ঘর সাজাতে রঙিন আলো

অন্দরসজ্জায় ঝাড়বাতি বা ‘ল্যাম্প শেইড’য়ের জুড়ি নেই। ঘরের আমেজ বদলে দিতে একটি ঝাড়বাতিই যথেষ্ট। সাধ ও সাধ্যের ঠিকঠাক বনিবনা হলেই মনের মতো করে ঘর সাজানো সম্ভব। 

তৃপ্তি গমেজবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 March 2017, 12:47 PM
Updated : 21 March 2017, 02:55 PM

বাংলাদেশ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের ‘ব্যবহারিক শিল্পকলা’ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ইসমাত জাহান বলেন, “রং আর আলো দুটোই মানুষের মনের উপর প্রভাব রাখে। এই দুইয়ের সংমিশ্রণেই রঙিন আলো সৃষ্টি করে মনোরোম পরিবেশ। যা সারা দিনের পরিশ্রম ভুলিয়ে দিতে যথেষ্ট।”

যাদের সাধ ও সাধ্যের ঠিকঠাক বনিবনা হয় না তাদের জন্য কমখরচে ঘর সাজানোর শখ পূরণ করার কিছু পন্থা দেন ইসমাত জাহান।

আলোকসজ্জার বিষয়ে তিনি বলেন, “সুন্দরভাবে ঘর সাজাতে চাইলে ইচ্ছাশক্তিটা প্রয়োজন। লাখ টাকা দিয়ে ঝাড়বাতি কেনার সামর্থ না থাকলেও কোনো অসুবিধা নেই। রুচিসম্পন্ন ল্যাম্প শেইড, দেওয়াল বাতি বা হাতে তৈরি ঝাড়বাতি কিনেও ঘর সাজানো যায়।”

ঘরে যেন দিনের বেলা আলো ও বাতাস ঠিক মতো ঢুকতে পারে সেদিকে মনযোগ দিতে এবং রাতে নিজের পছন্দ মতো ঠাণ্ডা আলো ব্যবহার করার পরামর্শ দেন তিনি। তীব্র রঙিন আলো বাসায় ব্যবহারের উপযোগী নয়। এতে মাথাব্যথা, চোখব্যথা, বমি বমিভাব এমনকি খিটখিটে মেজাজও হতে পারে বলে জানান ইসমাত জাহান।

শোবার ঘর ছিমছাম হলেই বেশি ভালো লাগে। এখানে বিছানার পাশে এক থেকে দেড় ফুট উচ্চতার বাতি রাখতে পারেন। সাধারণ কাজের জন্য যদি এই বাতি ব্যবহার করেন তবে তাতে হালকা হলুদ রংয়ের বাতি লাগাতে পারেন। আর যদি ঘরের শোভা বাড়াতে চান তবে হালকা নীল, বেগুনি বা সবুজ রংয়ের বাতি ব্যবহার করা যেতে পারে।

পড়ার ঘরের টেবিল ল্যাম্পয়ের আলো খুব বেশি উজ্জ্বল বা অনুজ্জ্বল হওয়া ঠিক নয়। চোখের জন্য আরামদায়ক হয় এমন বাতি ব্যবহার করা উচিত।

বসার ঘরের সজ্জার ক্ষেত্রে আলোর রংয়ের দিকে মনোযোগ দেওয়ার পাশাপাশি বাতির ধরনের দিকেও মনযোগ দেওয়া প্রয়োজন। বসার ঘরে রঙিন আলো দেখতে ভালো লাগে। অতিথি এলে রঙিন আলোয় পরিবেশটা অনেক বেশি জাঁকজমকপূর্ণ মনে হয়।

বারান্দা বা দরজার সামনের অংশ একদম অন্ধকার করে না রেখে যে কোনো রংয়ের আলো ব্যবহার করতে পারেন।

বর্তমানে বাজারে পাওয়া যায় রকমারি নকশার বাতি ও ঢাকনা। কাগজ, প্লাস্টিক, পাট, সুতা, দড়ি, মাটি এমনকি নারিকেলের মালার তৈরি ‘ল্যাম্পশেইড’ ও বাতিদানি কিনতে পাওয়া যায়, এদের মধ্যে কোনোটি ছাতা, কোনোটি বেলুন, কোনোটি লম্বাকৃতির। কোনো কোনোটি আবার ঝাড়বাতির মতো।

কাজেই, বসার ঘরে আলোকসজ্জায় ভিন্নতা আনতে চাইলে এই ধরনের বাতি থেকে নিজের পছন্দ মতো বেছে নিতে পারেন। কাচের ঝাড়বাতি বা তুর্কিধাঁচের বাতির তুলনায় এদের দাম কম হলেও সৌন্দর্য কোনো অংশেই কম নয়। বরং এই ধরনের বাতি ব্যবহারে রুচির পাশাপাশি দেশীয়ভাবও ফুটে ওঠে বলে জানান ইসমাত জাহান।

দরদাম:
বাহারি নকশার বাতিদানি পেতে হলে চলে যেতে পারেন দোয়েল চত্বরে। এখানে পাওয়া যাবে কাগজ, সুতা, দড়ি, মাটি, কাঠ ইত্যাদির তৈরি ঝাড়বাতি।

ছোট ল্যাম্পশেইডের দাম ২শ’ থেকে ৫শ’ টাকা (কাঠের শেইডের দাম একটু বেশি)। সুতার তৈরি তিন-চারটি সেটের ঝাড়বাতির দাম ৫শ’ টাকা থেকে ১ হাজার ২শ’ টাকা। 

কাঠ ও রঙিন কাপড়ের ঝাড়বাতির প্রতিটির দাম ৫শ’ থেকে সাড়ে ৯শ’ টাকা। সেট হিসেবে দাম পড়বে দেড় থেকে আড়াই হাজার টাকা।    

এছাড়াও মাটি, কাগজ ও প্লাস্টিকের তৈরি বাতির দাম দেড়শ থেকে ৩শ’ টাকা। কাগজ ও পাতলা প্লাস্টিকের তৈরি টেবিল ল্যাম্পের দাম দেড়শ থেকে ৮শ’ টাকা।

কেনার সময় দর কষাকষি করে কিনলে লাভবান হবেন।

দোয়েল চত্বর ছাড়াও যে কোনো বড় শপিং মলের ডেকোরেশনের দোকানে খোঁজ করলে পেতে পারেন এই ধরনের ল্যাম্প শেইড। তবে কাঠ, কাপড় বা মাটির তৈরি ঝাড়বাতি কম খরচে কিনতে চাইলে যেতে হবে দোয়েল চত্বরে।

ছবি: আসাদুজ্জামান প্রামানিক