সাবসিটি!

এক সময় বাংলাদেশে স্যান্ডউইচ মানেই ছিল পাতলা ও তিনকোণা রুটি। এর মধ্যে কিছু একটা থাকত, যা কোনও সময় চিকেন বা বিফ বলে ‘চালিয়ে দিতো’!

মিথুন বিশ্বাসবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Oct 2014, 01:49 PM
Updated : 26 Oct 2014, 02:04 PM

এদেশের অন্যতম একটি রম্য পত্রিকা এই তিনকোণা খাবার নিয়ে ব্যঙ্গ করতেও ছাড়েনি।

যাই হোক দিন বদলেছে, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের সঙ্গে অনেক বেশি সংযুক্ত। প্রচলিত ধারণায় বলা হয় আনুমানিক এক কোটিরও বেশি বাংলাদেশি কাজ ও অন্যান্য কারণে বিদেশে অবস্থান করছেন।

এমনই তিনজন চাচাতো-ফুপাতো ভাই মিলে বিদেশে পড়াশোনা শেষ করে ভাবলেন, দেশে এসে পারিবারিক অন্য ব্যবসার সঙ্গে একটি স্যান্ডউইচের রেস্তোরাঁ খুললে কেমন হয়!

তাদেরই একজন সামিউর নাহিয়ান ইসলাম। বিলাতের কুইন মেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ এই গ্রাজুয়েট অকপটে বলেন, "পড়াশোনা করা অবস্থায় দুপুর বেলা তাড়াতাড়ি, অপেক্ষাকৃত সস্তা ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের জন্য সাবওয়ে বেশ জনপ্রিয় ছিলো।"

তিনি দেশে এসে দেখলেন খুব বেশি জায়গায় বিক্রি হয় না স্যান্ডউইচ। এমন সময় বনানী ৮ নম্বর রোডের ১৫ নম্বর বাড়িতে খুলে ফেললেন সাবসিটি।

সাবওয়ের আদলে যে এই রেস্তোরাঁ তা বোধ হয় আর বলে দিতে হবে না! ১৬ রকম স্যান্ডউইচের সঙ্গে মিলছে হটডগও। আর স্যান্ডউইচগুলো বিক্রি হয় ৬ ইঞ্চি ও ১২ ইঞ্চি (ফুট লং) সাইজে।

খুব বিশাল নয় এই রেস্তোরাঁ। সব মিলিয়ে ৪০ জন একসঙ্গে বসে খেতে পারবেন। তবে সাবসিটির খাবার টেইকঅ্যাওয়ে বেশ বিক্রি হয় বলেই দাবি করলেন এখানকার ম্যানেজার ময়নুল আলম।

এছাড়া hungynaki.com ও foodpanda.com'য়েও সাবসিটির খাবার মিলবে। মানে হল এই দুই ওয়েবসাইটে অর্ডার দিলে এই স্যান্ডউইচ চলে যাবে বাড়ির দরজায়।

৬ ইঞ্চি স্যান্ডউইচের জন্য গুনতে হবে ২শ' থেকে ৩শ' টাকা।

দামের বিষয়ে জানতে চাইলে অন্যতম কর্ণধার ইসলাম বলেন, "ব্রেড বা রুটির মান একটি স্যান্ডউইচের ক্ষেত্রে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ। আর তাই আমরা ব্রেড সংগ্রহ করি বিদেশি মালিকানাধীন একটি কোম্পানির কাছ থেকে।"

এতে দাম নাকি বেশ ভালোই দিতে হয় বলে জানা গেল।

খাওয়ার পরে পারমেজান অরেগানো রুটির স্বাদ বেশ ভালোই লাগলো। গন্ধে অরেগানো হার্বসের উপস্থিতি টের পাওয়া গেল বেশ ভালোভাবেই।

ইসলাম আরও জানান, টাটকা উপকরণ ছাড়া অন্য কিছুই নাকি সাবসিটির রসুইঘরে ঢোকেনা। সাবসিটির দাবি, বেঙ্গল মিট থেকে আসে এই উপকরণের একটি বড় অংশ। এছাড়াও হালাপিনো, গেরকিন বা ব্ল্যাক অলিভ আসে দেশের বাইরে থেকে। চিজেরও একই ব্যাপার। আমেরিকান চিজের পাশাপাশি মোৎজারেল্লা দেওয়া হয় এদের স্যান্ডউইচে।

গলতে থাকা চিজের সঙ্গে তাজা পেঁয়াজ, ক্যাপসিকাম বা টমেটোর স্বাদ বেশ ভালো লাগবে এটা বলা যায়।

ক্লাব সান্ডউইচ পড়বে ১৭০ টাকা। হটডগ ১১০ আর রাইব্রেড স্যান্ডউইচ ১১০ টাকা।

ব্রেড মিলবে ৪ পদ: ইতালিয়ানো, উইট, পারমেজান অরেগানো আর সেসিমি সিডসসহ।

স্যান্ডউইচের মধ্যে যেমন আছে স্মোকড চিকেন ও চিকেন তেরিয়াকি। তেমনি আছে টুনা ফিশ। বিফের মধ্যে উল্লেখযোগ্য রোস্ট বিফ এবং স্টেক অ্যান্ড চিজ। এছাড়াও আছে ভেজিটেবল স্যান্ডউইচ।

এই স্যান্ডউইচগুলোর স্বাদ সমৃদ্ধ করার জন্য আছে ১২ রকম সালাদ ও ১৪ রকম সস।

বনানী ৮ নম্বর রোডে সাবসিটির অবস্থান হওয়ায় দিনের বেলা কর্মজীবীদের ভিড় বেশি থাকে। অন্য সময় তরুণদের আনাগোনা একটু বেশিই হয়, জানালেন ম্যানেজার আলম।

নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে নতুন ১১টি স্বাদের স্যান্ডউইচ যোগ হতে যাচ্ছে সাবসিটির মেন্যুতে। এই নতুন মেন্যুতে একবারে খাঁটি দেশি স্বাদের স্যান্ডউইচও থাকছে বলেই জানান আলম।

ছবি: সাবসিটির ফেইসবুক ও মিথুন বিশ্বাস।