বাহারি তরকারি

বাঙালির রসনা তৃপ্তিতে রয়েছে নানান পদ। এসব খাবার রান্না করা যেমন সোজা তেমনি খেতেও মজার। বাহারি স্বাদের তরকারির রেসিপি দিয়েছেন রন্ধনশিল্পী ফৌজিয়া খান।

>>বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 April 2014, 02:50 AM
Updated : 15 April 2014, 02:57 AM

ডাটা সরপুঁটি

উপকরণ: মাঝারি আকারের সরপুঁটি মাছ ১টি। ডাটাশাকের ডাটা ১০-১২টি। টমেটো ৪টি। আদাবাটা ১ টেবিল-চামচ। রসুনবাটা ১ চা-চামচ। পেঁয়াজবাটা ১ টেবিল-চামচ। হলুদ ১ চা-চামচ। ধনিয়াগুঁড়া ১ চা-চামচ। মরিচ ৪-৫টি কুচিকুচি করে কাঁটা। তেল পরিমাণমতো। লবণ স্বাদমতো।

পদ্ধতি: মাছ সুন্দর করে কেটে ধুয়ে নিন। কড়াইয়ে তেল গরম করে আদা, রসুন, পেঁয়াজবাটা আর কাঁচামরিচ দিয়ে একটু নেড়েচেড়ে দিন। এরপর লবণ, ধনিয়া আর হলুদ দিয়ে আরও কিছুক্ষণ নেড়ে মাছের টুকরাগুলো ছেড়ে দিন। মসলায় মাখামাখি হয়ে আসলে ৫ মিনিট পর মসলা থেকে টুকরাগুলো উঠিয়ে একটি পাত্রে রাখুন।

এবার সেই মসলায় ডাটাগুলো দিন। ৫-৭ মিনিট পর একটু সিদ্ধ হয়ে গেলে মাছের টুকরাগুলো দিয়ে আধা কাপ পানি দিন। চুলার আগুন মাঝারি আঁচে দিয়ে ২০ মিনিট ঢেকে রান্না করুন।

মাঝে মাঝে ঢাকনা সরিয়ে কড়াই ধরে হালকা হালকা নাড়ুন। চামচ দিয়ে নাড়লে মাছ ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। নামানোর ৫ মিনিট আগে টমেটো কেটে উপর দিয়ে দিন।

ডাটা সরপুঁটি

লাউ-বোয়ালের মাথা

লাউ-বোয়ালের মাথা

উপকরণ: বোয়াল মাছের মাথা ১টি। লাউ মাঝারি আকারের ১টি। টমেটো ৪টি। আদাবাটা ১ টেবিল-চামচ। রসুনবাটা ১ চা-চামচ। পেঁয়াজবাটা ১ টেবিল-চামচ। হলুদ ১ চা-চামচ। ধনিয়াগুঁড়া ১ চা-চামচ। কাঁচামরিচ ৪-৫টি কুচি কুচি করে কাটা। তেল পরিমানমতো। লবণ স্বাদমতো।

পদ্ধতি: চারদিকের কাঁটাসহ মাছের মাথা কেটে নিন। লাউ মাঝারি লম্বাভাবে কাটুন। কড়াইয়ে তেল গরম করে আদা, রসুন, পেঁয়াজবাটা আর কাঁচামরিচ দিয়ে একটু নেড়েচেড়ে দিন। এরপর লবণ,  ধনিয়া আর হলুদ দিয়ে আরও কিছুক্ষণ নেড়ে মাথা আর কাঁটাগুলো ছেড়ে দিন।

মাথা আর কাঁটা, মসলায় মাখামাখি হয়ে আসলে ৫ মিনিট পর মাছের মাথা উঠিয়ে একটি পাত্রে রাখুন। এবার এই মসলায় লাউয়ের টুকরা দিন। ৫-৭ মিনিট পর একটু সিদ্ধ হয়ে গেলে মাথা আর কাঁটা দিয়ে দিন। আধা কাপ পানি দিয়ে চুলার আগুনে মাঝারি আঁচে ২০ মিনিটের জন্য ঢেকে রান্না করুন।

মাঝে মাঝে ঢাকনা উঠিয়ে কড়াই ধরে হালকাভাবে নেড়ে দিন। নামানোর ৫ মিনিট আগে টমেটো কেটে উপর দিয়ে দিবেন।

টিপস— লাউ ধুয়ে ছিলে কাটবেন। কাটার পর ধুলে লাউয়ের মিষ্টি মিষ্টি স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়।

কুমড়া-শশার ভাজি

কুমড়া-শশার ভাজি

উপকরণ: মাঝারি আকারের কুমড়ার অর্ধেক। মাঝারি আকারের লাউয়ের অর্ধেক। অল্প পাকাশশা বড় ১টি। বড় আলু ১টি। মাঝারি আকারের কাঁচা-পেঁপের অর্ধেক। ধনিয়া পাতাকুচি আধা কাপ। জিরাগুঁড়া ১ টেবিল-চামচ। কাঁচামরিচ ৫-৭টি। আদাবাটা ১ টেবিল-চামচ। রসুনবাটা ১ চা-চামচ। পেঁয়াজবাটা ১ টেবিল-চামচ। হলুদ ১ চা-চামচ। তেল পরিমানমতো। লবণ স্বাদমতো।

পদ্ধতি: সবজিগুলো সব তিনকোণা করে কাটুন। কড়াইয়ে তেল গরম করে আদা, রসুন, পেঁয়াজবাটা আর কাঁচামরিচ দিয়ে একটু নেড়েচেড়ে দিন। এরপর লবণ আর হলুদ দিয়ে আরও কিছুক্ষণ নেড়ে সবজিগুলো দিয়ে ঢেকে দিন। ১০-১৫ মিনিট মাঝারি আঁচে রাখুন। মাঝে মাঝে একটু নেড়ে দিবেন।

নামানোর আগে উপর দিয়ে জিরাগুঁড়া আর ধনিয়াপাতা ছিটিয়ে দিন।

তেলাপিয়ার চপ

তেলাপিয়ার চপ

উপকরণ: তেলাপিয়া মাছ ১ কেজি। আলু ১ পোয়া। আদাবাটা ১ টেবিল-চামচ। রসুনবাটা ১ চা-চামচ। জিরাগুঁড়া ১ টেবিল-চামচ। চাট-মসলা ২ টেবিল-চামচ। গোলমরিচের গুঁড়া ১ টেবিল-চামচ। পেঁয়াজকুচি ১ কাপ। মরিচকুচি ৮-১০টি। ডিম ৪টি। বিস্কুটেরগুঁড়া ২ কাপ। তেল পরিমানমতো। লবণ স্বাদমতো।

পদ্ধতি: মাছগুলো লবণ দিয়ে মাখিয়ে চুলায় দিয়ে ঢেকে দিন। পানি ছাড়া মাঝারি আঁচে রান্না করুন। মাছ থেকে যে পানি ছাড়বে তাতেই সিদ্ধ হয়ে যাবে। এর মাঝে আলাদা পাত্রে আলুও সিদ্ধ করে নিন। এবার সিদ্ধমাছ থেকে কাঁটা ছাড়িয়ে নিন। সিদ্ধ মাছ ও আলু একসঙ্গে মাখিয়ে এর মধ্যে আদাবাটা, রসুনবাটা, জিরাগুঁড়ো, চাট-মসলা, গোলমরিচের গুঁড়া, লবণ, পেঁয়াজ আর মরিচকুচি দিয়ে ভালো করে  মাখিয়ে নিন।

ডিমের সাদা অংশ বাদে শুধু কুসুম দিয়ে ভালো করে মাখিয়ে গোল গোল করে চপের আকৃতি দিন। চুলায় তেল গরম করে চপগুলো ডিমের সাদা অংশে ডুবিয়ে বিস্কুটের গুঁড়ায় মাখিয়ে ডুবো তেলে ভাজুন। 

বিস্কুটের গুঁড়া না দিলেও হয়। এই চপ ভাত বা পোলাওয়ের সঙ্গে খাওয়া যায়।

টক ঝোল

টক ঝোল

উপকরণ: লাউ ১ কাপ তিনকোণা করে কাটা। শুকনা বড়ই ৪-৫টি। তেঁতুলের দানাসহ রস আধা কাপ। আদা আর রসুনবাটা ২ টেবিল-চামচ। ধনিয়া ও জিরাগুঁড়া ১ টেবিল-চামচ। পেঁয়াজকুচি আধা কাপ। পানি ১ কাপ। তেজপাতা ২টি। চিনি ১ চা-চামচ। মরিচ লম্বা করে কাটা ৩-৪টি। তেল পরিমানমতো। লবণ স্বাদমতো।

পদ্ধতি: কড়াইয়ে তেল গরম করে মসলাগুলো দিয়ে নাড়াচাড়া দিন। এবার ১ কাপ পানির সঙ্গে লাউয়ের টুকরা দিয়ে চুলায় মাঝারি আঁচে ঢেকে দিন। লাউ সিদ্ধ হয়ে গেলে বড়ই, তেঁতুলের রস, পেঁয়াজ, মরিচকুচি, লবণ ও চিনি দিয়ে আবার ঢেকে দিন। পানি ঘন হয়ে আসলে নামিয়ে ফেলুন। নামানোর আগে তেজপাতা ভেঙে দিন। চাইলে ১-২টি শুকনা মরিচও ভেঙে দিতে পারেন।

এই তরকারি ভাত কিংবা পোলাউয়ের সঙ্গে খেতে ভারি মজা।

সমন্বয়ে : ইশরাত মৌরি।