কুসুমে ক্ষতি নেই

শরীরে কলেস্টেরল বা চর্বি বেড়ে যাওয়ার ভয়ে অনেকেই কুসুম বাদ দিয়ে ডিম খান। তবে বয়স এবং চাহিদা অনুযায়ী নিয়ম করে ডিমের কুসুম খাওয়া শরীরের জন্য ভালো।

ইরা ডি. কস্তাআইএএনএস/বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 August 2014, 12:58 PM
Updated : 19 August 2014, 01:46 PM

এখন পর্যন্ত সবার মধ্যে যে ধারণা জন্মে আছে তা হল, হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায় ডিমের কুসুম।

হাফিংটন পোস্ট ডটকমের এক প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের পুষ্টিবিষয়ক কোচ লিজ উলফ জানান, ডিমের কুসুমের কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে না। বরং কুসুম ছাড়া ডিম খাওয়ার কারণে গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টিগুণ থেকে বঞ্চিত হয় শরীর।

১৯ শতকের প্রথমদিকে রাশিয়ান রোগবিজ্ঞানী নিকোলাই আনিচকোভ ডিমের কুসুমের পুষ্টিগুণ নিয়ে একটি গবেষণা করেছিলেন। তবে সেটি ছিল খরগোশের উপর। ওই গবেষণায় দেখা গেছে ডিমের কুসুমের ফলে খরগোশের হৃদরোগের আশংকা বেড়ে যায়।

এ বিষয়ে উলফ বলেন, “মানব দেহের সঙ্গে খরগোশের শারীরিক গঠনের কোনো মিল নেই। আর খরগোশের খাবারের তালিকায় কলেস্টেরলও নেই।”

১৯৫০ সালে অ্যানসেল কিইসের ‘সেভেন কান্ট্রিস স্টাডি’ বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে। আর বর্তমানে ডিমের কুসুম নিয়ে প্রচলিত চিন্তাধারার জন্য ওই গবেষণার ফলাফলই মূলত দায়ী বলে ধারণা করা হয়।

কিইস, সাতটি দেশের জনগণের খাদ্যাভ্যাস পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পান, যারা প্রাণীজ ফ্যাট বেশি খেয়ে থাকেন তাদের হৃদরোগের সম্ভাবনা বেশি থাকে। তবে তার এই গবেষণার সিদ্ধান্ত নিয়ে অনেকের মধ্যে দোটানাও ছিল।

অন্যদিকে ২০১০ সালে, দ্য আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন ২১টি ভিন্ন ভিন্ন গবেষণার ফলাফল নিয়ে আলাদা একটি গবেষণা চালায়। ফলাফল হিসেবে তারা জানায়, স্যাচারেইটেড ফ্যাটের সঙ্গে হৃদরোগের ঝুঁকির কোনো সম্পর্ক নেই।

অন্যদিকে বছরের শুরুতে টাইম ম্যাগাজিন ১৯৮৪ সালে আলোড়ন তৈরি করা মতবাদকে ভিত্তিহীন বলে দাবী করে। ডিম এবং উচ্চমাত্রার ফ্যাটযুক্ত খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এমন ধারণাই প্রচলিত হয় ১৯৮৪ সালে।

উলফ জানান, হৃদপিণ্ডের প্রদাহ থেকে মূলত হৃদরোগের উৎপত্তি।

“দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ, অতিরিক্ত তেল এবং প্রক্রিয়াজাত কার্বোহাইড্রেট বেশি খাওয়ার কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।” বলেন উলফ।

উলফ আরও বলেন, “ভিটামিন এ'র দারুণ একটি উৎস হল ডিমের কুসুম। যা ত্বকের জন্য খুবই ভালো। আর শরীরে শক্তি যোগাতে প্রয়োজনীয় ভিটামিন বি রয়েছে কুসুমে। তাছাড়া মস্তিষ্কে পুষ্টি জোগায় ডিমের হলুদ অংশ। গর্ভাবস্থায় মায়েদের জন্য অত্যন্ত উপকারী আস্ত ডিম।”

হরমোন তৈরি এবং শরীরে ভিটামিন ও মিনারালস শোষণ করার ক্ষমতা বাড়াতে প্রয়োজন স্যাচারেইটেড ফ্যাট।

তাছাড়া প্রতিদিনের খাবার অভ্যাস নিয়ন্ত্রণে আনা গেলে, পুরো ডিম কখনওই ওজন বাড়ানোর জন্য দায়ী হবে না।