চুল পড়ে!

বয়স কম! তারপরও অনেকেই চুল পড়ার সমস্যায় ভুগছেন।

ইরা ডি. কস্তাবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 August 2014, 11:55 AM
Updated : 26 August 2014, 11:55 AM

মেয়েদের চুল পড়ার সমস্যা যেমন আছে, তেমনি ছেলেরাও ভুক্তভোগী। অনেকেরই মাথার উপরের অংশে চুল পড়ে যাচ্ছে। আবার অনেকের ক্ষেত্রে মাথার সামনের দিকের চুল পাতলা হয়ে যাচ্ছে।

চুল পড়ার সমস্যা নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের চর্মরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এবং অধ্যাপক ডা. রাশেদ মোহাম্মদ খান ও হেয়ারোবিক্স ব্রাইডালের কর্ণধার তানজিমা শারমিন মিউনি।

ডা. রাশেদ বলেন, “তরুণ প্রজন্মের খাদ্যাভ্যাস এবং ঘুমে অনিয়ম চুল পড়ার আসল কারণ। তাছাড়া বর্তমানে পড়াশোনার চাপ এবং বিভিন্ন কারণে তাদের মধ্যে মানসিক চাপও থাকে বেশি। আর পর্যাপ্ত ঘুম না হলে এবং মানসিক চাপ বেশি থাকলে চুল পড়ার সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।”

“সকালে নাস্তা না করা, অতিরিক্ত ফাস্টফুড খাওয়ার অভ্যাস, সবজি এবং ফলমূল এড়িয়ে চলা ইত্যাদি কারণে চুল বেশি পড়ে।” বলেন, ডা. রাশেদ।

খাওয়া-দাওয়া এবং ঘুমের অনিয়ম ছাড়াও আরও অনেক কারণেই চুল পড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।

যেমন, কোনও অস্ত্রোপচার হলে, পরে চুল পড়া বেড়ে যেতে পারে। গর্ভাবস্থাতেও চুল পড়া বেড়ে যায়। তাছাড়া থাইরয়েডের সমস্যা বা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াতেও চুল পড়ে।

চুল পড়া রোধ করে বিশেষ ধরনের একটি পুষ্টি উপাদান হল, বায়োটিন। প্রচুর ফলমূল এবং শাকসবজি খেলে শরীরে বায়োটিনের অভাব পূরণ করা সম্ভব। তাছাড়া চুল স্বাস্থ্যোজ্জ্বল রাখতে প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় কার্বোহাইড্রেট এবং প্রোটিনজাতীয় খাবারও রাখতে হবে।

ড. রাশেদ জানান, অনেকের ক্ষেত্রে চুল পড়া একটি বংশগত সমস্যা। তাদের ক্ষেত্রে মাথার পাশের চুলগুলো না পড়লেও মাথার মাঝের চুলগুলো পড়ে যেতে থাকে। এক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে।

চুল পড়া রোধ এবং নতুন চুল গজানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের হেয়ার ট্রিটমেন্ট থেরাপিও করা হয়ে থাকে। 

ডা. রাশেদ জানান, এক্ষেত্রে রয়েছে নেসো থেরাপি, পিআরপি থেরাপি এবং ফটো থেরাপি। তবে এর কোনোটাতেই যদি ফল পাওয়া না যায় তাহলে হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় মাথার অন্য অংশের চুল এনে যেখানে চুল পড়ে যাচ্ছে সে অংশে লাগিয়ে দেওয়া হয়।

রূপবিশেষজ্ঞ মিউনি বলেন, “চুল পড়ার সমস্যা অতিরিক্ত হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। কারণ সাধারণভাবে বাইরে থেকে কোনও পদ্ধতিতে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।”

“তবে সমস্যা যদি তুলনামূলক কম হয় তাহলে চুলের যত্ন নিলে এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।" বললেন মিউনি।

তিনি জানান, এক্ষেত্রে পার্লারে প্রোটিন ট্রিটমেন্ট করালে উপকার পাওয়া যাবে। তাছাড়া নিয়মিত চুলে তেল ও ভিটামিন ই-ক্যাপ ব্যবহার করলে উপকার হবে।

ঘরোয়া উপায়ে প্রোটিন ট্রিটমেন্ট বা চুলের যত্নে একটি প্যাকের বর্নণা দিলেন মিউনি।

মেহেদি, মেথি, টক দই, লেবুর রস এবং ডিমের সাদা অংশ, চুলের ঘনত্ব এবং দৈর্ঘ্য বুঝে একসঙ্গে মিশিয়ে পুরো চুলে ভালোভাবে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে চুল পড়ার সমস্যা কমার পাশাপাশি চুল ঝলমলেও হবে।

প্রতীকী ছবির মডেল: তাসমীম তাজকিয়া।

ছবি: ই স্টুডিও।