গর্ভকালীন পোশাক

মাকে ভালোবাসা জানানোর জন্য কোনো দিনের প্রয়োজন হয় না। তবে পৃথিবীর সবাই মিলে একটু আলাদা করে ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা জানানোর জন্যই মা দিবসের সূত্রপাত।

ইরা ডি. কস্তাবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 May 2014, 11:53 AM
Updated : 8 May 2014, 11:53 AM

মা দিবস উপলক্ষ্যে অনেক রকম আয়োজন চলে। আমাদের দেশের ফ্যাশন হাউজগুলোও পিছিয়ে থাকে না। মায়ের জন্য উপহারের পশরা সাজিয়ে বসে তারা। গিফটশপগুলোতেও পাওয়া যায় মা দিবসের কার্ড, মগ, শোপিসসহ অন্যন্য উপহার।

তবে সে ধারায় এবার কিছুটা ভিন্ন আয়োজনে মেতেছে দেশীয় ফ্যাশন হাউজ সাদাকালো। হবু মাদের কথা ভেবেই তারা সাজিয়েছে মা দিবসের আয়োজন।

বিশ্ব মা দিবস সামনে রেখে তারা গর্ভকালীন পোশাক প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। বাংলাদেশে এই ধরনের উদ্যোগ এবারই প্রথম।

এই উপলক্ষ্যে ২ মে ২০১৪ শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় ধানমণ্ডির আঁলিয়স ফ্রঁসেজের উঠানে অনুষ্ঠিত হয় গর্ভকালীন পোশাকের ফ্যাশন শো।

এই আয়োজন প্রসঙ্গে সাদাকালোর প্রতিষ্ঠাতা তাহসীনা শাহীন বলেন, “এখন কর্মজীবি নারীর সংখ্যা অনেক। প্রতিদিনই ঘরের বাইরে তাদের কাজে বের হতে হয়। তাই গর্ভকালীন সময়ে বিশেষ পোশাক নিয়েও ভাবতে হয় তাদের। আর এ বিষয়টি মাথায় রেখেই এ উদ্যোগ নিয়েছে ‘সাদাকালো’।”

জমকালো ফ্যাশন শো’র মাধ্যমে নতুন পোশাকের প্রদর্শনীতে ছিল ভিন্ন আমেজ। মাতৃত্বকালীন সময়ে বিভিন্ন ধাপ থাকে। একেক ধাপে একেক রকম পোশাকের আয়োজন।

অফিস, কেনাকাটা, বিয়ের অনুষ্ঠান অথবা অন্যান্য অনুষ্ঠান— এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে ৪টি ধাপে সাজানো হয়েছিলো প্রদর্শনীর উদ্বোধনী ফ্যাশন শো।

ঘরে, কর্মক্ষেত্রে, বাইরে এবং অনুষ্ঠানে পরার মতো আলাদা আলাদা পোশাক। গর্ভাবস্থার সাজে মডেলরা ফ্যাশন শো’র বিভিন্ন সারিতে সেগুলোই ফুটিয়ে তুলেছিল। যেহেতু মাতৃত্বকালীন ফ্যাশন শো, তাই ছিল না কোনো দ্রুতগতির বিড়াল-হন্টন।

ভিন্ন পরিবেশের সঙ্গে মিলিয়ে মডেলদের পোশাকের পরিবর্তনের পাশাপাশি তাদের পিছনের পর্দাতেও ফুটিয়ে তোলা হয়েছিলো সেই পরিবেশের ছবি।

“সাদাকালোর ডিজাইনাররা এই সময়ের শারীরিক পরিবর্তনের বিষয়টি মাথায় রেখেই প্রতিটি পোশাক ডিজাইন করেছে। বেছে নেয়া হয়েছে আরামদায়ক কাপড়” বললেন শাহীন।

ফ্যাশন শো’র শেষে অতিথিদের মধ্য থেকে মাতৃকালীন সময় পেরিয়ে আসা নারীরা তাদের অভিজ্ঞতা এবং এই মাতৃকালীন পোশাকের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

আলোচনা করেন অভিনেত্রী শম্পা রেজা, পুলিশের এডিসি আবিদা এবং ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয় ভাষিণী।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বোরহান উদ্দিন খান জাহাঙ্গীর, চয়নিকা কর্মকার, মিথিলা ফারজানা, শাহিন খান, শংকর শাওজাল, শিল্পী মনিরুজ্জামান, ভাস্কর মৃনাল হক, শিল্পী আহমেদ নাজির খোকন।

ধানমণ্ডির আঁলিয়স ফ্রঁসেজে এই গর্ভকালীন পোশাক প্রদর্শনী চলবে ১৫ মে পর্যন্ত।

সোম থেকে বৃহস্পতি দুপুর আড়াইটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত খোলা। এছাড়া শুক্র ও শনিবার সকাল নয়টা থেকে দুপুর ১২টা এবং বিকাল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা। রবিবার প্রদর্শনী বন্ধ।

গর্ভকালীন পোশাকের মধ্যে আছে সালোয়ার কামিজ, টপস, ম্যাক্সি, মেয়েদের পাজামা, ওড়না। পোশাকের পাশাপাশি মায়েদের জন্য তৈরি করা হয়েছে নানান রকম মগ এবং ব্যাগ।

তাহসীনা শাহীন বলেন, “প্রতিটি পোশাক তৈরি করতে সুতি কাপড়ই বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। কারণ আমাদের দেশের পরিবেশ, তাপমাত্রা এবং ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সুতি কাপড় বেশি আরামদায়ক।”

তিনি আরও বলেন, “গর্ভকালীন সময়ে মায়েদের শারীরিক নানান পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতেও সুতি কাপড়ই বেশি উপযোগী। তবে গরমের সময় লিলেন কাপড়ও আরামদায়ক।”

“এই কারণে কিছু কিছু পোশাকে সুতির পাশাপাশি অন্য ফেব্রিকও ব্যবহার করা হয়েছে”, বললেন শাহীন।

সুতি পোশাকগুলোর নকশার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ব্লক, বাটিক, প্রিন্ট ও এম্ব্রয়ডারি। হাল ফ্যাশনের ছোঁয়ায় সাদা, কালো ও ধুসর রংয়ের মিশ্রণে সাজানো হয়েছে পোশাকগুলো।

স্টাইল ও কাজের ভিন্নতার উপর ভিত্তি করে পোশাকগুলোর দাম রাখা হয়েছে ৮৫০ থেকে ৩ হাজার টাকার মধ্যে।

ছবি : সাদাকালোর সৌজন্যে