‘না’

‘না’- আলোকচিত্রী কাকলী প্রধানের আলোকচিত্র প্রদর্শনী।

আজিজি ফাওমি খানবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Nov 2014, 03:09 PM
Updated : 13 Nov 2014, 03:09 PM

জমি নিয়ে বিরোধ, লোভী ক্ষমতাশালীদের জমি দখল করে নেওয়া- চিরায়ত সমস্যা বাঙালিদের জীবনে। তবে সেই সংকটগুলো আরও ভয়ংকর আকার ধারণ করে, যখন সেই আগ্রাসনের শিকার হয় কোনো নারী।

কখনও তাদের সম্ভ্রম বিসর্জন দিতে হয়, কখনও নিজের জীবন। অধিকারবঞ্চিত ভূমিহীন এই নারীদের অহরহ ‘না’-এর সম্মুখীন হওয়ার গল্পগুলো উঠে এসেছে কাকলী প্রধানের ক্যামেরায়।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতাবিষয়ক পত্রিকা ’মাধ্যম’ এবং ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’-এর (এএলআরডি) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘না’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

এএলআরডির চেয়ারপারসন খুশী কবির ছিলেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতি। প্রধান অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আআমস আরেফিন সিদ্দিক। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আখতারুজ্জামান, ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা ও সাংবাদিক দিল মনোয়ারা।

বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে যে গুটিকতক মহিলা আলোকচিত্রী আছেন তাদের মধ্যে অন্যতম কাকলী প্রধান। তার কাছ থেকেই জানা যায় এমন একটি প্রদর্শনী আয়োজনের পেছনের গল্পগুলো।

কাকলী বলেন, “বাংলাদেশে নির্যাতিত নারীদের নিয়ে কাজ করতে চাইলে পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। সবাই নান্দনিক ছবি দেখতে চায়, কঠিন বাস্তবতার দেখতে চায় না। তখনই সহযোগিতার হাত বাড়ায় এএলআরডি।”

উন্মুক্ত প্রদর্শনীর আয়োজন করার ক্ষেত্রে তিনি বলেন, “যাকে বলতে চাই সে শুনবে না, যাকে দেখাতে চাই সে দেখবে না; আমি তা চাই না। আমি চাই রিকশাওয়ালা ভাইয়েরাও দেখুক।” 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “যদিও ঢাবি মুক্তচিন্তার জায়গা। তবে আজকাল শুধু ঢাবিই নয়, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উচ্চতর শিক্ষায় অধ্যয়নরত ছাত্রদের মধ্যেও ততটা মূল্যবোধের বিকাশ দেখা যায় না। তাই ঢাবিতে এ আয়োজন। যাতে এই ছাত্রগুলোই নিজের পরিবারের দিকে তাকায়, সমাজের দিকে তাকায়।”

এখনই সবকিছু বদলে যাবে তা তিনি মনে করেন না, তবে আশাবাদী পরবর্তী কালে এই চেতনাটুকুই হয়ত সমাজে পরিবর্তন নিয়ে আসবে।

নতুন প্রজন্মের প্রতি তার আহ্বান, “আমরা যেন মানুষের অধিকারের প্রতি মর্যাদাবান হই। অন্যকারও অধিকার নষ্ট না করি।”

নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে কাকলী প্রধান জানান, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রভৃতি জেলা থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে এসব ছবি তুলতে গিয়ে নারী সাংবাদিক হিসেবে নানান প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়েছেন। তখন এই নির্যাতিত পরিবারগুলো তাকে সহযোগিতা করে, আশ্রয় দেয়।

কাকলী প্রধান এই ছবিগুলো নিয়ে আরও প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেতে চান। সেসব লোভী ক্ষমতাশালী চেয়ারম্যান, ভূমিবিষয়ক কর্মকর্তাদের সামনে গিয়ে দাঁড়াতে চান তার ছবিগুলো নিয়ে।

১৪ নভেম্বর পর্যন্ত এই প্রদর্শনী চলবে। স্থান- অপরাজেয় বাংলা, মধুর ক্যান্টিন, ডাকসু ভবন, রাজু ভাস্কর্য, টিএসসি।