সম্প্রতি ‘স্পিরিট অব অন্নপূর্ণা’ শিরোনামের চিত্র প্রদর্শনীর পর্দা উঠেছে। আর একে ঘিরেই বেশ একটা ভালো আড্ডাও জমে উঠেছে নানান বয়সী শিল্পীদের। এর মাঝ থেকেই দু’দণ্ড কথা হল, শিল্পী মনিরুল ইসলামের সঙ্গে। ফুরফুরে মেজাজেই ছিলেন তিনি। জানালেন প্রদর্শনীর কাজগুলোতে, ঝকঝকে রং দেখে তার ইউরোপিয়ান শিল্পীদের সেই কথাই মনে পড়ে গেছে।
শনিবার মহাখালীর গ্যালারি কসমস-২’তে শুরু হয়েছে ১৫ দিনব্যাপী এক দলীয় চিত্র প্রদর্শনী। যেখানে অংশ নিচ্ছেন শিল্পী গাজী মোসাদ্দেকুর রহমান, সোহানা শাহরীন, রেজাউন নবী, মাকসুদা ইকবাল নীপা, নাজিয়া আন্দালিব প্রিমা, গোলাম ফারুক সবপন, ফাহমিদা খাতুন, আফরোজা জামিল কঙ্কা, বিপাশা হায়াত ও মাহবুবুল আলম বাবু।
মুলত এক ধরনের অংশিদারীত্বের ভিত্তিতে হয়েছিল নেপালের সেই আর্ট ক্যাম্প; যেখানে আয়োজক ‘সিরজানা কলেজ অব ফাইন আর্ট’কে সহায়তা দিয়েছিলো বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান বিভব ও হলবেইন। এবার দেশের ভিতরে এই আয়োজনেও এগিয়ে এসেছে শিল্পীদের নিয়ে গড়ে ওঠা এক নতুন উদ্যোগ ‘বিভব’।
“নেপাল সফরের পাশাপাশি এবারের প্রদর্শনীতেও সহায়তা করেছে বিভব। একবারেই নতুন উদ্যোগ হলেও এরই মাঝে এ বছর আমরা তরুণ শিল্পীদের জন্য তিনটি কর্মশালা আয়োজন করেছি। আগামী বছর একটি আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে মিশরেও যাওয়ার কথা রয়েছে। তবে আমরা তরুণদেরকে প্রাধান্য দেওয়ার চেষ্ঠা করছি। শিল্পকলা নিয়ে কাজ করবার মতো খুব বেশি প্রতিষ্ঠান তো নেই এদেশে, তাই আমরা নিজেরাই চেষ্ঠা করে যাচ্ছি।”
শিল্পীদের পৃষ্ঠপোষকতার এই সমস্যা যেমন বাংলাদেশে নতুন কিছু নয়, ঠিক তেমনি নিজেদের প্রয়োজনে শিল্পীদের এমন উদ্যোগের বেশ উদাহরণও আছে। তবে প্রদর্শনী ঘুরে একথা মানতেই হবে। আমলে না নেওয়ার মতো কাজ নিয়ে আসেনি বিভব।
প্রাকতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত নেপাল ঘুরতে, এমনিতেই সারা বিশ্ব থেকে মানুষ এসে জড়ো হয়। এবার নেপাল সফরে গিয়ে অবশ্য নিজেরাও সেরকমই ঘুরে বেড়িয়েছেন শিল্পীরা। তবে সবার কথাতেই জানা গেলো হিমালয়ের পাদদেশের ছোট্ট এই দেশটি রীতিমতো মুগ্ধ করেছে তাদের। যে কারণে ছবি আঁকতে গিয়ে, রংয়ের ছটা একটু বেশিই পড়েছে ক্যানভাসে।
যেমন শিল্পী বিপাশা হায়াতের কথায় জানা গেলো, ভোরের আলোয় অন্নপুর্না দেখতে সারা রাত জেগে থাকলেও, আবহাওয়া বাঁধ সেধেছিলো। তারপরও নেপালের সঙ্গীত, মানুষ, ধর্মচর্চা, প্রকৃতি সবই মুগ্ধ করেছে তাকে। আর সেই মুগ্ধতাই তুলে ধরবার চেষ্ঠা করেছেন তিনি নিজের ক্যানভাসে।
যে কারণে কোনো সামষ্ঠিক বক্তব্য হয়ত খুঁজে পাওয়া যাবে না এই প্রদর্শনীতে, তারপরও শিল্পমান বিচারে নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় এই উদ্যোগ।
শিল্পী কালিদাস কর্মকার যেমনটি বললেন, “বাংলাদেশের সমকালীন শিল্প আন্দোলনে এই ধরনের উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম।”
৮ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই প্রদর্শনী চলবে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত। আর আগ্রহীদের জন্য প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত খোলা থাকবে গ্যালারি কসমস ২ এর আয়োজন।
ঠিকানা: বাসা ১১৫, লেন ৬, নিউ ডিওএইচএস, মহাখালী, ঢাকা ১২১২।
ছবিঃ ফায়হাম ইবনে শরীফ।