ওভেন আর ফ্রিজ থাকুক পরিষ্কার

শীতের সময়ে খাবার ভাল রাখার চিন্তা থাকে না। আর গরমকালে খাবার সংরক্ষণে ফ্রিজের তুলনা নেই। আবার ঠান্ডা খাবার ঝটপট গরম করে নিতে গৃহিণীর পছন্দ মাইক্রোওয়েভ ওভেন।  তবে ফ্রিজ এবং ওভেন-এর যত্ন না নিলে হয়ে যাবে হিতে বিপরীত, নষ্ট হয়ে যাবে খাবার। আর এসব খাবার খেলে দেখা দিবে নানা ধরনের রোগ-ব্যাধি। তাই নিজে এবং পরিবারকে সুস্থ রাখতে এ দুটি যন্ত্রের যত্ন অতি প্রয়োজনীয়। কীভাবে ফ্রিজ ও ওভেন পরিষ্কার রাখবেন, তার কিছু টিপস জানাচ্ছেন মরিয়ম মনি।

লাইফস্টাইল ডেস্কপ্রতিবেদক, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Feb 2013, 02:41 AM
Updated : 13 Sept 2014, 11:57 AM

ফ্রিজ হওয়া চাই শুষ্ক

শহুরে জীবনে গরমকালে পেটের সমস্যা বেড়ে যাওয়ার একটি প্রধান কারণ অপরিষ্কার ফ্রিজ। ব্যস্ত গৃহিণীরা আজকাল সপ্তাহ খানেকের খাবার একসঙ্গে রান্না করে ফ্রিজে রাখেন। তারা জানেন না, এই খাবার দুই দিনের মাথায় নষ্ট হয়ে যায়। জন্ম নেয় ব্যাকটেরিয়া। তবে একটি পরিষ্কার ফ্রিজ এই ঝুঁকি কমিয়ে দিতে পারে অনেকখানি। আর সেজন্য যেসব কৌশল অবলম্বন করতে পারেন-

  • ১. প্রথমেই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণকারী নবটি বন্ধ করে নিন। ফ্রিজের পানি জমে যে ট্রে’তে, সেটিও বের করে পানি সরিয়ে নিন।
  • ২. ফ্রিজে রাখা সব খাবার বের করে নিন। পানির বোতল থেকে শুরু করে প্যাকেটের মধ্যে রাখা মাছ-মাংসের মোড়কসহ সব সরিয়ে নিন।
  • ৩. বাজারে যে তরল সাবান (লিকুইড সোপ) পাওয়া যায়, সেটি কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে নিন। ওই পানি দিয়ে ভালোমতো ধুয়ে নিন ফ্রিজের তাক, ড্রয়ারসহ সব টুকিটাকি অংশ।
  • ৪. এরপর ঠান্ডা পরিষ্কার পানিতে ফ্রিজের তাক, ড্রয়ার ইত্যাদি অন্তত দুবার ধুয়ে ভালোমতো মুছে নিন। এক্ষেত্রে শুকনো তোয়ালে, বা নিউজপেপার কিংবা টিস্যু  ব্যবহার করবেন।
  • ৫. একইভাবে ধুয়ে মুছে নিন ফ্রিজের ভেতরের অংশ। খেয়াল রাখবেন ফ্রিজে যেন পানির একটি ফোঁটাও না থাকে। প্রয়োজনে ড্রায়ার ব্যবহার করুন।
  • ৬. সব তাক ও ড্রয়ার ধুয়ে-মুছে সেট করুন আবার ফ্রিজে। চালু করার অন্তত ১৫ মিনিট পর খাবারগুলো আবার ফ্রিজে রাখবেন। সপ্তাহে অন্তত একদিন ফ্রিজ এভাবে পরিষ্কার করবেন।
  • ৭. ফ্রিজে অতিরিক্ত খাবার পানি রাখবেন না, এতে ফ্রিজের ভেতরে পানি জমে ব্যাকটেরিয়া বাড়ার আশঙ্কাও বেড়ে যায়।
  • ৮. মাছ-মাংস ফ্রিজে রাখার জন্য বড় বাক্স বা কনটেইনার ব্যবহার করুন। মাছের জন্য আলাদা ও মাংসের জন্য আলাদা বাক্স ব্যবহার করা উচিত। এতে করে ফ্রিজে গন্ধ তৈরি হবে না। সবজি রাখার ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি প্রয়োগ করতে পারেন।

রক্ষণাবেক্ষণের ওপরেই নির্ভর করে ফ্রিজ আপনার খাবার কীভাবে সংরক্ষণ করবে। যেনতেন ভাবে ফ্রিজ ব্যবহার না করাই ভালো। আজকাল অনেক ফ্রিজে ‘ডিওডোরাইজার’ থাকে, যা খাবারের মান তো নষ্ট করেইনা বরং ফ্রিজটি রাখে দুর্গন্ধ মুক্ত। আর ফ্রিজের দরজায় খাবার পানির বোতল রাখলে দরজার তাক ঝুলে যেতে পারে। এতে করে ফ্রিজে বাতাস ঢোকে। যার ফলে ভেতরটা ঠিকমত ঠান্ডা হতে পারে না। এতে খাবার নষ্ট হয়ে যায়। তাই ফ্রিজের দরজার তাকে পানির বোতাল বা ভারী কিছু রাখবেন না। অনেক ফ্রিজেই ডালা না খুলে পানি ও বরফ বের করার ব্যবস্থা থাকে। তাই ফ্রিজ কেনার আগে এসব বিষয় খেয়াল করে নেয়া উচিত।

ওভেনের যত্ন নিন

রন্ধন শিল্পী কেকা ফেরদৌসী বলেন, “যদি প্রতিদিন ওভেন ব্যবহার করা হয় তাহলে সপ্তাহে অন্তত তিন দিন পুরো ওভেন ফ্রিজের মতো আলাদা অংশগুলে খুলে পরিষ্কার করা দরকার। লিকুইড সোপ বা তরল সাবান ছাড়াও বাজারে ‘ওভেন ক্লিনার’ পাওয়া যায়। প্রয়োজনে সেটিও ব্যবহার করতে পারেন। শুধু ওভেন নয়, এতে ব্যবহৃত বাটি, ভেতরে বসানো পেয়ালাও পরিষ্কার রাখুন সমানভাবে। ওভেনের ভেতর খাবারের ছিটেফোঁটাও যেন পড়ে না থাকে, সে বিষয়ে খেয়াল রাখুন।”

ফ্রিজ, ওভেন বা যেকোন বৈদ্যুতিক যন্ত্র পরিস্কার করার সময় অবশ্যই যন্ত্রটির বৈদ্যুতিক সংযোগ তারটি প্লাগ থেকে খুলে রাখবেন।

মডেল: বৈশাখী

আলোকচিত্র: অপূর্ব খন্দকার