ঘুমের আগে যত্ন

সারাদিনের কর্মব্যস্ততা, আর বাইরের ধুলা-ময়লায় ত্বকের যথেষ্ট ক্ষতি হয়। আর তাই ঘরে ফিরে রাতে ঘুমানোর আগে প্রয়োজন ত্বকের বাড়তি যত্ন।

ইরা ডি. কস্তাবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Sept 2014, 12:26 PM
Updated : 16 Sept 2014, 12:26 PM

"রাতে অনেকটা সময় আমরা বিশ্রাম নেই। এই সময় শরীরের পাশাপাশি বিশ্রাম নেয় আমাদের ত্বক। ফলে সারাদিনের হারানো সতেজতা ফিরে পায়। রাতে ঘুমের সময় আমাদের শরীরের কোষ পুর্ণগঠন প্রক্রিয়া কার্যকর থাকে।" বললেন অ্যারোমা থেরাপিস্ট শিবানী দে।

তিনি আরও জানান, এই কারণে ঘুমানোর আগে যদি ত্বক সঠিকভাবে পরিষ্কার না করা হয় তাহলে কোষের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে ব্যাঘাত ঘটে। ত্বক সঠিকভাবে পরিষ্কার না করা হলে ত্বকের লোমকুপের মুখ বন্ধ হয়ে যায়, ফলে ভিতরে ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ হয়ে ত্বকের নানান ধরনের ক্ষতি হতে পারে।

ত্বক সঠিকভাবে পরিষ্কার না করা হলে ব্রন বা র‌্যাশ হতে পারে। তাছাড়া বয়সের আগেই ত্বকে বলিরেখা পড়তে পারে।

সুন্দর ত্বকের চাবিকাঠি হলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। রং বা ধরন যাই হোক ত্বক সঠিকভাবে পরিষ্কার করা হলেই ত্বকের সৌন্দর্য বজায় থাকবে।

রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে সহজ কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করলেই ত্বক এবং চুল উজ্জ্বল, মসৃণ রাখা যায়। রাতে ত্বকের ও চুলের যত্ন সম্পর্কে জানিয়েছেন, শিবানিজ অ্যারোমা বিউটি সেলুনের কর্ণধার, অ্যারোমা থেরাপিস্ট শিবানি দে।

ত্বক পরিষ্কার করা

রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে অবশ্যই ত্বক পরিষ্কার করে ঘুমাতে যাওয়া উচিত। কারণ মুখে যদি সামান্য পরিমাণ মেইকআপ লেগে থাকে তাহলে সেটা ত্বকের বড় ধরনের ক্ষতি করে।

ত্বক পরিষ্কার করার জন্য প্রথমে অলিভ অয়েল বা বেবি অয়েল দিয়ে মুখ ভালো করে মালিশ করে নিন। এরপর হালকা গরম পানিতে কাপড় ভিজিয়ে মুখটা মুছে নিন। সবশেষে ভালো কোনও ফেইসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

সপ্তাহে দুই বা তিনদিন স্ক্রাবার ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে ত্বকের মৃতকোষ এবং ব্ল্যাক হেডস পরিষ্কার হয়ে যাবে।

ময়েশ্চারাইজ করা

প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মুখ ধোয়ার পরে অবশ্যই ত্বক ময়েশ্চারাইজ করে নেওয়া জরুরি। ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ভালো কোনও ময়শ্চারাইজার বা নাইট ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে।

ঘুমাতে যাওয়ার আগে পুরো মুখে ময়েশ্চারাইজার ভালো করে ম্যাসাজ করতে হবে। সকালে ত্বক হয়ে উঠবে প্রাণবন্ত।

এছাড়া ব্যবহার করতে পারেন অ্যালোভেরার রস। অ্যালোভেরা ত্বকের জন্য একটি উপকারী উপাদান।

ত্বকের রোদে পোড়াভাব দূর করতে, ত্বক মসৃণ রাখতে, দাগ মুক্ত করতে এবং ত্বকে ব্রনের উপদ্রব কমাতে অ্যালোভেরার তুলনা নেই। বিশেষ করে যাদের ত্বক অত্যন্ত সংবেদনশীল তারা অন্যান্য কেমিকেল-জাতীয় উপাদান ব্যবহার না করে ত্বকের যত্নে নাইট ক্রিম হিসেবে অ্যালোভেরা ব্যবহার করতে পারেন।

নিয়মিত ব্যবহার করতে চাইলে বাড়িতেই লাগিয়ে নিতে পারেন অ্যালোভেরা গাছ। এতে প্রতিদিন তাজাপাতা ব্যবহার করতে পারবেন।

একটি তাজা অ্যালোভেরা পাতার উপরের সবুজ অংশ ছুরি দিয়ে চেঁচে ফেলুন। এবার চামচ দিয়ে ধীরে ধীরে রস বা ভিতরের জেলির মতো উপাদান সংগ্রহ করে নেওয়া যায়।

তাজা রস একটি তুলার সাহায্যে পুরো মুখে লাগিয়ে নেওয়া যাবে। অ্যালোভেরার রস শুকিয়ে গেলে মুখে রস নিয়েই ঘুমানো যাবে। সারারাত অ্যালোভেরার রস ত্বকের নানান সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে।

সকালে ঘুম থেকে উঠে মুখ ধুয়ে ফেললে দেখবেন ত্বক কোমল ও উজ্জ্বল হয়ে আছে।
এভাবে প্রতিদিন ব্যবহারে বেশ দ্রুত ফলাফল পাওয়া যায়।

হট ওয়েল ম্যাসেজ
ঘুমানোর আগে শুধু ত্বকের যত্ন নিলেই চলবে না। চুলের জন্যও চাই বিশেষ যত্ন।

রাতে চুলে নারিকেল তেল বা অলিভ অয়েল গরম করে মালিশ করে নেওয়া যায়। চুলের আগায় ও গোড়ায় ভালো করে হালকা গরম তেল ম্যাসাজ করে ঘুমিয়ে যান। সারারাত তেলে থাকায় চুলের রুক্ষভাব কেটে যাবে এবং চুল হয়ে উঠবে ঝলমলে উজ্জ্বল।

যদি খুশকি থাকে তাহলে নারিকেল তেলের সঙ্গে এক চামচ আমলকীর রস, এক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে চুলের গোড়ায় ভালো করে মালিশ করে রেখে দিন সারারাত।

পরদিন শ্যাম্পু করে ফেলুন। চুলের খুশকি কমে আসবে।

ছবি: সৌজন্যে কে ক্র্যাফট