মাইগ্রেইনের লক্ষণ

সাধারণত মাথার একপাশের দপদপ করে ব্যথা হওয়াকেই মাইগ্রেইন বলে। শারীরিক বা কায়িক শ্রমের কারণে মাইগ্রেইন যন্ত্রণার রকমফের ঘটে।

কামরুন নাহার সুমিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Oct 2014, 11:36 AM
Updated : 30 Oct 2014, 11:36 AM

তবে ব্যক্তি অনুযায়ী মাইগ্রেইনের উপসর্গ আলাদা হতে পারে।

একটি স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইটে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যারোলিনা হেডেক ইনিস্টিটিউটের চিকিৎসক অ্যানি কালহুন বলেন, "যেসব রোগীর মাইগ্রেইন রয়েছে, তাদের যে কোনো প্রকার মাথা ব্যথাকে মাইগ্রেইনের উপসর্গ হিসেবেই চিকিৎসা করা হয়।"

প্রতিবেদনে এই চিকিৎসক মাইগ্রেইনের লক্ষণগুলো সম্পর্কে অবহিত করেন।

আলো

হঠাৎ করে চোখে উপর তীব্র আলো এসে পড়লে মাইগ্রেইনের ব্যথা শুরু হতে পারে। যেমনঃ বাল্বের তীব্র আলো, রোদ ইত্যাদি। তবে মাইগ্রেইন ছাড়া অন্য কারণে মাথা ব্যথা করে এমন রোগীরাও এই সমস্যায় ভুগতে পারেন।

বিষণ্ণতা, বিরক্তি ও উত্তেজনা

মানসিক পরিবর্তন মাইগ্রেইনের কটি লক্ষণ হতে পারে। এক্ষেত্রে কিছু রোগী কোনো কারণ ছাড়াই বিষণ্ণতায় ভুগতে পারেন। মাইগ্রেইন ও বিষণ্ণতার মাঝে বংশগত সংযোগ থাকতে পারে, বিশেষ করে যাদের তীব্র আলোর কারণে মাইগ্রেইনের সমস্যা হয়। তীব্র বিষণ্ণতা মাইগ্রেইন দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।

অপর্যাপ্ত ঘুম

ভালো ঘুম না হওয়া, ক্লান্ত অবস্থায় ঘুম ভাঙা বা ঘুমাতে সমস্যা অনুভব করা মাইগ্রেইনে আক্রান্ত মানুষের সাধারণ সমস্যা।

মাইগ্রেইনের সময় ভালোভাবে ঘুমানো কষ্টসাধ্য। ফলে রোগী অনিদ্রা সমস্যায় ভোগেন।

বন্ধ নাক বা ভেজা চোখ

মাইগ্রেইনে আক্রান্ত রোগীর নাক বন্ধ হওয়া, নাক থেকে পানি পড়া বা চোখে পানি থাকার মতো সাইনাসের উপসর্গ থাকে।

খাবার ইচ্ছা

মাইগ্রেইনের ব্যথা শুরু হওয়ার আগে অনেকের নির্দিষ্ট কোনো খাবার খাওয়ার আগ্রহ অনুভব করেন। বিশেষ করে অনেকের এই সময় চকোলেট খাওয়ার আগ্রহ বাড়ে।

মাথার একপাশে বা উভয় পাশে চিনচিনে ব্যথা

তীব্র মাথা ব্যথা মাইগ্রেইনের প্রধান লক্ষণ। সঙ্গে মাথার একপাশে চিনচিনে ব্যথাও অনুভূত হতে পারে।

চোখে ব্যথা

মাইগ্রেইনের কারণের অনেকেরই চোখ ভিতরের দিকে ঢুকে যায়। অনেকেই এ সমস্যাকে 'আই-স্ট্রেইন' বা চোখ টানা রোগ ভেবে ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নেন। তবে এতে মাথা ব্যথার কোনো উপকার হয় না।

গলা ব্যথা

মাইগ্রেইন শুরু হওয়ার আগে গলা ব্যথা করতে পারে। সম্ভবত এটি ব্যথা শুরু হওয়ার প্রাথমিক ধাপ। অনেক সময় মাইগ্রেইনের ব্যথা চলে যাওয়ার পরে গলায় চিনচিনে ব্যথা অনুভূত হয়।

বারবার প্রস্রাব করা

বার বার প্রস্রাব করা মাইগ্রেইনের পূর্ব সংকেত। একে মাইগ্রেইনের পূর্বাবস্থা বলা হয়। ব্যথা শুরু হওয়ার ১ ঘণ্টা বা ২ দিন আগে থেকেই এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।

হাই তোলা

বেশি হাই তোলা মাইগ্রেইনের ব্যথা শুরু হওয়ার আরেকটি লক্ষণ। এই সময় প্রায় প্রতি মিনিটে হাই আসতে পারে।

বমি বমি ভাব বা বমি করা

যাদের ঘন ঘন মাইগ্রেইনের ব্যথা হয় তাদের জন্য বমি বমি ভাব বা বমি করা একটি লক্ষণ। অনেক সময় চিকিৎসা করেও বমি বমি ভাব কাটানো সম্ভব হয় না।

আলো ও শব্দ ব্যথা তীব্র করে

সাধারণত যাদের মাইগ্রেইনের সমস্যা থাকে তারা অন্ধকার ও শান্ত জায়গায় থাকতে ভালোবাসেন। কেননা উজ্জ্বল আলো ও উচ্চশব্দ মাইগ্রেইনের ব্যথা আরও তীব্রতর করে। নির্দিষ্ট কিছু গন্ধের ক্ষেত্রেও এমন হতে পারে।

অনেক সময় পারফিউমের কাউন্টারের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় বা হঠাৎ করে নাকে গন্ধ লাগলে যাদের সমস্যা আগে ছিল না তাদেরও মাইগ্রেইনের সমস্যা হতে পারে।

শরীরের একপাশে দুর্বল অনুভব করা

অনেক সময় এক পাশের হাত নিস্তেজ অনুভব করাও মাইগ্রেইনের ব্যথা শুরু হওয়ার পূর্ব লক্ষণ হতে পারে। আবার ব্যথা শুরু হওয়ার আগে দেহের এক পাশের পেশিতে দুর্বল অনুভব করে যা স্ট্রোক করার লক্ষণ হতে পারে। এক্ষেত্রে জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে নিতে হবে।

কথা বলায় সমস্যা

ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না, তাহলে হয়তো সামনেই মাইগ্রেইনের ভুগতে চলেছেন।

যাদের মাইগ্রেইন আছে, তাদের এই ব্যাথ্যা উঠার আগে কথা বলার সমস্যা হতে পারে।

মাথাঘোরা বা 'ডাবল ভিশন'

বাসিলার টাইপ মাইগ্রেইন হলে রোগীর মাথাঘোরা, চোখে কম দেখা, একটা জিনিস ২টা দেখার প্রবণতা বেড়ে যায়। অনেকে আবার ভারসাম্য রাখতে পারেন না।

মাইগ্রেইন যত শক্তিশালী হবে রোগীর ততবেশি এসব উপসর্গ দেখা দিবে।