কর্মজীবী বাবা-মায়েরা সময় দিতে না পারায় অনেক সময় শিশুরা ভুল পথে পা বাড়ায়।
অনেক বাবা-মায়ের ধারণা, শিশুদের খেলনা কিংবা টাকা দিলে বেশি খুশি হয়। আসলে বাস্তবতা ভিন্ন। এ প্রসঙ্গে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. ওয়াজিউল আলম চৌধুরী বলেন, “শিশুরা খেলনা কিংবা টাকা চায় না। প্রথমেই চায় বাবা-মায়ের সান্নিধ্য।”
শিশুদের হাতে পর্যাপ্ত টাকা দেওয়া হলে বাবা-মায়ের অনুপস্থিতিতে তারা বিপথে পা বাড়াতে পারে। আর বন্ধুদের মধ্যে যদি কেউ মাদকাশক্ত থাকে তাহলে এ ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।
অধিকাংশ বাবা-মা তার বাচ্চার মাদকাশক্তের খবর অনেক দেরিতে পান। তখন মনঃচিকিৎসকের কাছে নিয়ে আসলে কিছুদিন চিকিৎসা চলে। পরে আবারও তারা মাদকাশক্ত হয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে পরিবারের সঙ্গে শিশুদের একটা মানসিক দুরত্ব তৈরি হয়।
সময় চায় শিশুরা
ডা. মো. ওয়াজিউল আলম চৌধুরী বলেন, “শিশুরা বাবা-মায়ের কাছ থেকে সময় চায়। বাবা-মা পর্যাপ্ত সময় না দিলে তারা সবকিছু সমবয়সী বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করে। অনেক ক্ষেত্রে তারা বন্ধুদের ভুল পরামর্শে প্রভাবিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এজন্য বাবা-মায়ের উচিত শিশুদের সময় দেয়া। তাহলে বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে শিশুদের রক্ষা করা সম্ভব হয়।”
অনেক সময় বাবা-মায়ের সঙ্গে শিশুরা নির্ভয়ে সবকথা বলতে পারে না। এটা শিশুদের মানসিকভাবে দুর্বল করে তোলে। এছাড়া ছোটখাটো কারণে অতিরিক্ত বকাঝকা করলে পরে অনেক কিছুই শিশুরা বাবা-মাকে জানায় না। এজন্য বিভিন্ন পরিস্থিতিতে তারা মিথ্যা কথা বলে।। নিজেকে লুকানোর চেষ্টা করে। এমনকি মাদকাশক্তও হয়ে যেতে পারে।
এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে শিশুদের পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। শিশুরা যাতে মনে না করে বাবা-মা সময় দেয় না বা তার কথা শুনতে চায় না।
এ ব্যাপারে ওয়াজিউল আলমের পরামর্শ হচ্ছে, “এজন্য যখন শিশুরা কিছু বলতে চায় তখন তা বলতে দেওয়া উচিত। আর ভালো কাজে শিশুদের উদ্বুদ্ধ করলে তারা সে কাজটি বেশি করার চেষ্টা করে। তাদের পছন্দ অপছন্দের ব্যাপারটিও বাবা-মাকে গুরুত্ব দিতে হবে। ইচ্ছার বিরু্দ্ধে জোর করে কিছু চাপিয়ে দিলে শিশুরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়তে পারে।”
তাই দিনের যতটুকু সময় পারা যায় সন্তানকে বাবা-মায়ের সময় দেওয়া উচিত। এতে অন্তত সময় থাকতে কোনো বিপদ ঘটার আগেই সন্তানকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়।