ঘুমপাড়ানি খাবার

পুষ্টি উপাদানের মধ্যে কার্বোহাইড্রেইটস, ক্যালশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম ঘুম নিয়মিত করতে সহায়তা করে। আর এসব প্রাকৃতিক খাবার থেকেই পাওয়া যায়।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 May 2017, 12:15 PM
Updated : 4 May 2017, 10:30 AM

নির্ভেজাল ঘুম সুস্বাস্থ্যের চাবিকাঠি, এমনটাই বলছে স্বাস্থ্যবিষয়ক এক ওয়েবসাইট। তবে মানসিক চাপ, ব্যস্ততায় ভরা জীবন, ভুলভাল খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি নির্ভেজাল ঘুমের অন্তরায়।

ইউনিভার্সিটি অফ পেনসিলভেনিয়া’র করা এক গবেষণায় দেখা যায়, প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান যেমন কার্বোহাইড্রেট, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ঘুমের মান নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আখরোট: ‘সেরোটনিন’ ও ‘মেলাটনিন’ ঘুম-জাগরন চক্র নিয়ন্ত্রণ করে। ভালো ঘুমের জন্য অ্যামিনো অ্যাসিড ‘ট্রিপ্টোফান’ ভালো কাজ করে এবং ‘সেরোটনিন’ ও ‘মেলাটনিন’ তৈরিতে সাহায্য করে। আখরোট ‘ট্রিপ্টোফান’য়ের ভালো উৎস।

তাই দুশ্চিন্তার কারণে যারা শান্তিতে ঘুমাতে পারছেন না তাদের উচিত শোবার আগে একদুটি আখরোট খাওয়া।

কলা: কলা থেকে উচ্চমাত্রায় পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায়। পটাশিয়াম আমাদের পা শিথিল করে, দূর করে পায়ের অস্বস্তি বা ব্যথা। অপরদিকে ম্যাগনেসিয়াম স্নায়ু ও পেশি শিথিল করে। ফলে ঘুম ভালো হয়। এছাড়াও, ফলটি হজম ও রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতেও উপকারী।

মধু:
এতে থাকা প্রাকৃতিক শর্করা শরীরে সামান্য পরিমাণে ইনসুলিনের মাত্রা বাড়ায় এবং মস্তিষ্কে ‘ট্রিপ্টোফান’ সহজে প্রবেশ করতে সাহায্য করে। ‘ট্রিপ্টোফান’ তৈরি করে ‘সেরোটনিন’ ও ‘মেলাটনিন’, যা শারীরিক ঘড়ি নিয়ন্ত্রণকারী হরমোন। ফলে নিয়ন্ত্রণ করে ঘুম ও জেগে থাকার চক্র। তাই রাতে ঘুমানোর আগে এক চামচ মধু খেলে বা ক্যামোমাইল চায়ের সঙ্গে মিশিয়ে মধু পান করলে ঘুম ভালো হবে।  

লেটুস: এর ‘ল্যাক্টুক্যারিয়াম’ ঘুমভাব আনতে সাহায্য করে। রাতের খাবারে লেটুস মেশানো সালাদ খেলে কিংবা ঘুমানোর আগে লেটুস ও পুদিনা-পাতা সিদ্ধ পানি পান করলে দ্রুত ঘুম আসবে। 

কাঠবাদাম:
এতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, যা ভালো ঘুমের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি খনিজ উপাদান। ‘জার্নাল অফ অর্থোমলিকুলার মেডিসিন’য়ে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়, শরীরে ম্যাগনেসিয়ামের অভাব থাকলে ঘুমানো কঠিন হয়ে যায়। এছাড়াও, মাথাব্যথা দূর করতেও কাঠবাদাম উপকারী।

চেরি ফলের সরবত: ‘মেলাটনিন’য়ের মাত্রা বৃদ্ধি করে ফলটি, তাই দ্রুত ঘুম আসে। ইউনিভার্সিটি অফ পেনসিলভেনিয়া অ্যান্ড রোচেস্টারের করা এক গবেষণায় অনিদ্রায় আক্রান্ত একদল মানুষকে শোবার আগে চেরি ফলের সরবত খাওয়ানো হয়। এতে তাদের অবস্থায় উন্নতি হতে দেখা যায়।

ডিম:
এতে থাকে ভিটামিন ডি, যা ঘুমের উপর উপকারী প্রভাব ফেলে। মস্তিষ্কের যেসব নিউরন ঘুম আসতে সাহায্য করে, সেই নিউরনগুলোকে প্রভাবিত করে ভিটামিন ডি। গবেষণা বলে, যাদের ভিটামিন ডি’র অভাব থাকে তাদের ঘুমাতে সমস্যা হয়।

দুগ্ধজাত খাবার: সকল দুগ্ধজাত খাবারই ঘুমাতে সাহায্য করে কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে। ‘ট্রিপ্টোফান’ ব্যবহার করে মস্তিষ্ককে ‘মেলাটনিন’ নিঃসরণে সহায়তা করে ক্যালসিয়াম। 

কর্ন ফ্লেকস:
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল স্লিপ ফেউন্ডেশনের মতে, এক বাটি পছন্দসই কর্ন ফ্লেকস ঘুমাতে সাহায্য করবে। কারণ সিরিয়ালে থাকা কার্বোহাইড্রেইট ও দুধে থাকা ক্যালশিয়াম ভালো ঘুমে হতে সাহায্য করে।

ছবি: রয়টার্স ও নিজস্ব।