বৃষ্টিমুখর পাহাড়ের সকালগুলো বেশ আলাদা হয়, মেঘের সঙ্গে অন্ধকার নেমে আসে পাহাড়ের চুড়ায়। বৃষ্টির হাতছানিতে মেঘের অন্ধকার গ্রাস করে পাহাড়ের রাজ্য।
পাহাড়ের চূড়ায় জমে থাকে কালো মেঘের দল। ঝুম ধারায় নেমে আসে অঝোর বৃষ্টি। বিজলি রেখা স্পর্শ করে পর্বতচূড়া।
ঝুমবৃষ্টির হাওয়ায় সকালের নাস্তা সেরে রওনা হলাম রাঙামাটি-কাপ্তাই সড়ক ধরে। নতুন এই সড়ক ছুঁয়ে আছে জলের ধারা, অন্যপিঠে ছোট-বড় পাহাড়।
আগে তো ফুরোমন থেকে পুরো কাপ্তাই লেকের দৃশ্য দেখেছি। এবার দূর থেকে ফুরোমনের চুড়ায় মেঘের নাচন দেখছি। অচেনা মেঘের দল এসে ভিজিয়ে দিচ্ছে রাঙামাটির এই সর্বোচ্চ উচ্চতা।
ধীরে ধীরে আকাশটা কেমন জানি উজ্জ্বল হচ্ছিল, মেঘের অন্ধকার ছাপিয়ে আকাশে আলোর রেখা। টুকরা টুকলা নীল মেঘ ছড়িয়ে পড়ছে সাদা ক্যানভাসে, চিত্রকরের অগোছালো চিত্রপটের মতই আকাশে এলোমেলো রংয়ের বাহার। এমন বাহারি আকাশের রং বদলে দিতে পারে একমাত্র প্রকৃতি।
সড়ক ঘেঁষে গড়ে উঠেছে ছোট ছোট বাজার, জুমের কুমড়ার ফুল, লেকের মাছ- কি নেই সে বাজারে। তবে সবচেয়ে বেশি ওঠে নানা রকমের ফলমূল। পেঁপে, কমলা, কলা, আনারস এখানে বিকিকিনি হয়, ক্রেতা সাধারণত পর্যটকরা।
এই বুনো পথে মাঝেমধ্যেই বন থেকে নেমে আসে বুনো হাতির পাল। তাই সন্ধ্যার পর এ পথে খুব একটা প্রয়োজন ছাড়া কেউ চলাফেরা করে না।
কখনও বুনো জঙ্গল কখনও বা সৃজন বন, কাপ্তাই লেকের জলাধারা আর নীলাকাশে মোড়ানো ২৪ কিলোমিটারের সড়ক নিতান্তই সাদামাটা কোনো রাস্তা নয়, এ পথ প্রকৃতির বুনো সৌন্দর্যের ডানায় ভর করা সড়ক।
শ্যামলী, এস. আলম, হানিফ, ডলফিন, সেন্টমার্টিনসহ বিভিন্ন পরিবহন সংস্থার বাস নিয়মিত চলাচল করে।
রাঙামাটি শহর থেকে রির্জাভ সিএনজি বা মাইক্রো করে কাপ্তাই যাওয়া যায়। তবে রাত যাপন করতে হবে রাঙামাটি শহরে। বেশ কিছু মানসম্মত আবাসিক হোটেল আছে- হোটেল প্রিন্স, নাদিসা, হোটেল সুফিয়া, সাংহাই ইন্টারন্যাশনাল অন্যতম। বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করতে পারেন ০১৮১৫-৮৫৬৪৯৭ নম্বরে।
ছবি: লেখক ও জিয়াউল হক।