‘ওয়ারড্রব’ পরিকল্পনা

‘ওয়ারড্রব’ পরিকল্পনা বলতে কেবল আলমারিতে কাপড় ভাঁজ করে রাখাকে বোঝায় না। এটা একটি সামগ্রিক বিষয়।

তৃপ্তি গমেজবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Sept 2017, 08:23 AM
Updated : 7 Sept 2017, 08:24 AM

‘ওয়ারড্রব’ পরিকল্পনা ব্যক্তির অর্থনৈতিক অবস্থা, তার জীবনযাপনের ধরন, পছন্দ, বর্তমান আবহাওয়া ইত্যাদি বিষয়ের উপর নির্ভর করে বলে জানান বাংলাদেশ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের 'বস্ত্র ও বয়নশিল্প' বিভাগের  সহকারী অধ্যাপক শাহমিনা রহমান।

তিনি বলেন, “কোন ব্যক্তি কী ধরনের পোশাক পরবে তা নির্ভর করে তার অর্থনৈতিক অবস্থা, তার কাজের ধরন, রুচি ও আবহাওয়ার উপর। তাই ব্যক্তি ভেদে তার ‘ওয়ারড্রব' পরিকল্পনাও ভিন্ন হবে।”

“চাকুরিজীবি, খেলোয়াড় অথবা যে স্কুল বা কলেজে যায় তাদের মধ্যে ওয়ারড্রব পরিকল্পনা অবশ্যই এক রকম হবে না। আবার শীতকালে যেমন হবে গরম বা বর্ষা ঋতুতে তার চেয়ে আলাদা হবে। তাই প্রত্যেকের নিজের অবস্থা ও সামর্থ্য বিবেচনা করে ওয়ারড্রব পরিকল্পনা করতে হবে।”

ওয়ারড্রব পরিকল্পনায় কিছু বিষয় প্রভাব ফেলে বলে জানান তিনি।

পোশাকের ধরন

আপনার ওয়ারড্রব কী ধরনের পোশাক থাকবে, তার মান কেমন হবে, কোন তন্তুর প্রাধান্য বেশি থাকবে তা নির্ভর করবে আপনার আয়, পরিবারের মাথাপিছু ব্যয়, সামাজিক অবস্থান ইত্যাদির উপরে। তাছাড়া আপনার কোনো রং পছন্দ, কোন তন্তুতে আপনি বেশি আরাম অনুভব করেন ও বর্তমান ঋতু কী- সেই অনুযায়ী পোশাক আপনার ওয়ারড্রব থাকবে।

কাজের ধরন

যারা নিয়মিত বাইরে যান, যেমন- চাকুরিজীবি, বা কলেজ শিক্ষার্থীদের ওয়ারড্রপে সাধারণ পোশাক অর্থাৎ যা সে নিয়মিত পরে আরাম পায় তার সংগ্রহ বেশি থাকবে। আবার যারা খেলোয়ার বা স্কুল পড়ুয়া অর্থাৎ যাদের কাজের নির্দিষ্ট পোশাক আছে তাদের ক্ষেত্রে এই পরিকল্পনাটা ভিন্ন হবে।

রং

অনেকে সবসময় পরার জন্য নির্দিষ্ট কিছু রং বেছে নিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে তার ওয়ারড্রপে ওই ধরনের পোশাকের আধিক্য লক্ষ্য করা যাবে।

ঋতু

ঋতু ভেদে পোশাকের তালিকার পরিবর্তন হয়। তাই পরিবর্তন আসে 'ওয়ারড্রবে'ও। ঋতুর সঙ্গে মানানসই পোশাকের আধিক্য দেখা যায় ওয়ারড্রবে।

তাই নিজের ওয়ারড্রব পরিকল্পনায় নিজের কাজের ও পছন্দকে প্রাধান্য দিতে হয়।

ওয়ারড্রব পরিকল্পনার পাশাপাশি তা গুছিয়ে রাখা প্রসঙ্গে পরামর্শ দেন এই অধ্যাপক।

তিনি বলেন, “পোশাক রাখার জায়গা গুছিয়ে রাখা হলে প্রয়োজন মতো তা খুঁজে পাওয়া যায়। কেবল অগোছালো থাকার কারণেই অনেক সময় দরকারি জিনিস হাতের নাগালে থাকার পরেও পাওয়া যায় না।

ওয়ারড্রব/ আলমারি গোছানোর ক্ষেত্রে সাধারণ কিছু বিষয় খেয়াল রাখাল পরামর্শ দেন তিনি-

* যে পোশাক তুলনামূলক কম পরা হয় তা পেছনের দিকে রেখে, বেশি ব্যবহৃত হয় এমন পোশাক হাতের কাছে রাখতে হবে।

* ঋতুর কথা বিবেচনা করতে হভে। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গেই অপ্রয়োজনীয় পোশাক সরিয়ে ফেলতে হবে।

* যে পোশাকগুলোর বিবর্ণ হয়ে গেছে বা যা ছোট হয়ে গেছে তা অযথা আলমারিতে না রেখে সরিয়ে ফেলতে হবে বা অন্যদের দিয়ে দেওয়া ভালো এতে করে আলমারির মতো ঘরও থাকবে ঝামেলা মুক্ত।

* যদি নির্দিষ্ট ইউনিফর্ম থাকে আর প্রয়োজনের জন্য যদি তা একাধিক থাকে (স্কুল-কলেজের পোশাক, খেলোয়ারের পোশাক) তাহলে তা এক সঙ্গেই গুছিয়ে রাখা ভালো।

* যেসব পোশাক একসঙ্গে পরতে হয় যেমন - শার্ট, প্যান্ট, বেল্ট বা সালোয়ার-কামিজ-ওড়না যা সেট হিসেবে থাকে তা একসঙ্গে ভাঁজ করে রাখুন। এতে দরকারের সময় একবারেই হাতের নাগালে পাবেন, সব কিছু আলাদা আলাদা করে খুঁজতে হবে না।

* কিছু ওড়না, প্যান্ট ইত্যাদি 'কমন' হিসেবে কাজ করে যেমন একই ওড়না দিয়ে কয়েকটি পোশাক পরা যায় তাহলে তা এমন স্থানে রাখুন যেন দরকারের সময় হাতের নাগালেই পাওয়া যায়।

ছ্ববি: রয়টার্স।