবেই দেশে ফেরা হবে।
হয়েছেও তাই। পর্বতারোহনের যে লক্ষমাত্রা ঠিক করে গিয়েছিলেন, তা হয়তো পুরণ হয়নি, তারপরও সন্তুষ্টি নিয়েই দেশে ফিরেছেন দলনেতা এমএ মুহিত ও দলের অন্যান্য সদস্যরা।
এবারের সফরের লক্ষ্য ছিল ‘কেয়াজো-রি শিখর অভিযান’ ও দুগলা গিরিপথে ‘সজল খালেদ স্মৃতিফলক’ স্থাপন। শেষ পর্যন্ত বৈরি আবহাওয়ার কারণে কেয়াজো-রি শিখরে আরোহণ করতে পারেনি এমএ মুহিতের দল।
এভারেস্টের দক্ষিণ-পশ্চিমে সলু-খুম্বু অঞ্চলে, ২০ হাজার ২৯৫ ফুট উঁচু কেয়াজো-রি এমনিতেই ওই এলাকার অন্যতম দুর্গম পর্বত। এছাড়া ১৯ অক্টোবর যখন হাই ক্যাম্প থেকে চূড়ান্ত অভিযান শুরু করে ২০ হাজার ফুট উচ্চতায় পৌঁছায় বিএমটিসি’র পর্বতারোহী দলটি, তখনি বাঁধ সাধে আবহাওয়া।
এই বিরুপ আবহাওয়াতে প্রতি বছরই হিমালয়ে প্রাণ হারান পর্বাতোরোহীরা।
২০১৩ সালের ২০ মে এভারেস্ট জয় শেষে ফিরতি পথে, অসীম শূন্যে পাড়ি জমিয়েছিলেন তরুণ পর্বতারোহী ও চলচিত্র নির্মাতা সজল খালেদ। শেষ পর্যন্ত অভিযানে গিয়েও ফিরিয়ে আনা যায়নি তার মৃতদেহ।
তাই এবার বিএমটিসি ক্লাবের এই অভিযানের অন্যতম এক লক্ষ্য ছিল সজলের প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন স্বরূপ স্মৃতিফলক স্থাপন করে আসা।
১১ অক্টোবর ঢাকা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযান শুরু করে কাজি বাহলুল মজনু, নিশাত মজুমদার, মো. মহিউদ্দিন, এমএ মুহিত, শামীম তালুকদার ও সাদিয়া সুলতানার দল। শেষ পর্যন্ত কেয়াজো-রি শিখরে আরোহন করতে না পারলেও ২৪ অক্টোবর ফিরতি পথে ১৫ হাজর ৭০০ ফুট উঁচু দুগলা গিরিপথে সজল খালেদ স্মৃতিফলক স্থাপন করেন তারা।
সেখানে বাবু চিরি শেরপা, পাসাং লামু শেরপা, স্কট ফিশার ও অন্যান্য প্রখ্যাত পর্বতারোহীর স্মৃতিফলকের পাশে সজল খালেদ ফলক স্থাপন করা হয়েছে।
১৪ নভেম্বর শুক্রবার, ঢাকার প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে পুরো সফর সম্পর্কে জানাতে এক স্লাইড শো প্রদর্শনী ও সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে দলনেতা এমএ মুহিত অভিযানের অলোকচিত্র নিয়ে তৈরি করা স্লাইড শো দেখান আর অভিযানের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন নিশাত মজুমদার ও মো. মহিউদ্দিন।
এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অভিযাত্রিক দলের বাকি তিন সদস্য সাদিয়া সুলতানা, কাজী বাহালুল মজনু ও শামীম তালুকদার।
ছবি: এমএ মুহিতের সৌজন্যে।