বাড়িতে মেহমান আসলে, সবারই চেষ্টা থাকে খাবারের নতুন নতুন পদ দিয়ে তাদের আপ্যায়ন করা। এখানে ভিন্ন কিছু খাবারের রেসিপি দেওয়া হল।
রংধনু পোলাও
উপকরণ: বাসমতী চাল ১ কেজি। ঘি ৩ টেবিল-চামচ। তেল ৩ টেবিল-চামচ। লবণ পরিমাণ মতো। এলাচ ৩টি। দারুচিনি ২টি। তেজপাতা ২টি। দুধ ২ কাপ। পেস্তাবাদাম-কুচি ১ টেবিল-চামচ। কাঠবাদাম-কুচি ১ টেবিল-চামচ। খাবার রং- কমলা, সবুজ ও লাল (প্রতিটা রং আলাদা আলাদা ভাবে ১ চামচ করে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে)।
পদ্ধতি: চাল ভালোভাবে ধুয়ে ঝাঁঝড়িতে পানি ঝড়িয়ে নিন।
হাঁড়িতে তেল আর ঘি মিলিয়ে গরম করে তাতে এলাচ, দারুচিনি, তেজপাতা ও বাদামকুচি দিয়ে অল্প আঁচে কিছুক্ষণ নেড়েচেড়ে চাল ও লবণ দিয়ে দিতে হবে। চাল যতক্ষণ মচমচে না হয়, ভাজতে হবে।
এরপর গরম পানি ও দুধ মিলিয়ে হাঁড়িতে ঢেলে দিন। চাল ফুটে আসলে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন।
নামানোর পাঁচ মিনিট আগে টুথপিক দিয়ে কয়েক জায়গায় ফুটা করে তাতে খাবারের রংগুলো কয়েক ফোঁটা করে দিয়ে দিন। আবার ঢাকনা দিয়ে ঢেকে পাঁচ মিনিট পর নামাতে হবে।
উপরে বাদামকুচি দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
দইয়ে ভাপা আস্ত ইলিশ
পদ্ধতি: আস্ত ইলিশ মাছের আঁশ তুলে, ভালো ভাবে ধুয়ে দুপিঠে ধারালো ছুরি বা ব্লেড দিয়ে দাগ কেটে নিন। টকদই ফেটিয়ে সঙ্গে রসুন, গোলমরিচ, মরিচবাটা, লবণ, সরিষা-বাটা ভালোভাবে মিশিয়ে মাছের গায়ে মাখিয়ে ঘণ্টা দুই রেখে দিন।
তারপর একটি সমতল প্যানে তেল দিয়ে তাতে দই-মসলার মিশ্রণ থেকে মাছটা উঠিয়ে বেশ সাবধানে হাল্কা ভেজে নিন।
এরপর মাছ উঠিয়ে পেঁয়াজকুচি এই তেলেই ভাজুন। পেঁয়াজ হালকা নরম হলে দইয়ের মিশ্রণ ঢেলে আধা কাপ পানি দিয়ে ঢেকে দিন। ফুটে উঠলে মাছটি দিয়ে আঁচ কমিয়ে আবার ঢেকে অল্প আঁচে ধীরে ধীরে মাছটি রান্না করুন।
মাছ হয়ে আসার ১০ মিনিট আগে ভিনিগার আর চিনি দিন। ১০ মিনিট পর কাঁচামরিচ ফাড়া ও বেরেস্তা দিয়ে নামিয়ে পরিবেশন করুন।
যারা ইলিশের কাঁটার জন্য খেতে পারেন না, তারা এইভাবে রাঁধতে পারেন। ইলিশের কাঁটা একদম নরম হয়ে যায়, ফলে চিবিয়ে খেয়ে ফেলা সম্ভব।
সুরমা মাছের কোফতা
পদ্ধতি: আস্ত সুরমা মাছের পেট ফেলে ভালো করে ধুয়ে মাথাটা আলাদা করুন। এরপর বাকি চামড়া ছাড়িয়ে মাছ আলাদা করতে হবে।
কিমা মেশিনে প্রথমে পাউরুটি গুঁড়া করে নিন। পেঁয়াজ, রসুন, আদা, কাঁচামরিচ, ধনেপাতা ও পুদিনাপাতা সব কুচিকুচি করে কেটে নিন। তবে বেশি মিহি হবে না।
মাছের কিমার সঙ্গে সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে গোল গোল করে বানিয়ে ডুবো তেলে মাঝারি আঁচে ভাজুন।
হাঁড়ি কাবাব
পদ্ধতি: মাংস চারকোণা করে কেটে ভালো ভাবে ধুয়ে নিন। শুকনা মরিচ ও আধা কাপ সরিষার তেল ছাড়া বাকি সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে হালকা পানি দিয়ে মাঝারি আঁচে চুলায় বসিয়ে দিন। মাংস সিদ্ধ হয়ে গেলে নামিয়ে রাখুন।
একটি লোহার কড়াইতে আধা কাপ তেল দিন। তেল গরম হলে মাংসগুলো দিয়ে ঘনঘন নাড়তে থাকুন। মাংস কাবাবের মতো হয়ে আসলে শুকনা মরিচগুলো কেটে একটু নাড়াচাড়া করুন।
১০ মিনিট পর গরম গরম হাঁড়িকাবাব চুলা থেকে নামিয়ে উপরে বেরেস্তা ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।
গোলাপ পিঠা
সিরা তৈরি: চিনি ১ কাপ। পানি ২ কাপ।
পদ্ধতি: চুলায় দুধ দিন। ফুটতে শুরু করলে ময়দা দিয়ে ভালো ভাবে নাড়ুন।
একটি থালায় খামিরটি নিন। ঘি দিয়ে ভালোভাবে মথে নিতে হবে।
খামির দিয়ে হালকা পুরু করে রুটি বেলে নিন। গ্লাসের মাথা দিয়ে রুটি কাটুন। ৩টি রুটি একসঙ্গে রাখুন (একটির উপর আরেকটি) মধ্যখানে হালকা চাপ দিন।
ছুরি দিয়ে চার দিকে চারটা কাটা দিন।এবার দুই কোণ নিয়ে মধ্যখানে কলির মতো লাগিয়ে ফেলুন।
এভাবে বাকিগুলো গোলাপের পাপড়ির মতো করতে হবে।
কড়াইতে তেল বসান। হাল্কা গরম হলে পিঠাগুলো ছেড়ে দিন। অল্প আঁচে পিঠাগুলো বাদামি হওয়া পর্যন্ত ভাজুন।
২ কাপ পানিতে ১ কাপ চিনি দিয়ে সিরা তৈরি করে পিঠাগুলো একটি ছড়ানো পাত্রে নিয়ে গরম সিরাটি পিঠার উপর ঢেলে দিন। পেস্তাবাদাম-কুচি দিয়ে পরিবেশন করুন।
সমন্বয়ে: ইশরাত জে. মৌরি।