বনানী এগারো’র রেস্তোরাঁ

রাজধানী জুড়ে যত রকমারি স্বাদের খাবার পাওয়া যায়, তার বেশিরভাগই হয়তো পেয়ে যাবেন বনানী ১১ নম্বর রাস্তায়। বিভিন্ন দেশের নানান স্বাদের খাবার সেই সঙ্গে আধুনিক পরিবেশে উদরপূর্তির পাশাপাশি চালিয়ে যেতে পারবেন আড্ডা।

চিন্তামন তুষারচিন্তামন তুষারমিথুন বিশ্বাস ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Jan 2014, 03:44 PM
Updated : 9 Feb 2014, 12:52 PM

ডানে, বামে, উপরে, নিচে— এতো খাবারের দোকান! কোনটা ছেড়ে কোন রেস্তোরাঁয় খাবেন সেটা নিয়েই সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে হবে কিছুক্ষণ। তাই বেশকিছু উল্লেখযোগ্য রেস্তোরাঁর নাম ও সংক্ষিপ্ত বর্ণনা এখানে দেওয়া হল। যা আপনার রসানা তৃপ্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে আশাকরি। এগুলো ছাড়াও কিছু রেস্তোরাঁ বাদ পড়তে পারে। পাঠক ইচ্ছে করলে মন্তব্যের ঘরে আপনিও লিখে দিতে পারেন বাদ পড়ে যাওয়া রেস্তোরাঁর নাম।

ফিয়েস্তা

বাড়ি ২ রোড ১১ বনানী

এয়ারপোর্ট রোড দিয়ে বনানীর ‘খাবার’ পাড়ায় ঢুকতেই এর অবস্থান। ছিমছাম অন্দরসজ্জায় এখানে খেতে পারেন ইন্ডিয়ান ও কন্টিনেন্টাল খাবার। স্টেক, গ্রিল্ডফিশ ও হায়দ্রাবাদী বিরিয়ানি এখানে বেশ জনপ্রিয়। সপ্তাহের সোম থেকে শুক্রবার খোলা থাকে সকাল ১১টা থেকে রাত ১১টা ৩০মিনিট পর্যন্ত। শনি থেকে রবিবার খোলা থাকে সকাল ১১টা ৩০মিনিট থেকে রাত ১১টা। এদের আসন সংখ্যা ৭০।

প্লাটিনাম টেরেস

বাড়ি ৪২ রোড ১১ বনানী

প্লাটিনাম সুইট আবাসিক হোটেলে রয়েছে ৩টি ভিন্ন রেস্তোরাঁ। এখানে আছে ‘রুফটপ’-এ খাবার ব্যবস্থা। বারবিকিউ চিকেন, শিশ কাবাব, হারিয়ালি ফিস কাবাবের বেশ চাহিদা এখানে| শনিবার, মঙ্গলবার ও শুক্রবার এখানে এলে খাবারের সঙ্গে বিনোদনও পাওয়া যাবে। শুক্রবার সন্ধ্যায় লাইভ মিউজিক শুনতে শুনতে বুফে ডিনার। শনিবার সন্ধ্যায় স্ন্যাক্স খেতে খেতে সিনেমা। আর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জ্যাজ মিউজিকের সঙ্গে ডিনারের সেট মেনু। এজন্য খাবারের মূল্যসহ নির্ধারিত পরিমাণ অর্থ গুনতে হবে জনপ্রতি। উপরে নীল আকাশ আর নিচে সবুজ গালিচা বিছানো মেঝেতে সুসজ্জিত চেয়ার-টেবিল। যে শহরে কালোধোঁয়ায় মাঝে মাঝে আকাশ ‘ঢেকে’ যায় সেখানে উঁচু ছাদে সবুজ ভালো লাগবে বলেই আশা করা যায়।

ব্যস্ততাহীন সময় কাটানোর একটি আদর্শ জায়গা হতে পারে প্লাটিনাম টেরেস। রেস্টুরেন্টটির আসন ব্যবস্থা রয়েছে ৫০ জনের। খোলা ও বন্ধের সময়সূচি : সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১১টা।

সুমি’জ হট কেক

ক্যাফে ইতালিয়ানো

 

সুমি’জ হট কেক

বাড়ি ৫০ রোড ১১ বনানী

ঢাকাজুড়ে ২৩‍টি আউটলেট নিয়ে সুমি’জ হট কেক তাদের ব্যবসা পরিচালনা করছে। ১১ নম্বর রোডে বেকারি ও স্ন্যাক্সের জন্য লক্ষ করা গেছে ক্রেতা ও ভোক্তাদের বেশ ভিড়।

ক্যাফে ইতালিয়ানো

চান্দিওয়াল ম্যানসন, বাড়ি ৩২ রোড ১১ বনানী

৪০ ধরনের কফি পাওয়া যায়! অবশ্য কাপুচিনো, এসপ্রেসো, ফ্র্যাপে বেশি বিক্রি হয়। সকালের নাস্তার মধ্যে পিৎজা, স্টেক, চিকেন, স্প্যাগেটি বেশ জনপ্রিয়। ধূমপায়ীদের জন্য আলাদা বসার ব্যবস্থাসহ মোট আসন সংখ্যা ৭০। রেস্টুরেন্টটির আলাদা কোনো সার্ভিস চার্জ রাখেনা। সকাল ১১ থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত খোলা থাকে।

সসলি’জ

বাড়ি ৩ রোড ১১ বনানী

বাংলাদেশ ও জার্মানির যৌথ মালিকানায় ফাস্টফুডের ‘প্রকৃত’ স্বাদ দিতে ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সসলি’জ। তবে খাবারের মধ্যে শর্মা, ক্লাব স্যান্ডউইচ এবং বিস্কুটই বেশি বিক্রি হয়। ফাস্টফুডের পাশাপাশি নিজস্ব বেকারিতে ১০টিরও বেশি রকমের বিস্কুট ও ৩ ধরনের কেক তৈরি হয়। ১১ ধরণের মশলায় গোপন রেসিপি অনুসরণে প্রকৃত কেনটাকি ফ্রায়েড চিকেন প্রস্তুত করে সসলি’জ। এছাড়া বাসায় রান্নার জন্য কিনতে পারবেন সসেজ ও মিট লোফ। এখানে বসার ব্যবস্থা আছে ২০ জনের। সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে।

অফ ট্র্যাক

বাড়ি ৮৪ রোড ১১ বনানী

বনানীতে রুফটপ রেস্টুরেন্টের মধ্যে এটি অনন্য বলতে হয়। জোড়া রেস্তোরাঁর ঠিক নিচের ফ্লোরের প্রতিদিনই লাইভ মিউজিকের ব্যবস্থা আছে। শুনতে পারবেন উপরে খোলা ছাদের নিচে বসেও। এছাড়া এক্সটেরিওর ডিজাইনে প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার চোখে পড়বে। প্রাকৃতিক রংয়ের চেয়ার-টেবিল ও টবে রাখা সবুজ বৃক্ষের উপস্থিতি চোখকে প্রশান্তি দেবে। তরুণ ও যুগলদের জন্য একেবারে আদর্শ! রাতের নিয়নে ভেসে যাওয়া শহরের দৃশ্য উপর থেকে দেখার সঙ্গে কফির চুমুক ভালোই লাগার কথা। বারবিকিউ ও ফ্রেস জুস বার রয়েছে। সেখানে তান্দুরি চিকেন, গ্রিল্ড রেড স্ন্যাপারের পরে ক্রিম কফির অর্ডারও বেশ হয়। ফ্রেস জুসতো অবশ্যই। খোলা আকাশের নিচে ৭০ জন বসার ব্যবস্থাসহ রেস্টুরেন্টটির আসন ব্যবস্থা মোট ১৫০ জনের। কার্যক্রম চালু থাকে দুপুর ১২টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত। লাইভ মিউজিক সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়।

হট ব্রেড

বাড়ি ৭৪ রোড ১১ বনানী

ঢাকার বেকারি জগতের অন্যতম নাম হট ব্রেড। সাধারণ বেকারি বা পেস্ট্রি শপের চেয়ে একটু আলাদা সাজ ও আয়োজন নিয়ে এই রোডে ‘‌জেঁকে’ বসেছে তারা। বেশ বড় পরিসর নিয়ে সাজানো প্রতিষ্ঠানটিতে থরেথরে সাজানো খাবার দেখলে জিভে জল ঠেকানো মুশকিল হবে। রেড ভেলভেট, অ্যপল পাই, সোয়ান কেকের সরবরাহ করতে হিমশিম খায় এরা। পেস্ট্রির রয়েছে ৩০ এরও বেশি পদ। চিকেন প্যাটিস, পাফ রোল, চিকেন সসেজ রোলও বেশ জনপ্রিয়। নিজস্ব বিস্কুট রয়েছে ১০ রকমের, ব্রেড ১৬ প্রকারের। বসে খাওয়ার জন্য আসন রয়েছে ২০ জনের। সকাল ৮টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত কার্যক্রম চলে।

রসনা বিলাস

বাড়ি ২৪, রোড ১১ বনানী

বাংলাসহ উপমহাদেশীয় বেশ কয়েক ধারার খাবারের জন্য রসনা বিলাসে যাওয়া যেতে পারে। রেস্টুরেন্টের প্রচলিত ধরনের পরিবেশে ছোট হাজীর বিরিয়ানি, হায়দ্রাবাদী বিরিয়ানি ও কাবাবের সঙ্গে মাছ-ভাতের চাহিদা মেটায় রসনা বিলাস। এছাড়া সকালের নাস্তায় পরোটা-ভাজি এবং খিচুরি পাওয়া যায়। আরও রয়েছে চটপটি ও পান। বুফে হিসেবে ১৫ আইটেমের চাইনিজ, ইন্ডিয়ান ও বাংলা খাবারের মিশেল ৪৫০ টাকায়। তবে সেটা শুধু বৃহস্পতি ও শুক্রবারে। এদের আসন ব্যবস্থা ৮০ জনের। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১১ পর্যন্ত খোলা থাকে।

আমেরিকান বার্গার

ক্লাব জেলাতো

আমেরিকান বার্গার

বাড়ি ২৪ রোড ১১ বনানী

বার্গার খাওয়ার অল্প কিছু ভালো জায়গা হল এই আমেরিকান বার্গার। গ্রিলে তৈরি চমৎকার স্মোক ফ্লেভার নাকে ও পেটে দুটোতেই ভালো লাগবে। ১৬ ধরনের বার্গার পাওয়া যায় এখানে। স্যান্ডউইচ পাবেন ৬ ধরনের। আরও আছে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ও কোমল পানীয়। সিঙ্গেল ও ডাবল চিজ বার্গার বহুল বিক্রিত। এদের আসন ব্যবস্থা ১০ জনের। সকাল ১১টা থেকে রাত ১০টা পর্য্ন্ত খোলা।

ফুড ফ্যাক্টরি

বাড়ি ৬৮ রোড ১০ বনানী

বাইরে থেকে দেখলে আলোকসজ্জার কারণে ‘পার্টিপ্লেস’ মনে হতে পারে। তবে ভিতরের পরিবেশটি একেবারেই আলাদা। জোড়ায় জোড়ায় তরুন-তরুনীদের পাশাপাশি সন্তান নিয়ে পরিবারিক ভোজ করতে আসা লোকজনেরও দেখা মিলবে এখানে। পরিবেশিত হয় ইন্ডিয়ান, ইতালিয়ান ও কন্টিনেন্টাল খাবার। টি-বোন স্টেক, চারকলগ্রিল্ড বারবিকিউ, কুলফি আইস ক্রিম, গ্রিক সালাদ রেস্টুরেন্টটির জনপ্রিয় খাবারের অন্যতম। রয়েছে ৭ ধরনের সেট মেন্যু। আসন ব্যবস্থা ২২০ জনের। সাজানো গোছানো চেয়ার আর এক ফ্লোর থেকে অন্য ফ্লোরে যাওয়ার জন্য লিফট ছাড়াও আছে স্পাইরাল সিড়ি। খোলা থাকার সময় দুপুর ১২টা থেকে ১১টা পর্যন্ত।

ক্যাফে ইতালিয়ানো

ক্যাফে হলিউড

কোরিয়ান সিউল রেস্টুরেন্ট

বাড়ি ১৫৩ (ফ্লোর পাঁচ) রোড ১১ বনানী

কোরিয়ান, জাপানিজ, চাইনিজ এই ৩ ধরনের খাবার নিয়ে সিউল রেস্তোরাঁ। পরিবেশ ছিমছাম এবং শান্ত। চেয়ার-টেবিলে কোনো বাহারি ভাব নেই। তবে লক্ষ্যনীয় টেবিলের উপরের আলোর রংয়ের ছটা। ৬ তলার উপর কাঁচে ঘেরা দেয়ালের পাশের বাঁশঝাড়টি চমকপ্রদই বলা যায়। তাই কোরিয়ান খাবার চিকেন ফ্রাইড, শ্রিম্প টেম্পুরা, বিফ বারবিকিউ, বিবিম বাব। চাইনিজ খাবার রাইস ডিস, মিক্সড ভেজিটেবল এবং জাপানিজ সেসামি বেশ চলে। ২০০ আসন ব্যবস্থার রেস্টুরেন্টটি খোলা থাকে সকাল ১১টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত। ৩জন কোরিয়ান শেফ মিলে সারেন খাবার প্রস্তুতের কাজ।

শিং হিয়ং

বাড়ি ১৫৩ (ফ্লোর তিন) রোড ১১ বনানী

চীনা ক্যান্টনিজ খাবার সম্ভার নিয়ে রেস্টুরেন্টটি বনানী এলাকার একমাত্র ক্যান্টনিজ খাবারের দোকান। সাজসজ্জায় লাল রংয়ের ব্যাপক ব্যবহার। বেশ একটা নিঝুম পরিবেশ। ফ্রাইড রাইস, সিজিলিং চিকেন, বিফ ও স্টিম ফিস (চিলি ও গারলিক) রেস্টুরেন্টটিতে বেশ প্রচলিত। ১০০ জনের আসন ব্যবস্তার রেস্টুরেন্টটি খোলা থাকে সকাল ১০টা ৩০মিনিট থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত এবং সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত। ফ্রোজেন ডিমসাম কিনতে পারবেন বাসায় বানিয়ে খাবার জন্য। 

শর্মা হাউজ

বাড়ি ৬৭-ডি (গ্রাউন্ড ফ্লোর) রোড ১১ বনানী

ঢাকায় শর্মার জন্য জনপ্রিয়। বনানীতে শর্মা (বিফ, চিকেন), ফোর সিজন পিজা, চিকেন ব্রেস্ট পাস্তা এখানকার জনপ্রিয় খাবার। এখানে যে খাবারটিই নেওয়া হোক, পরিবেশের কারণে বন্ধু-স্বজন নিয়ে খেতে বসে কিছুক্ষণ আড্ডা না দিয়ে উঠে যাওয়া দূরহ। তবে আসন সংখ্যা মাত্র ৬৫। খোলা ও বন্ধের সময় : সকাল ১১টা ও রাত ১১টা। শুধু শর্মা বিক্রির জন্য বনানীর বাইরেও বেশ কয়েকটি শাখা রয়েছে এদের।

সাজনা

রসনা বিলাশ

কজমো

বাড়ি ৬৭-ডি (র্ফাস্ট ফ্লোর) রোড ১১ বনানী

মিউজিক ক্যাফে বা লাউঞ্জ হিসেবে ঢাকার পুরাতন একটি প্রতিষ্ঠানের নাম কজমো। বেশ কয়েকটি শাখার মধ্যে বনানীর শাখাটি ৬০ জনের আসন ব্যবস্থা সমৃদ্ধ। বসার ব্যবস্থায়  ভিন্নতা রয়েছে এখানে। খাবারের সঙ্গে রয়েছে গান শোনার ব্যবস্থা। দেশের নামকরা শিল্পীদের নিয়ে প্রায়ই ‘শো’ আয়োজন করে কজমো। গান শোনার পাশাপাশি খাবার হিসেবে বেছে নিতে পারেন নিজেদের নাম দেওয়া খাবার। যেমন-- জুসি লুসি বার্গার, লেজি বার্গার। রয়েছে ‘ক্লাসিক’ ইংলিশ স্টাইলের ব্রেকফাস্ট এবং ব্রাঞ্চ। খোলা থাকে সকাল ৯টা ৩০মিনিট থেকে রাত ১১টা ৩০মিনিট পর্যন্ত।

কাবাব জোন

ডিশ এন্ড ডেজার্ট

ক্যাফে হলিউড

বাড়ি ৬৭-ডি (র্ফাস্ট ফ্লোর) রোড ১১ বনানী

হলিউডি সুপারহিরোদের শেইপে পিৎজাই এখানকার মূল আকর্ষণ। এখানে সব বয়সের মানুষেরই দেখা মিলবে। ভেতরে বেশ ছড়িয়ে রাখা আসবাব ও আসন ব্যবস্থার মধ্যে শিশুদেরও স্বস্তি ফেলার সুযোগ রয়েছে। বাহারি রংয়ে লেখা নাম ও লোগো ডিজাইন বেশ আকর্ষণীয়। এখানকার জনপ্রিয় খাবারের তালিকায় আরও রয়েছে সেট মেনু ও ডুবার মিল।

৭০ আসন ব্যবস্থার রেস্টুরেন্টটি সকাল ১১টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত খোলা থাকে।

ক্রিম অ্যান্ড ফাজ

বাড়ি ১১৬ রোড ১১ বনানী

একচেটিয়া মিষ্টিস্বাদের খাবারের পদ, যা পেট ভরায় না তবে মন ভরায়। কারণ এখানকার জনপ্রিয় পদ চকোলেট লাভারস, স্ট্রবেরি কুকি চিজ, মোকা ফাজ টেম্পল। এগুলো সবই আইসক্রিমের নাম। এমন নিজস্ব নামের আইসক্রিম রয়েছে তাদের প্রায় ২০ প্রকারের। আরও পাওয়া যায় জুস, কফি, স্যান্ডউইচ, ওয়েফার। ৫৫ আসন ক্ষমতার রেস্তোরাঁটি খোলা সকাল ১১টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত। এর অন্দরসজ্জা বেশ পরিচ্ছন্ন এবং সুপরিসর। নানান মিশ্রণে তৈরি আইসক্রিম, জুস ওয়েফার ইত্যাদির রংবাহারি পরিবেশনার বিষয়টি চোখে পড়ার মতো যথেষ্ট আলোর আয়োজন রয়েছে বিপনিটিতে।

আরবান স্পাইস

বাড়ি ১১৯ রোড ১১ বনানী

বিল্ডিংয়ের নিচতলায় অবস্থিত হওয়ায় বাইরে থেকে বেশ ভালোভাবে দেখা যায় না। কিন্তু ভেতরে ঢুকলে বাইরে থেকে নেওয়া ধারণা পাল্টে যাবে। কারণ দরজা ছাড়িয়ে প্রথমেই চোখে পড়বে প্যাসেজের এক পাশে আসন আর এক পাশে কিডজকর্নার। ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য এই আয়োজন। ভেতরে রয়েছে ৫ রকমের খেলনা। তাই সন্তানদের নিয়ে খেতে বেরুলে এখানকার কথা মাথায় আসলে ক্ষতি নেই। প্রাপ্তবয়স্কদের বসার জন্য আয়োজনে একটু রাজকীয় সজ্জার ছোয়া লক্ষ করা গেছে। সাধারণ চেয়ারের বদলে বসানো হয়েছে ফোমে মোরা সোফা ধরনের আসন। ইন্দোনেশীয় ধারার রেস্টুরেন্টটির জনপ্রিয় খাবারের তালিকায় রয়েছে নাসি গোরাং, কিং ফিশ (স্টেক, গ্রিল্ড), সিজলার ফিয়েস্টা। আরও রয়েছে বাসকিন রবিনস। ১০০ আসন ব্যবস্থার রেস্টুরেন্টটি খোলা থাকে দুপুর ১২টা থেকে রাত ১০টা ৩০মিনিট পর্যন্ত।

সাজনা

বাড়ি ১৪ রোড ১১ বনানী

বনানীর এই এলাকায় প্রথম দিককার ইন্ডিয়ান রেস্তোরাঁ হিসেবে পরিচিত। রাজকীয় সাজসজ্জা ও পরিবেশনায় সম্পূর্ণ ইন্ডিয়ান ঘরানার উপস্থিতি চোখে পড়বে। ভারতীয় খাবারের বিশাল সম্ভারের মধ্যে দোসা, ডালমাখানি, সাজনা স্পেশাল রেসিপির (ভেজ, নন ভেজ) পদগুলো জনপ্রিয়তায় অনন্য। রয়েছে ৩২ পদ নিয়ে বুফে লাঞ্চ।

কজমো

লাইভ কিচেন

কিংস কনফেকশনারি

বাড়ি ২৫ রোড ১১ বনানী

বেকারি প্রতিষ্ঠানটি ১১ নম্বর রোডের অন্যতম পুরান খাদ্যপণ্যের প্রতিষ্ঠান। ২২০ প্রকারের বেকারি, স্ন্যাক্স, পেস্ট্রি আইটেম তৈরি করে তারা। এমন লম্বা তালিকায় রয়েছে চিজ কেক, চকোলেট কেক, পাফ পেস্ট্রি, স্প্যাগেটি মিট বল, চিকেন রাইস, কফি। আরও রয়েছে লাঞ্চ ডিনারের জন্য ৭টি ডিস। ধূমপানের সুবিধাসহ ৫০ জনের বসার ব্যবস্থায় মাঝে মাঝেই কিছুটা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় কিংসকে। তবে ভিড় দেখে মনে হবে, কিংস ভক্তরা আসন সংকুলানকে ‘থোরাই কেয়ার’ করেন।

লাইভ কিচেন

বাড়ি ১২১ রোড ১৯/এ বনানী

লাইভ কিচেনকে বলা যেতে পারে অসাধারন পরিকল্পনা প্রসূত উদ্যোগ। সামনে খোলা রাস্তা, উপরে ফোটানো ছাতা! এছাড়া উন্মুক্ত রান্নাঘরের সামনে বসে ঘ্রাণে অর্ধ ভোজনের অভিজ্ঞতা পাবেন এখানে। ‘আসল’ হামবুর্গ স্টাইলে গ্রিলে প্যাটি তৈরির কারণে স্মোক ফ্লেভার একেবারে ‘হাড়ে হাড়ে’ টের পাবেন। তাই বলা যায় উদ্যোগে ভিন্নতার পাশাপাশি আয়োজনেও অনন্য লাইভ কিচেন। বার্গার ডাবল ডেকার, শেইক রোসা, ড্রিঙ্কস চেখে দেখবার মতো। রয়েছে ফ্রেস জুসের ৫০ ধরন। ৬০ জনের আসন ব্যবস্থা সমৃদ্ধ প্রতিষ্ঠানটি খোলা থাকে সকাল ১১টা ৩০মিনিট থেকে রাত ১০টা ৩০মিনিট।

ডিশ অ্যান্ড ডেজার্ট

বাড়ি ১০৮ রোড ৮ বনানী

বেশ একটা পারিবারিক আবহে থাই, চাইনিজ, ইন্ডিয়ান পদ পরিবেশন করে ডিশ অ্যান্ড ডেজার্ট। চেয়ার, টেবিল, দেয়ালে ঝোলান পেইন্টিংস সবমিলিয়ে ছিমছাম পরিবেশ। মিক্সড ফ্রাইড রাইস, নান বা পরোটার সঙ্গে চিকেন তান্দুরি ছারাও এখানকার ৩২ পদ নিয়ে বুফে লাঞ্চ চেখে দেখা যেতে পারে। ১২০ জনের আসন ব্যবস্থা সমৃদ্ধ রেস্টুরেন্ট, দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৪টা এবং সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা।

ওহ! ক্যালকাটা

বাড়ি ৪৯ রোড ১১   

বাংলাদেশ ও পশ্চিমবাংলার খাবারের পসরা নিয়ে ঢাকার ভোজন রসিকদের কাছে হাজির হয়েছে তারা। ঢুকতেই চোখে পড়বে কাঁচে কলকাতা শহরের নান্দনিক রেখাচিত্র। ভেতরে ছিমছাম সাজানো টেবিল-চেয়ার। প্রায় ১০০ জনের বসার ব্যবস্থা আছে এই রেস্তোরাঁয়। এদের ডাবচিংড়ি খাবারের পরিবেশন দেখে জিভে পানি আসবে না এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন। কষা মাংস, কাঁচালংকা মুরগি বা আস্ত ভেটকি মাছ ভাতের সঙ্গে বেশ লাগবে। চাইলে লুচি, নানরুটি বা পরটাও নিতে পারবেন। এছাড়া সপ্তাহে ৭ দিনই বুফে পাওয়া যায়।

শর্মা হাউজ

আরবান স্পাইস

নান্দোজ

বাড়ি ২৫ রোড ১১ বনানী

আর্ন্তজাতিক চেইন রেস্তোরাঁতে রয়েছে চিকেন মেন্যুর সমাহার। সঙ্গে ‘বিখ্যাত’ পেরি পেরি সস, যা নিয়ে আসা হয় সুদূর দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে। ৫৬ জনের বসার ব্যবস্থা আছে। ফ্যামিলি ডাইনিংয়ের জন্য আদর্শ। রেস্তোরাঁতে ফ্লেইমড গ্রিল্ড চিকেন, চিকেন এসপেতাদা ও চিকেন এসপেতাদা রাস্তিয়া সবসময়ই ভোজন রসিকদের প্রথম পছন্দ। দুপুর ১২টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকে।

কাবাব জোন

বাড়ি ১০২ রোড ১১ বনানী

নামে কাবাব জোন হলেও ডিনার, বুফে, ফাস্ট ফুড, সি-ফুডের পাশাপাশি ভেজেটারিয়ান ডিসও পরিবেশন করে। তবে এখান চালু আইটেম কিন্তু বারবিকিউ করা পাকিস্তানি মাটন রিবস, চিকেন মালাই টিক্কা, হায়দরাবাদি বিরিয়ানি, ডিপ বিরিয়ানি। আফগানি চিকেন ও বিফ বারবিকিউ বেশ চালু। আপনি খাঁটি পাকিস্তানী স্বাদের কাবাব খেতে নির্দিধায় আসতে পারেন এখানে। আর খাওয়ার শেষটা হতে পারে বিখ্যাত সুইস ব্র্যান্ড মুভেনপিকের আইসক্রিম দিয়ে। সব বয়সের স্বাদ মেটানোর জন্য বেশ যত্নেই খাবার প্রস্তুত করে তারা। বসার জন্য আসন ব্যবস্থা বেশ কয়েকভাগে সাজানো। যেমন—দুটি লাউঞ্জের ধারণ ক্ষমতা ২০ ও ১৪। এরপর রয়েছে আইসক্রিমের জন্য, স্মোকিংয়ের জন্য এমন আলাদা করে মোট ১৮০ জনকে একসঙ্গে সেবা দিতে পারে কাবাব জোন। সপ্তাহের খোলা থাকে প্রতিদিন দুপুর ১২টা ৩০মিনিট থেকে রাত ১২টা ৩০মিনিট পর্যন্ত।

ফিয়েস্তা

ক্যাফে হলিউড

 

স্মোক মিউজিক ক্যাফে

বাড়ি ৯৮ (ফ্লোর ৬) রোড ১১ বনানী

ইতালিয়ান, মেক্সিকান ধারার খাবারের জন্য আপনি স্মোক মিউজিক ক্যাফেতে প্রয়োজন অনুযায়ী চেয়ার টেবিল নিয়ে বসে যেতে পারেন বিনা সংকোচে। ধূমপানের সুবিধা বা অন্দর সজ্জা না, খাবারে ধোয়াটে স্বাদের এমন নামকরণ তাদের। ডাবল চিজ দেওয়া নিজস্ব রেসিপির স্মোক বার্গার, চিকেন ফাহি, আলটিমেট রিব, হট সিজলিং ব্রাউনি, মোকটেল-মহিতো এখানকার খাবার হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। বিপনিটির খোলা ও বন্ধের সময় দুপুর ১২টা থেকে রাত ১২টা। সবমিলিয়ে আসন ব্যবস্থা ৭০ জনের।

ক্লাব জেলাতো

বাড়ি ৫০ রোড ১১ বনানী

১১ বছর ধরে ব্যবসা পরিচালনা করছে। আইসক্রিমের জন্য অনন্য প্রতিষ্ঠান এটি। এদের ৬০ রকম স্বাদের আইসক্রিমের মধ্যে প্রতিদিন পাবেন মাত্র ২৫টি। ল্যাটিন জেলাতাস থেকে ইটালিয়ান জেলাতো শব্দটি আইসক্রিমের সমার্থক। আইসক্রিমের স্বাদ হিসেবে ফেরারো রোশে, আমেরিকান মাড, চকোলেট চিপস বেশ প্রচলন। আইসক্রিমের পাশাপাশি এখানে স্ন্যাকস ও কেক পাবেন। আরও রয়েছে কফি। ৪০ জনের আসন ব্যবস্থা সন্ধ্যায় অফিস ফেরত কর্মজীবিদের ভিড় চোখে পড়ে। আড্ডা দেওয়ার জন্য তরুনদেরও একটা জায়গা হতে পারে। এদের খোলা ও বন্ধের সময় সকাল ১১টা থেকে রাত ১১টা।

ওয়াও বার্গার

রোড ১০/এ (সাজনা রেস্তোরাঁর পাশের গলি)

পশ্চিমা ঘরানার স্ট্রিট ফুড কার্টের আদলে যাত্রা করেছে ওয়াও বার্গার। বড় চৌকাকৃতি ট্রেতে বার্গারের প্যাটি তৈরি হয়। চমৎকার সব টপিংস ও উপাদানের মিশ্রণে ৬ ধরনের সুস্বাদু বার্গার পাওয়া যায়। আরও আছে হটডগ।

শিং হিয়ং

সিউল কোরিয়ান

নিউ জিল্যান্ড ন্যাচারাল বাংলাদেশ

বাড়ি ১০০, রোড ১১ বনানী

বিশ্বের অন্যতম প্রিমিয়াম আইসক্রিম ব্র্যান্ড নিউ জিল্যান্ড ন্যাচারাল। ৩২টিরও বেশি দেশে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সম্প্রতি বাংলাদেশেও শুরু করেছে তাদের আইসক্রিম বিকিকিনি। নানান স্বাদের আইসক্রিমের পছন্দ করে অর্ডার দেওয়ার জন্য রয়েছে ছবিযুক্ত মেন্যুর বই। এক স্কুপ ২০০, ডাবল ৩৫০, তিন ফ্লেভারের ৩টি নিলে ৫০০ টাকা। অতিরিক্ত কোনো টপিং বা কোন চাইলে ৫০টাকা অতিরিক্ত গুনতে হবে। ‘সানডেইজ’ পদের মধ্যে আছে চকলেট ড্রিম, কুকি ডিলা্ইট, বেরি হেভেন ও বানানা স্প্লিট, যার দাম ৬৫০ টাকা (দুজন অনায়াসে খাওয়া যায়।) এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন ধরনের মিল্ক শেইক।  খোলা থাকে সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত।

পিৎজা হাট ডেলিভারি

এখানে বসে খাবার ব্যবস্থা নেই। কারণ এই বিক্রয়কেন্দ্রে শুধু ডেলিভারির ব্যবস্থা রয়েছে।

পিৎজার জন্য পৃথিবীর অন্যতম বড় চেইন রেস্তোরাঁর নাম পিৎজা হাট। নিন্দুকেরা ‘আমেরিকান’ স্টাইলের পিৎজা বললেও পিৎজা হাট বছরজুড়ে ভালো মানের সুস্বাদু পিৎজা বানিয়ে থাকে। চিকেন সুপ্রিম, চিকেন ক্লাসিক ও গোল্ডেন সারপ্রাইজ ইত্যাদি। ফোনে অর্ডার দিলে ২ কি.মি. দুরত্বের মধ্যে মোটরবাইকে করে ৩০ থেকে ৩৫ মিনিটের মধ্যে ডেলিভারি দেয়া হয়। অর্ডার-সরবরাহের সময় সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা।

* মূল্য পরিবর্তনীয়।