দূর করুন ‘ব্ল্যাকহেডস’

ব্রণ ও ফুস্কুড়ি হওয়ার জন্য দায়ী ব্ল্যাকহেডস।

মনি ইয়াসিনবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 May 2014, 02:52 AM
Updated : 25 May 2014, 02:52 AM

রূপবিশেষজ্ঞ তানজিমা শারমিন মিউনি বলেন, “ঠিকমতো পরিষ্কার না করলে লোমকূপে ময়লা জমে ত্বকে কালো কালো দাগ হয়। একেই বলে ব্ল্যাকহেডস। যা থেকে পরে ফুস্কুড়ি, ব্রণসহ নানান রকম চামড়ার রোগ হতে পারে।”

মিউনি আরও জানান, ব্ল্যাকহেডস হলে ত্বক নিষ্প্রভ ও অনুজ্জ্বল দেখায়। সাধারণত টিনএইজ ও মধ্যবয়সীদের মধ্য এসব বেশি দেখা যায়। বর্তমান পরিস্থিতিতে নানান কাজে ঘর থেকে বের হতেই হয়। বাইরের ধুলাবালি থেকে ব্ল্যাকহেডস হতেই পারে।

“নিয়মিত ত্বক পরিষ্কার করলে ব্ল্যাকহেডস থেকে মুক্ত থাকা যায়। সেই সঙ্গে প্রয়োজন স্ক্রাবিং। এছাড়া ক্লিনজিং, ময়েশ্চারাইজিংয়ের প্রয়োজন তো আছেই।” বললেন হেয়ারোবিক্স ব্রাইডালের এই মেইকআপ আর্টিস্ট।

মিউনি মনে করেন সবকিছুর পাশাপাশি শারীরিক সুস্থতারও দরকার আছে। কারণ শুধু রূপচর্চার উপরেই সৌন্দর্য নির্ভর করে না। পাশাপাশি ভিতর আর বাইরের সমন্বিত যত্নেরও প্রয়োজন আছে।

ব্ল্যাকহেডসের কারণ ও কীভাবে ত্বকচর্চা করলে এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায় সে বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানাচ্ছেন মিউনি।

* প্রথম কারণ অপরিষ্কার ত্বক। প্রতিদিন সকালে ও রাতে ফেইশল করে ত্বক পরিষ্কার করলে ব্ল্যাকহেডস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

* ব্ল্যাকহেডস হয়ে গেলে মাইল্ড ফেইসওয়াশ ব্যবহার করলে হবে না। এক্ষেত্রে স্ক্রাব ওয়াশ ব্যবহার করতে হবে। এবং স্ক্রাবিংয়ের পর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।

* যাদের ব্ল্যাকহেডস আছে তাদের মাসে অন্তত একবার ফেইশল ম্যাসাজ নেওয়া উচিত। খুব বেশি সময় পার করে ব্ল্যাকহেডস অপসারণ করলে লোমকূপ বড় দেখাতে পারে।

* বয়স এবং ব্ল্যাকহেডসের ধরণ বুঝেই ফেইশল স্টিম নেওয়া উচিত।

* প্রথম থেকে স্টিম বাদে শুধুমাত্র স্ক্রাব ও ময়েশ্চারাইজার মালিশ করে ব্ল্যাকহেডস উঠানোর চেষ্টা করুন। এতে ত্বক ভালো থাকবে।

ব্ল্যাকহেডস এবং স্ক্রাব

* গাজর সিদ্ধ করে পেস্ট বানিয়ে বেকিং সোডা ও পানি মিশিয়ে ত্বকে লাগান। এটা ব্ল্যাকহেডস কমানোর আদর্শ উপায়।

* লেবু ও মধু মিশিয়ে মুখে মাখুন। আধা ঘন্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন। মধু ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখে।

* আমন্ড অয়েল, লেবুর রস ও মধু মেশানো স্ক্রাবার ব্যবহার করুন।

* স্ক্রাবিং করলে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। লোমকূপের মুখ বন্ধ হয় না। ফলে ব্ল্যাকহেডস প্রতিরোধ হয়।

* ভেজা ত্বকে ‘ক্লকওয়াইজ মুভমেন্টে’ স্ক্রাব লাগান ও ম্যাসাজ করুন। তারপর স্বাভাবিক মাত্রার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

* স্ক্রাবিংয়ের পর অল্প ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। ত্বক শুষ্ক হলেও আদ্রভাব আনবে।

* প্রতিদিন ব্যবহারের জন্য মাইল্ড স্ক্রাব ত্বকের জন্য ভালো।

* স্ক্রাব ম্যাসাজের পর ত্বক নরম হয়ে যায়, তখন চাপদিয়ে মুছে নিলে ব্ল্যাকহেডস বের হয়ে আসে।

* ব্ল্যাকহেডস দূর করার পর পুরো ত্বকে এক টুকরা বরফ ঘষে নিন। স্ক্রাব ম্যাসাজ বা স্টিম নেওয়ার ফলে লোমকুপের মুখ বড় হয়ে যায়, তখন ময়লা সহজে উঠে আসে। বরফ লোমকূপের মুখ ছোট করে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে সাহায্য করে। ফলে ত্বক সজীব দেখায়।

* প্রতিদিনের ফেইশল ম্যাসাজ, যা প্রতিটি বিউটি সেলুনেই আছে। এই ফেইশল যে কোনো বয়সেই করা যায়। চাইলে দুই থেকে তিনবার করা যায়। ফেইশল ম্যাসাজ ত্বকে ব্লাড সার্কুলেশন বাড়ায়। ত্বককে সজীব, সতেজ ও প্রাণবন্ত রাখতে সাহায্য করে।

সুস্থ ত্বকের জন্য প্রয়োজন স্বাভাবিক খাবার। অর্থাৎ সবজি, ফল, সালাদ, দই, পানি ইত্যাদি। পানি ত্বকের জন্য খুবই জরুরি। প্রতিদিন ছয় থেকে আট গ্লাস পানি পান করার চেষ্টা করুন।

ব্যায়াম শরীরে সুষ্ঠুভাবে রক্ত চলাচল ও শ্বাস-প্রশ্বাসে সাহায্য করে। ফলে ত্বক ও মাথার চামড়ায় রক্ত চলাচল ভালো হয়।

সুন্দর ত্বকের জন্য ডায়েট ও ব্যায়ামের পাশাপাশি পরিমিত ঘুম এবং আরামেরও দরকার আছে।

মডেল: তোরা জাহান।

ছবি: ই স্টুডিও।