রাজধানী ঢাকায় অনেক রেস্তোরাঁই বুফে খাবারের পসরা বসায়। এরমধ্য থেকে গুলশান এলাকার অন্যতম ৫টি বুফে খাবারে আয়োজন নিয়ে এই প্রতিবেদন।
টপকাপি
১৩৪ গুলশান অ্যাভনিউ, গুলশান ২
এই রেস্তোরাঁয় লাঞ্চ ও ডিনার দুই রকম বুফের ব্যবস্থা আছে। ফ্লোর ম্যানেজার আনোয়ার কবির জানান দোতলা মিলিয়ে তাদের ২৫০ জনের বসার ব্যবস্থা আছে।
ভিতরটা ছিমছাম সাজানো হলেও আহামরি বিশেষ কিছু চোখে পড়ার মতো নেই বললেই চলে। যদিও বাইরে রেস্তোরাঁয় ঢোকার মুখে টার্কিশ মোটিফ চোখে পড়বে।
কবিরের তথ্য অনুসারে তাদের বুফে আয়োজনে আছে চীনা, থাই, ভারতীয় ও টার্কিশ খাবার। দিনের বেলায় পাওয়া যাবে ৪০টি পদ। টার্কিশ খাবার পদের মধ্যে থাকে পিলাফ (পোলাও), কেবাব, প্লিসিস (মুরগির পদ)।
চাইনিজের মধ্যে আছে সুপ, ফ্রায়েড রাইস, চিলি চিকেন ও বিফ।
থাই টম ইয়াম সুপ পাওয়া যাবে। ভারতীয় খাবারে মধ্যে আছে কয়েকটি নিরামিষ পদ।
দুপুরের বুফের জন্য গুনতে হবে ৭৩০ টাকা। এরমধ্যে খাবার, পানীয় ও টাক্স যুক্ত। রাতের খাবারে আছে ৪৫ পদ, সবমিলে খরচ ৯৬০ টাকা।
সময় দুপুর ১২টা থেকে সাড়ে ৩টা। এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত ১১টা। এখানে ওয়াইফাইয়ের কোনো ব্যবস্থা নেই।
হেরিটেজ
বাড়ি ১০, রোড ১০৯, গুলশান অ্যাভনিউ
গুলশান ২ গোলচক্করের খুব কাছেই এই রেস্তোরাঁ। শেফ টমি মিয়ার রেসিপিতে খাবার পরিবেশন করে থাকে তারা। বিলাত প্রবাসী এই শেফের ভাষায় ‘বাংলা ফিউশন ক্যুইজিন’। এখানে বুফে মিলবে শুধু দুপুরে। পাওয়া যাবে সাড়ে ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত।
বাংলার অন্যতম প্রাচীন ঐতিহ্যের নমুনা টেরাকোটার আদলে গড়া হয়েছে এই রেস্তোরাঁর প্রবেশদ্বার। ভেতরের কিছু অংশেও রয়েছে কারুকাজ, যা চোখের জন্য বেশ আরামদায়ক। চেয়ার টেবিলও চোখে পড়বার মতো।
ভারতীয়, চাইনিজ ও বাংলা খাবার মিলিয়ে ৩৫ পদের বুফে লাঞ্চ পরিবেশিত হয়। একঘেয়েমি কাটানোর জন্য প্রতি সপ্তাহে ৪টি পদের ব্যবহার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
এখানে রয়েছে ওয়াইফাই ব্যবস্থা। বুফের খরচ ৫৭০ টাকা (ভ্যাট ও সার্ভিস চার্জ বাদে)। দোতলা মিলিয়ে ২৫০ জনের আসন রয়েছে।
ব্রাজিল চুরাসকো
রোড-৯০, গুলশান ২
আসছে মাসেই বসছে ফুটবলের বিশ্বকাপ। খেলা হবে ব্রাজিলে, আর এদেশে ব্রাজিলের খাবারও চেখে দেখতে পারবেন এখন।
জানুয়ারিতে গুলশানে যাত্রা শুরু করেছে এই রেস্তোরাঁ। এক্সিকিউটিভ শেফ নওরোজ বিন আলীর দাবি বাংলাদেশে এটাই প্রথম ব্রাজিলিয়ান খাবারের আয়োজন।
নামের মানে জিজ্ঞাসা করতেই আলী বলেন, “ব্রাজিলে এক বিশেষ ধরনের গ্রিলিং পদ্ধতিকে চুরাসকো বলা হয়।”
রেস্তোরাঁর বাইরে থেকেই চোখে পড়ে ব্রাজিলের সবুজ, নীল আর হলুদ রং। আরও আছে কিছু ব্রজিলিয়ান পোস্টার। বেশ ঝাঁ তকতকে অন্দরসজ্জা
ছড়িয়ে ছিটিয়ে করা হয়েছে আসন ব্যবস্থা। চাইলে বাইরের চত্বরেও বসা যাবে।
খাবারের ব্যাপারে আলী বলেন “আমাদের খাবারের সঙ্গে ব্রাজিলিয়ান খাবারের বেশকিছু মিল রয়েছে। যেমন ভাত ও গরুর মাংস্। আবার অমিলও আছে। খাবারের মসলায় রয়েছে ভিন্নতা।”
তিনি আরও বলেন, “চুরাসকো’ গ্রিল থেকে মাংস কেটে অতিথিদের প্লেটে দেয়া হয়।”
এখানে ১,৪৫০ টাকায় পাওয়া যাবে সালাদের বুফে। সালাদ ও মাংসের বুফে ২,২০০ টাকা। বারো বছরের নীচের শিশুদের জন্য খরচ ১,২০০ টাকা। সকল মূল্যের সঙ্গে ট্যাক্স যুক্ত।
সময় সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১২টা।
ভিলেজ
বাড়ি ৩৩, গুলশান অ্যাভনিউ
তিনতলা জুড়ে পাঁচশ জনের ধারণ ক্ষমতার রেস্তোরাঁ গুলশানে খুব বেশি নেই। বিভিন্ন তলায় ভিন্ন খাবারের আয়োজন। যেমন নিচতলায় মেঝেতে বসে একেবারে ‘ক্যাজুয়ালি’ খেতে পারবেন।
দোতলার আয়োজন কিছুটা ‘ফরমাল’। আর তিনতলায় সুপার ক্যাজুয়াল রুফটপ। মেন্যুতে রয়েছে উপমহাদেশীয় খাবারের আধিক্য।
শেফের তলিকায় আছেন ভারত ও পাকিস্তানের কয়েকজন।
এখানে বুফের খরচটা একটু ভিন্ন। দুপুরের খাবারে প্রতি গ্রাম ১ টাকায় বুফে খাওয়া যায়। যদিও অনেকের মতে এতে খরচ বেশি হয়। খোলা থাকে দুপুর ১২টা থেকে রাত ১১টা।
ব্যটন রুজ
পিঙ্ক সিটি, বাড়ি ১৪, গুলশান অ্যাভনিউ
শুরুর সময় থেকেই এই রেস্তোরাঁয় রাতের খাবারের বুফে আয়োজনে আছে একশ এক পদের খাবার। দুপুরের বুফেতে পাওয়া যাবে একান্নটি পদ। রয়েছে চাইনিজ, ভারতীয় ও ইতালীয় খাবার।
রেস্তোরাঁর তিনদিকে কাচ থাকায় গুলশান এলাকার কিছুটা অংশ খাবার খেতে খেতে উপভোগ করা যায়।
“এখানকার প্রায় সব শেফ প্রশিক্ষিত হয়েছেন ইতালিয়ান, ভারতীয় ও চায়নীজ রন্ধনশিল্পীর হাতে, যারা বিভিন্ন সময়ে ব্যটন রুজে কাজ করে গেছেন।” বললেন ব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম।
দুপুরের জন্য খরচ পড়বে ৫৯৫ টাকা। রাতের জন্য খরচ ৭৯৫ টাকা (ভ্যাট ও অন্যান্য সেবা সহ)।
এদের আসন বিন্যাস ৪৫০ জনের জন্য। দুপুরের বুফে চলে ১২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। রাতের বুফে শুরু সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। শেষ হয় রাত সাড়ে ১১টায়।
ছবি: স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের সৌজন্যে।