চারশ বছরের ইফতার

চকবাজারের ইফতারের ঐতিহ্য সেই প্রাচীন ঢাকাই আমল থেকে চলছে। সেসময় মোগলদের ইফতারির আয়োজনে থাকতো নানান ধরনের কাবাব। আর মোগল আমলের পর থেকেই 'কাসিদা' গেয়ে সেহরির আহ্বান করা হত।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 July 2014, 09:53 AM
Updated : 14 July 2014, 09:53 AM

এসব বিষয় নিয়েই বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য লিখেছেন তরুণ ইতিহাস গবেষক রিদওয়ান আক্রাম।

১৬১০ কি ১৬১১ সাল। মোগল সেনাপতি মির্জা নাথানের মনটা বেশ খারাপ। কোথায় এই রোজা-রমজান মাসে পরিবার নিয়ে ইফতার করবেন; তা না বরং তাঁকে পড়ে থাকতে হচ্ছে এ বাংলায়। এ সময় রাজধানী দিল্লিতে থাকলে কতো রকম আয়োজনই না থাকত ইফতারে। সেসব কথা মনে হতে এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে পা বাড়ালেন বন্ধু মির্জা আলম বেগের তাঁবুর উদ্দেশে। আজ ইফতারের দাওয়াত পড়েছে সেখানেই। সকাল থেকেই ফৌজদের বিভিন্ন পদমর্যাদার অনেকে হাজির হচ্ছেন।

মির্জা নাথানের একটু দেরিই হয়ে গেল। তাঁবুর মোটা পর্দা সরিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই পাওয়া গেল অনেককে। ইফতারের আয়োজন একেবারে মন্দ নয়।

১৯ শতকের প্রথম দিকের চকবাজার। ছবি: স্যার চার্লস ড'য়লি।

মির্জা নাথানের বাহারিস্থান-ই-গায়বীতে তৎকালীন রোজার দিনের যে বর্ণনা পাওয়া যায়, তা অনেকটা এ রকম। যদিও ঢাকার বাইরের বর্ণনা। তবে মোগল বাংলার তৎকালীন রাজধানী ঢাকায় অবস্থান করা মোগলরাও যে এ রীতি অনুসরণ করতেন, তা বলা যেতেই পারে।

চারশ বছর আগে ঢাকায় মুসলমানের সংখ্যাও ছিল অল্প। তবে মোগলরা আসার পর চিত্রটা খানিক বদলে যায়। সত্যি বলতে রোজা পালন তখন উচ্চবিত্ত তথা মোগলদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। মোগলরা সঙ্গে করে নিজেদের বাবুর্চি নিয়ে এসেছিলেন। ফলে বিভুঁইয়ে এসে রসনাতৃপ্তির পরিপূর্ণ স্বাদ পেতে তেমন বেগ পেতে হয়নি তাঁদের। তাঁরা নানান রকম রুটি ও কাবাবে সন্তুষ্ট ছিলেন।

ঢাকার মোগল সেনাছাউনিতে বিখ্যাত ছিল নান-তাফতান, এক ধরনের নানরুটি যা বাদাম সহকারে তৈরি হত। আরেকটি জনপ্রিয় খাবার রুটি শিরমাল। আগ্রার শিরমাল ঢাকায় আসে মোগল সুবেদারদের হাত ধরে। সেই আমলে শিরমাল তৈরি হত সুজি দিয়ে। এসব রুটি তাঁদের ইফতারির মেন্যুতে না থাকার কোনো কারণই ছিল না। আর যদি শীতকালে রোজা পড়ে যেত, তাহলে সেসব রুটির সঙ্গে যোগ হত আকবরি নানখাতাই। সঙ্গে থাকত বিভিন্ন কাবাব।

১৮৮০ দশকে চকবাজার এলাকা। ছবি: জনস্টন এন্ড হফম্যান।

তখনকার বিখ্যাত কাবাব হচ্ছে পারসান্দের শিক কাবাব, যা ১০-১৫ সের মাংসের টুকরা দিয়ে করা হত। এটিই পরে সুতলি কাবাব নামে পরিচিতি লাভ করে। আরো থাকত মোসাল্লাম কাবাব, শামি কাবাব, হান্ডি কাবাব, টিকা কাবাব, তাশ কাবাব আর বিভিন্ন মাছের কাবাব।

সেকালে ধনী মুসলমানরা তাদের জীবনযাত্রায় প্রায় ৫০ ধরনের খাবার গ্রহণ করতেন। এর মধ্যে বিরিয়ানি, কিমা, পোলাও, বাকরখানি অন্যতম। হয়তো এসব খাবারের কিছু না কিছু হাজির থাকত মোগলদের ইফতারে।

১৬৩৯ সালে বাংলার সুবাদার হন শাহ সুজা। তাঁর সময়ে ঢাকায় আসে ৩০০ শিয়া পরিবার। তারা ঢাকায় পরিচিত করায় খোরাসানি পোলাও। আজকের হালিম-জাতীয় একটা খাবার মোগলরা তৈরি করতেন মাংস, মসলা, লেবুর রস ও গম দিয়ে।

এ তো গেল ঝালজাতীয় খাবারের কথা। মোগল যুগেও ছিল মিষ্টিজাতীয় খাবারের জনপ্রিয়তা। সুনাম ছিল ঢাকার চকবাজারের জিলাপি। আর রমজান উপলক্ষে ঢাকার মেয়েরা তৈরি করতেন কাটা সন্দেশ। গরমপ্রধান এলাকা হওয়ায় হয়ত শরবত দিয়েই শুরু হত ইফতার পর্ব। মোগল আমলে ঢাকার প্রধান বাজার, চকবাজারে রমজানে পাওয়া যেত হরেক রকম শরবত। আর গরম পানীয় হিসেবে থাকত চা বা কফি। তবে এটা শুধু অভিজাতদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। তখন চকবাজার পরিচিত ছিল বাদশাহি বাজার নামে। এই চকবাজার এলাকাকে ঘিরেই তখনকার ইফতারির বাজার বসে যেত।

পুরান ঢাকার কসাইটুলিতে কাসিদা প্রতিযোগিতা। ছবিটি আশির দশকের শেষের দিকে।

মোগল আমলে সেহরির সময় কাসিদা গাওয়ার চল ছিল কি না জানা যায় না। তবে কাসিদার চল চালু করে মোগলরাই। মোগলদের হাত ধরে ঢাকায় কাসিদার আগমন। তখন ফারসিতে লেখা হত কাসিদা। কারণ মোগল ভারতে ফারসিই ছিল দরবারি বা প্রশাসনিক ভাষা। মোগলরা নিজেদের স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখতেই এ ভাষার চর্চা করতেন।

মির্জা নাথানের বর্ণনানুসারে বলা যেতে পারে, কাসিদা যেকোনো বিষয়ের প্রশংসা করেই রচিত হত। বিশেষ বিশেষ উৎসবকে আরো বর্ণিল করে তোলার জন্যও কাসিদা লেখা হত।

কাসিদার শাব্দিক অর্থ কবিতার ছন্দে প্রিয়জনের প্রশংসা করা। মূল আরবি শব্দ ‘ক্বাসাদ’ বিবর্তিত হয়ে ‘কাসিদা’ শব্দে রূপ নেয়। প্রাক-ইসলাম যুগেও আরবি সাহিত্যে কাসিদার চর্চা হত। মাহে রমজান, ঈদুল ফিতর এবং মহররম উপলক্ষে কাসিদা রচনা করা হত। আর এ অঞ্চলে  ঢাকার আদি অধিবাসীরা এসব বেশি করতেন। ঢাকার এই আদিবাসীরা আবার দুই শ্রেণীতে বিভক্ত। এক দলে ছিল ‘সুব্বাসী’ বা ‘সুখবাসী’। তারা নিজেদের মধ্যে খুব করে উত্তর ভারতীয় সংস্কৃতি চর্চা করতেন। ঢাকার মোগল ঘরানার শেষ ধারক-বাহক ছিল এই সুখবাসীরা। নিজেদের মধ্যে তারা উর্দু বা ফারসির চর্চা করত।

আদি অধিবাসীর আরেকটি দল হচ্ছে ‘কুট্টি’। বাংলার সঙ্গে উর্দু-হিন্দি শব্দ মিশিয়ে কথা বলত তারা। তাদের কাসিদার ভাষাও হতো উর্দু ও ফারসি।

উনিশ শতকের শেষের দিকে ঢাকায় রোজাদারদের ঘুম থেকে জাগানোর জন্য গান গাওয়ায় দল বের হত। এ জন্য ছিল বিশেষ কাসিদা। তাতে সুরারোপ করে গাওয়া হত। ঢাকার কয়েকটি মহল্লার রোজাদারদের জাগানোর দায়িত্বে থাকত একেকটি দল। সাধারণত গরিব ও বৃদ্ধ লোকই এই দায়িত্ব পালন করতেন। তাদের হাতে থাকত লণ্ঠন আর কুকুরের হাত থেকে বাঁচার জন্য লাঠি। মহল্লার প্রায় প্রতিটি বাড়ির সামনে গিয়ে হাঁক দিত ‘রোজাদাররা ওঠ, সেহরির খাওয়ার সময় হয়েছে’, প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে রোজাদারদের জাগানোর এ কাজ চলত। পরে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায় এ কাসিদা।

কাসিদার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হতে থাকে। অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল কাইউম তাঁর ‘চকবাজারের কেতাবপট্টি’তে জানাচ্ছেন, বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে এ প্রতিযোগিতার চল ছিল।

তাহলে কি এরপর কাসিদার প্রতিযোগিতা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল? হতে পারে। তবে এটা বলা যায়, প্রতিযোগিতা বন্ধ হলেও কাসিদা রচনা বোধ হয় একেবারে বন্ধ হয়নি। ১৯৪৮-৫৫ সালের মধ্যে বেশ কিছু কাসিদার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। দেশভাগের ফলে ঢাকায় বেশ কিছু উর্দু ভাষাভাষীর আগমন ঘটে। তাদের কল্যাণে আবার রচিত হতে থাকে কাসিদা। ১৯৪০ সালের দিকে ঢাকায় সেহরির কাসিদা পরিবেশন করত তরুণরা। তাদের নিজেদের সুর করা সেসব কাসিদার মধ্যে থাকত ‘রমজান কি মাহিনা, ওঠো পেয়ারে মোমিনো, সেহরিকা ওয়াক্ত হো গা’, ‘সেহরি অব খা লো’ কিংবা ‘মাহে রমজান আগায়া’ ষোলো রমজান থেকে ‘মাহে রমজান আলবিদা।’

সে সময় কাসিদার জন্য ঢাকার প্রায় প্রত্যেক পাড়াতেই নিজ দল গড়ে উঠেছিল। এ দলগুলোর উপর নির্ভর করত পাড়ার সম্মান। ঈদের পর বিভিন্ন মহল্লার সর্দারদের নিয়ে কাসিদার প্রতিযোগিতা করা হত। থাকত পুরষ্কার। বিজয়ী দল তাদের মহল্লার জন্য বয়ে আনত দারুণ সম্মান।

রমজানের চাঁদ দেখার দিন থেকে পাঁচ রোজা পর্যন্ত রোজাকে স্বাগত জানিয়ে কাসিদা ‘চানরাতি আমাদ’ গাওয়া হত। পাঁচ থেকে ১৫ রোজা পর্যন্ত রোজার ফজিলত এবং আল্লাহ ও রাসুলের প্রশংসা বর্ণনা করে গাওয়া হত 'খুশ আমদিদ মাহে রমজান'। এছাড়া রমজানের বিদায় লগ্নে বিরহ ও হযরত আলীর শাহাদাতে দুঃখ প্রকাশ করে কেয়ামতের বর্ণনা করে কাসিদা পরিবেশিত হত। পুরান ঢাকার উর্দু রোড, কসাইটুলী, বকশীবাজার, হোসেনী দালান ও বংশালে এখনও কাসিদা পরিবেশিত হয়।

উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে, শবেবরাতের পর থেকেই শুরু হয়ে যেত রমজানের আয়োজন। পরিষ্কার করা হত পানির পাত্রগুলো। কেনা হত নতুন শরা, মাটির হুঁকা ইত্যাদি। সেগুলোকে বাসায় এনে সুরভিত করা হত সুগন্ধি দিয়ে। গরমের দিনে পানি ঠান্ডা রাখার জন্য আনা হত বালুর তৈরি সুরাহি। সেভাবে রাখা পানিকে সুগন্ধি করার জন্য দেওয়া হত গোলাপ ও কেওড়া। সে সময় ইফতার করাকে বলা হত 'রোজা খোলাই', মানে খাবার গ্রহণের মাধ্যমে রোজা খোলা বা ভাঙা। আর এই রোজা খোলাইয়ের আয়োজন বাড়িতে বাড়িতে শুরু হয়ে যেত জোহরের পর থেকেই।

বর্তমান চকবাজার। ছবি: মুস্তাফিজ মামুন / বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

মহিলারা রান্নাঘরে যেতেন। আগে থেকে ভেজানো ছোলা, মুগডাল বের করা হত। ডাল বেঁটে তৈরি করা হত ফুলুরি। যথাযথ চেষ্টা করা হত ইফতারের সময় সেটা যেন গরম গরম পরিবেশন করা যায়। আজান শোনার পর ইফতার শুরু হত জমজম কূপের পানি মেশানো শরবত দিয়ে। আর শরবতের মধ্যে থাকত ফালুদা, তোকমার শরবত, বেলের শরবত, বেদানার শরবত, লেবু ও তেঁতুলের শরবত। তোকমার শরবতের মধ্যে জনপ্রিয় ছিল তাখসে রায়হান।

শরবতের পর সওয়াবের কাজ হিসেবে খোরমা খাওয়া হত। এর পরই রোজাদার চলে যেতেন ইফতারের মূল পর্বে। আর সেটার জন্য পরিবারের ছোট-বড় সবাই হাজির হতেন দস্তরখানায়। ঘরে বানানো মুড়ির বিভিন্ন পদ, মিষ্টি ও নোনতা সমুচা, কাঁচা ও ভাজাডাল, ফল-ফলারি, পেঁয়াজু, ফুলুরি প্রভৃতি বাজার থেকে কিনে আনা হত। ছিল 'গোলাপি উখরে' নামের মিষ্টি মিশ্রিত একধরনের খাবার। এছাড়া ভুনা চিঁড়া, দোভাজা, টেপি ফুলুরি, মাষকলাইয়ের বড় ডাল-বুট, বাকরখানি, কাবাব ইত্যাদি হাজির থাকত দস্তরখানায়।

ঘরে বিভিন্ন ধরনের ইফতারি বানানো হলেও পুরান ঢাকাবাসী প্রতিদিন চকবাজার থেকে কিছু না কিছু ঠিকই আনতেন। ধনী-গরিব সবাই আসতেন চকে। তখন ঢাকায় বিভিন্ন মহল্লার মসজিদেও ইফতারের আয়োজন হত। মহল্লার মসজিদে ইফতারি পাঠাতেন এলাকার ধনী ব্যক্তিরা। এই সময় বিশ শতকের প্রথম দিকেও ঢাকায় ইফতারির বাজার বলতে শুধু চকবাজারকে বোঝাত।

তবে চল্লিশের দশকে পরিস্থিতি বদলাতে থাকে। মহল্লায় মহল্লায় গড়ে উঠতে থাকে ইফতারির অস্থায়ী দোকান। এটা অবশ্য চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতেই হয়েছিল। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ঢাকার মধ্যবিত্ত শ্রেণীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ইফতারির সঙ্গে যোগ হয় গ্রামবাংলার পিঠা-পুলি। এরপর বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে রমজান ও ইফতারের আয়োজন ও বৈচিত্র্য বেড়ে যায় অনেক গুণ।

তবে এখনও ইফতারির ঐতিহ্য আর স্বাদের কথা বলতে গেলে চলে আসে চকবাজারের নাম। দুপুর ১২টার পর থেকে শুরু হয় ইফতারি বিক্রির আয়োজন। প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার ক্রেতা হাজির হয় চকের ইফতারির স্বাদ নিতে।

চকবাজারের এখনকার ইফতারির মধ্যে আছে সুতি কাবাব, বড় বাপের পোলায় খায় ঠোঙা ভইরা লইয়া যায়, শাহি হালিম, দই বড়া, মুরগির রোস্ট, খাসির আস্ত রান, চিকেন কাঠি, কোয়েল পাখির রোস্ট, মুরগির রোস্ট ইত্যাদি। আরও আছে শাহি জিলাপি— এগুলোর একেকটিরই ওজন এক থেকে দুই কেজি।

শরবতের মধ্যে আছে দুধ, পেস্তা বাদামের শরবত, ঘোল বা মাঠার শরবত, তোকমার শরবত, বেলের শরবত, লেবুর শরবত, তেঁতুল ও গুড় মিশ্রিত টক-মিষ্টির শরবত, ইসবগুল ও বেদানার শরবত, হরেক রকম ফলের শরবত, পুঁদিনা পাতার শরবত ইত্যাদি। আছে ফালুদা, বোরহানি এবং লাবাং।

সব কিছু মিলিয়ে বলা যায়, চারশ বছরের রাজধানী ঢাকা এই দীর্ঘ সময় ধরে জিভে পানি আনা ইফতারি দিয়ে রোজাদারদের রসনা তৃপ্তি করে যাচ্ছে।

লেখকের প্রকাশিত বই: ঢাকার ঐতিহাসিক নিদর্শন, ঢাকার কোচোয়ানরা কোথায়, ড’য়লির ঢাকা, ঘটনা সত্যি, ঢাকাই খাবার, ঢাকা কোষ (যৌথ), বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি প্রকাশিত।