ফেইসবুকে রাঁধুনিদের নিয়ে সমন্বয় করা ‘দি টেইল অফ টেস্ট’ পেইজ বাংলা নতুনবর্ষ উপলক্ষ্যে রন্ধনশিল্পীদের নিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। দেশের ও প্রবাসী প্রায় ৩৬ জন রাঁধুনী প্রতিযোগীদের মধ্যে ১০ জনের রন্ধন পদ্ধতি প্রাথামিকভাবে বাছাই করা হয়। এরপর সেখানে থেকে প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে সেরা চারজনকে নির্বাচন করা হয়।
এই প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে ছিলেন রন্ধনশিল্পি কল্পনা রহমান, নুসরাত সুবরনা এবং নাস্রিন রানহাল। পরিচালনায় ছিলেন ‘দি টেইল অফ টেস্ট’য়ের রোয়েনা মাহজাবিন, জেএনতোরা, দিনা, মুনমুন মাহমুদ এবং আফরিনা নাজনিন। সহযোগিতায় ছিলেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম’য়ের প্রতিনিধি ইশরাত জে. মৌরি।
বৈশাখের বিশেষ রান্নায় আজকের প্রকাশিত হল প্রতিযোগিতায় চতুর্থস্থান করা রন্ধনশিল্পী নুসরাত আমিন।
ইলিশ মাছের ভাতুরি
পদ্ধতি: প্রথমে চাল ধুয়ে ঝরিয়ে রাখতে হবে। মাছ বড় টুকরা করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে।
কড়াইয়ে অর্ধেক তেল গরম করে তাতে পেঁয়াজ, হলুদ ও মরিচের গুঁড়া দিয়ে কষিয়ে, সরিষাবাটা দিয়ে ভালোভাবে নেড়ে নিন।
মাছের টুকরোগুলো মিশিয়ে কাঁচামরিচ দিয়ে নামিয়ে নিতে হবে।
এরপর আলাদা হাঁড়িতে বাকি তেল গরম করে চাল দিয়ে নেড়েচেড়ে, মাছ বাদে সমস্ত সরিষার মিশ্রণ মেশাতে হবে।
৪ কাপ ফুটন্ত গরম পানি এবং লবণ দিয়ে নাড়তে থাকুন। পানি শুকিয়ে আসলে জ্বাল কমিয়ে হাঁড়ি ঢেকে দিতে হবে।
১৫ মিনিট পর হাঁড়ি থেকে অর্ধেক ভাত উঠিয়ে মাছগুলো বাকি ভাতের উপর সাজিয়ে, উঠানো ভাত আবার মাছের উপর দিয়ে হাঁড়ি ঢেকে রাখতে হবে। মাছগুলো ভাপে সিদ্ধ হবে।
২০ থেকে ২৫ মিনিট পর নামিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার ভাতুরি।
তরমুজের খোসার ফিরনি
পদ্ধতি: তরমুজের ভেতরের লাল অংশ কেটে এবং উপরের শক্ত চামড়া ছিলে মাঝের যে নরম সাদা অংশ থাকে সেই অংশ দিয়েই ফিরনি তৈরি করতে হয়।
সাদা নরম অংশটা প্রথমে ধুয়ে মিহিকুচি করতে হবে। কুচোনো তরমুজ ফুটন্ত গরম পানিতে অল্প কিছুক্ষণ সিদ্ধ করুন।
সিদ্ধ হয়ে গেলে ছাঁকনিতে ঢেলে চামচ দিয়ে চেপে পানি বের করে নিন। এবার সিদ্ধ তরমুজ দুধের সঙ্গে মেশাতে হবে। এলাচ ও দারুচিনি দিয়ে দুধ জ্বাল দিন যতক্ষণ দুধ ঘন না হয়।
দুধ মোটামুটি ঘন হয়ে আসলে এলাচ তুলে চিনি দিন। দুধ ঘন ঘন নাড়তে হবে যেন লেগে না যায়।
এবার সামান্য পানিতে চালের গুঁড়া গুলিয়ে দুধে মিশিয়ে নিন। বলক উঠলে ফিরনি নামিয়ে নিন। পেস্তা বাদাম ছড়িয়ে দিন। ঠাণ্ডা হলে পরিবেশন করুণ মজাদার তরমুজের খোসার ফিরনি।
কাঁচা-মিঠা আখের সরবত
পদ্ধতি: আখ ছোট টুকরা করে রস বের করে নিতে হবে। আধা কাপ কাঁচাআমের কুচি এবং কাঁচামরিচ ছোট ছোট টুকরা করে পানি দিয়ে দিয়ে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। তারপর ছেঁকে শুধু পানিটা নিতে হবে।
একটি গ্লাসে আখের রসের সঙ্গে আমের রস মিশিয়ে বিট লবণ দিয়ে ভালো ভাবে নেড়ে নিন। ফ্রিজে ঠাণ্ডা করে, বরফ কুচি দিয়ে পরিবেশন করুন।
ডিমে ভাজা পোড়া-বেগুন
পদ্ধতি: প্রথমে আস্ত বেগুনে একটু তেল মেখে চুলার আগুনে পুড়িয়ে নিতে হবে। পোড়ানো হলে বেগুনের উপরের পোড়া চামড়া উঠিয়ে নিন।
এরপর ডিম ফেটে এতে লবণ, সরিষার তেল, পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ, মরিচের গুঁড়া, বিস্কুটের গুঁড়া ও ধনেপাতা-কুচি একসঙ্গে ফেটতে হবে।
ভাজার পাত্রে তেল গরম করে আস্ত বেগুন ডিমের মিশ্রণে মাখিয়ে সাবধানে মাঝারি আঁচে ভাজুন। এক পাশ ভাজা হলে উল্টিয়ে আরেক পাশ ভাজতে হবে। এভাবে একই প্রক্রিয়ায় দ্বিতীয় বেগুনটি ভেজে নিতে হবে। হয়ে গেলে গরম গরম যে কোনো চাটনির সঙ্গে পরিবেশন করুন।
সয়া সসে কড়াই গোস্ত
রসুনবাটা ১ টেবিল-চামচ। শুকনা-মরিচগুঁড়া ১ টেবিল-চামচ (টেলে গুঁড়া করা)। এলাচ ১টি। দারুচিনি ১টি। ছোট তেজপাতা ১টি। পেঁয়াজ ৪,৫টি মোটা করে কাটা। কাঁচামরিচ ২,৩টি।
পদ্ধতি: গরুর মাংস ধুয়ে মাঝারি আকারে টুকরা করে নিন।
পানি ঝারিয়ে মাংসে সয়া সস, আদা, রসুন, মাখিয়ে এক ঘণ্টা রেখে দিতে হবে।
লোহার কড়াইতে তেল গরম করে এলাচ, দারুচিনি, মাংস, গরম মসলা ঢেলে দিন। মাঝারি আঁচে না ঢেকে রান্না করতে হবে। মাংসের পানি মোটামুটি শুকিয়ে এলে ঢেকে সিদ্ধ হতে দিতে হবে।
সিদ্ধ হয়ে পানি শুকিয়ে আসলে বার বার নেড়ে কষাতে থাকুন। কাটা পেঁয়াজ ও কাঁচামরিচ মেশাতে হবে। আরও কিছুক্ষণ নেড়ে কষাবেন।
শুকনা-মরিচের গুঁড়া দিয়ে নামিয়ে নিন।
বেশি ঝাল খেতে না চাইলে আস্ত শুকনামরিচ ব্যবহার করতে পারেন। এতে ঝাল হবে না তবে মরিচের সুগন্ধ আসবে।
মনে রাখবেন: সয়া সস লবণাক্ত হওয়ার কারণে এখানে কোনো আলাদা লবণ ব্যবহার করা হয়নি। প্রয়োজনে পরে মেশাতে পারেন।