দার্জিলিং গাইড

প্রতিবেশী দেশের কোনো জায়গায় ঘুরতে গেলে যে কয়টা নাম মনে আসে তার মধ্যে দার্জিলিং অন্যতম।

মামুনুর রশীদ শিশিরবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Oct 2014, 11:32 AM
Updated : 11 Nov 2014, 08:54 AM

সম্প্রতি ভ্রমণপ্রেমী ব্যবসায়ী তাহিদুল ইসলাম দার্জিলিং ঘুরে এসেছেন। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে তিনি জানালেন দার্জিলিং ঘোরার খুটিনাটি।

যাতায়াত

দুইপথে যেতে পারেন দার্জিলিং। আকাশপথ কিংবা সড়কপথ।

উড়ে যেতে চাইলে প্রথমে ঢাকা থেকে যেতে হবে কলকাতায়। জেট এয়ার, এয়ার ইন্ডিয়া, বাংলাদেশ বিমান ও রিজেন্ট এয়ারওয়েজ এই সেবা দিয়ে থাকে, এই সময়ে খরচ পড়বে ১১ হাজার টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকা। কলকাতা থেকে আবার বাস, ট্রেন বা বিমানে যেতে হবে শিলিগুড়ি। সেখান থেকে জিপে যেতে হবে দার্জিলিং। সময় লাগবে প্রায় আড়াই ঘন্টা।

ভাড়া পড়বে ১৪০ রুপি বা ১৬০ টাকা।

তবে সড়কপথে একটু সময় বেশি লাগলেও ধকলটা পুষিয়ে যাবে খরচের দিক দিয়ে। ঢাকা থেকে কলকাতা ও ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যান্য জেলায় যাওয়ার সেবা দেয় কয়েকটি পরিবহন প্রতিষ্ঠান। তবে সরাসরি শিলিগুড়ি পর্যন্ত যাওয়ার সেবা দেয় শুধু শ্যামলী পরিবহন।

বাসগুলো যাত্রা শুরু করে ঢাকার কল্যানপুর ও কলাবাগান থেকে। ঢাকা থেকে শিলিগুড়ির টিকিটের দাম ১ হাজার ৬শ' টাকা। বর্ডার পার হওয়ার সময় ভ্রমণকর হিসেবে দিতে হবে অতিরিক্ত ৩শ' টাকা। এছাড়া চাকুরিজীবীদের বর্ডার পার হতে দেখাতে হবে বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত ‘নো অবলিগেশন সার্টিফিকেট’।

থাকা

যেহেতু পর্যটন এলাকা হিসেবে খ্যাত, তাই দার্জিলিংয়ে থাকার জায়গার কমতি নেই। এর মধ্যে বেলভিউ, সাগরিকা, সোনার বাংলা, মহাকাল হোটেলগুলোই ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে বেশি জনপ্রিয়।

মাঝারি মানের হোটেলগুলোয় প্রতিটি সিঙ্গেল রুমের এক দিনের ভাড়া পড়বে প্রায় ১ হাজার রুপি। ডাবল রুম হলে আসবে ১ হাজার ২শ' রুপি। তিন বেডের রুমও আছে, ভাড়া দিন প্রতি ১ হাজার ৫শ' রুপি। তবে আরও ভালোমানের হোটেল চাইলে রুমভেদে গুনতে হবে ১ হাজার ৮শ' থেকে ২ হাজার ৫শ' রুপি পর্যন্ত। এক রুমে কতজন থাকবেন তা নিয়ে কোনো সীমাবদ্ধতা নেই হোটেলগুলোতে।

খাওয়া দাওয়া

ভোজনরসিকদের জন্য বেশ উপযোগী ও সাশ্রয়ী স্থান দার্জিলিং। ভারতীয় খাবারের সবকিছুই পাবেন এখানে। রেস্তোরাঁয় বসে খেলে খরচটা বেশি। তবে 'স্ট্রিট ফুড'ও খারাপ নয়। অসংখ্য খাবারের মধ্যে চিকেন মোমো, পানি ফুচকা, হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানি, চিকেন ও মাটন নুডুলস ইত্যাদি সবচাইতে বেশি জনপ্রিয়। চিকেন মম খেতে লাগবে ৩০ রুপি। পানি ফুচকা ১০ রুপি থেকে ২০ রুপি। আর হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানি ৮০ থেকে ১২০ রুপি।

সব রেস্তোরাঁতেই নুডুলস পাওয়া গেলেও, পেট পুরে খেতে চাইলে যেতে হবে ম্যাল'য়ে। রেস্তোরাঁর তুলনায় এখানে নুডুলসের দামটা যেমন কম, পরিমাণেও বেশি দেয়।

চা খেতে রেস্তোরাঁয় বসার চাইতে রাস্তার পাশের চায়ের দোকানগুলোতে ঢোকাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। আর চা-পাতা কিনতে হলে অবশ্যই ম্যাল থেকে কিনতে হবে।

ঘোরাঘুরি

দার্জিলিং ঘুরতে যানবাহনের অভাব হবে না। প্রত্যেক হোটেলের সামনেই পাবেন গাড়িসহ ট্যুর গাইড। যে কোনো তথ্য বা দিক নির্দেশনার জন্য আছে পর্যটন অফিস। দল ভারি হলে রিজার্ভ গাড়ি নিয়ে ফেলতে পারেন। গাড়ি ভাড়ার চুক্তি হবে কয়টি স্থান ঘুরবেন সেই হিসেবে। তবে দল ছোট হলে বিভিন্ন ট্যুর প্যাকেজেও ঢুকে পড়তে পারেন।

কাছাকাছি দেখার মতো জায়গার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ম্যাল, টাইগার হিল, চা বাগান, জাপানিজ টেম্পল, চিড়িয়াখানা ইত্যাদি। এছাড়াও আছে নর্থ পয়েন্ট থেকে সিঙ্ঘা পর্যন্ত কেবল-কার। চড়তে লাগবে জনপ্রতি ১২০ রুপি।

দূরে কোথাও যেতে চাইলে আছে গঙ্গার পাড়, মায়া লেইক, মিরিক লেইক, রক গার্ডেন কিংবা জামুনিতে। এছাড়াও তিস্তার বুকে র‌্যার্ফ্টিংও করতে পারবেন।