মাইলের পর মাইল লিচু বাগান আছে ঈশ্বরদীতে। স্বাদে ও আকারে এখানকার লিচু বেশ আকর্ষণীয়। এই সময়ে তাই ঈশ্বরদীর লিচু বাগান থেকে ঘুরে আসতে পারেন।
ঈশ্বরদীর সবখানেই এখন লিচু চাষ হয়। তবে এখানকার লিচু চাষের প্রধান এলাকাগুলো হল: জয়নগর, মিরকামারী, চরমিরকামারী, মানিকনগর, ছলিমপুর, সাহাপুর, ভাড়ইমারী, জগন্নাথপুর, বক্তারপুর, বড়ইচড়া, শিমুলচড়া ইত্যাদি।
এসব এলাকার তিন হাজারেরও বেশি হেক্টর জামিতে বাণিজ্যিকভাবে লিচু চাষ হয়। ঈশ্বরদীতে বেদানা, বোম্বাই, চায়না-১, মোজাফফরপুরী, বারী-১সহ বিভিন্ন জাতের লিচুর আবাদ হয়। তবে সবচেয়ে বেশি চাষ হয় বোম্বাই জাতের লিচু।
বাগান থেকে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে পছন্দের লিচু কেনাও যাবে। লিচু বাগান দেখার জন্য ঈশ্বরদীর সবচেয়ে ভালো জায়গা হল- ছলিমপুর আর মিরকামারী। এখানকার সব বাগানই মূলত মহাসড়কের দুইপাশে।
লিচু বাগান দেখে বেড়িয়ে আসতে পারেন এখানকার দর্শনীয় কিছু জায়গা।
প্রায় ১.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ইস্পাত দিয়ে তৈরি এ সেতুটি তৈরিতে তৎকালীন প্রায় ৩ কোটি ৫১ লক্ষ ৩২ হাজার ১শত ৬৫ টাকা ব্যয় হয়। স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় পাক বাহিনীর মর্টারের আঘাতে এর বারোতম স্প্যানটি ভেঙে নদীতে পড়ে যায়। যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে সেটি আবার সংস্কার করা হয়।
হার্ডিঞ্জ সেতুর পাশাপাশি প্রায় তিনশ মিটার সমান্তরাল দূরত্বে পদ্মা নদীর ওপরে অবস্থিত লালনশাহ সেতু। প্রায় ১.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ১৮.১ মিটার প্রস্থ এ সেতুটি ২০০৪ সালে চালু হয়। এ অঞ্চলের সাধক পুরুষ বাউল সম্রাট ফকির লালনের নামে এর নামকরণ করা হয়।
ঢাকা থেকে বাসে ও রেলে ঈশ্বরদী যাওয়া যায়। ঢাকার কল্যাণপুর ও গাবতলী থেকে ঈশ্বরদী এক্সপ্রেস, পাবনা এক্সপ্রেস ও সনি এক্সপ্রেসে চড়ে যেতে পারেন ঈশ্বরদী। এসব বাসে ভাড়া ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা।
এছাড়া ঢাকা থেকে আন্তনগর ট্রেন সুন্দরবন এক্সপ্রেস, চিত্রা এক্সপ্রেস, রাজশাহী থেকে কপোতাক্ষ ও মধুমতি এক্সপ্রেস, খুলনা থেকে সাগরদাড়ি এক্সপ্রেস, রূপসা এক্সপ্রেস, সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও চিত্রা এক্সপ্রেস এবং সৈয়দপুর থেকে রূপসা এক্সপ্রেসে ঈশ্বরদীতে যাওয়া যায়।
ঢাকা থেকে ঈশ্বরদীর ট্রেনের বর্তমান ভাড়া: তাপানুকূল বার্থ ৮১০ টাকা। তাপানুকূল সিট ৫৪০ টাকা। প্রথম শ্রেণী বার্থ ৫৪০ টাকা। প্রথম শ্রেণী ৩৬০ টাকা। স্নিগ্ধা শ্রেণী (এসি চেয়ার) ৪৫০ টাকা। শোভন চেয়ার ২৭০ টাকা। শোভন ২২৫ টাকা।
ঈশ্বরদীতে থাকার জন্য সাধারণ মানের কিছু হোটেল আছে। ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশনের পাশে আছে হোটেল ফয়সাল, ঈশ্বরদী ও উত্তরা। এসব হোটেলে ২৫০ থেকে ১ হাজার ২শ’ টাকায় থাকা যায়।
বাজেট বেশি থাকলে পাকশী রিসোর্টে থাকতে পারেন। জায়গাটিতে থাকা এবং খাওয়ার ভালো ব্যবস্থা আছে।
আর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে পাকশীতে অফিসার্স রেস্টহাউজ কিংবা ভিআইপি রেস্টহাউজেও থাকা যায়।
আলোকচিত্র: মুস্তাফিজ মামুন