পশুপাখি পালনবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্রচলিত কিছু ভুল ধারণা অ্যাকোয়ারিয়ামে মাছ পালন ঝামেলার মনে হয়। ফলে ক্রমেই আগ্রহ হারায় শৌখিনরা। তবে সব ধারণা ঠিক নয়।
বড় অ্যাকোয়ারিয়ামে খরচ বেশি: আসলে বিষয়টা ঠিক উল্টা। অ্যাকোয়ারিয়াম যত বড় খরচ ততই কম, রক্ষণাবেক্ষণের ঝামেলাও কম। বিশেষ করে অ্যাকোয়ারিয়ামে যদি পরিষ্কার পানির মাছ রাখা হয়। এ ধরনের মাছের প্রাণশক্তি এবং নতুন পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর ক্ষমতা দুটোই বেশি। খরচটা হল মাছের খাবার, এয়ার পাম্প, ফিল্টার এবং পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা। যা দরদাম করে কিনতে পারলে অল্প খরচেই সেরে ফেলা সম্ভব।
প্রতিদিন পানি পরিবর্তন করতে হবে: মাছ ভালো থাকবে ভেবে এই কাজ অনেকেই করেন। তবে এতে মাছের আরও ক্ষতি হয়, মাছ দ্রুত মরে যায়। আসলে পানি কখনও সম্পূর্ণ পাল্টে ফেলা উচিত নয়। সপ্তাহে এক বার অ্যাকোয়ারিয়ামের পানির ১০ থেকে ২০ শতাংশ পরিমাণ পরিবর্তন করতে হবে। আর অ্যাকোয়ারিয়ামে এয়ার পাম্প ও ফিল্টার লাগানো থাকলে এক মাস পর পানির ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ পরিবর্তন করলেও মাছের কোনো সমস্যা হয় না। পুরানো পানিতে থাকা ব্যাকটেরিয়া মাছের টিকে থাকার জন্য জরুরি। তাই সবটুকু পানি একবারে পাল্টে ফেললে মাছ মারা যেতে পারে।
সাকার ফিশ অ্যাকোয়ারিয়াম পরিষ্কার রাখে: অ্যাকোয়ারিয়াম পরিষ্কার রাখার জন্য সাকার ফিশ বা ক্যাটফিশের বেশ পরিচিতি রয়েছে। তবে এই মাছ শিকারি নয়, এমনকি অন্যান্য মাছের বর্জ্য বা মলও খায় না। শুধু ক্যাটফিশ নয়, যে কোনো মাছের জন্যই বিষয়টি অস্বাস্থ্যকর। আর অ্যাকোয়ারিয়ামে শ্যাওলা জমলে তা ঘষে পরিষ্কার করার কোনো বিকল্প নেই। কোনো মাছই অ্যাকোয়ারিয়াম পরিষ্কার রাখতে পারে না।
শুরু করতে হবে ছোট অ্যাকোয়ারিয়াম দিয়ে: ধারণাটি ভুল। প্রথমবার মাছ পালনকারীদের কখনও ছোট অ্যাকোয়ারিয়াম কেনা উচিত নয়। কারণ রক্ষণাবেক্ষণ করা অনেক কঠিন। আর বড় অ্যাকোয়ারিয়ামে মাছের মৃত্যুহারও কম হয়। অপরদিকে কাঁচের জারে মাছ রাখা ঠিক নয়, বিশেষভাবে গোল্ডফিশ। কারণ জার বা বৌলে রাখলে মাছের সাঁতার কাটার জায়গা অনেক কম থাকে, ফলে দ্রুত মারা যায়।
বেশি মাছ রাখা ক্ষতিকর: বেঁচে থাকার জন্য মাছের চাই পর্যাপ্ত অক্সিজেন, অন্যথায় তারা অ্যাকোয়ারিয়ামে দম আটকে মারা যাবে। পাশাপাশি নিজেদের জৈববর্জ্যের বিষয়ক্রিয়া আক্রান্ত হওয়ার আগেই মাছের বর্জ্য দ্রবীভূত হয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা থাকা চাই। একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পানির এই দুটি কাজ করার ক্ষমতা একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্তই থাকে। তাই পানি পরিবর্তন করা আদর্শ সময় নির্ণয় করতে হবে এবং নিয়মিত ওই সময়ে পানি পরিবর্তন করতে হবে। ব্যস, যথেষ্ট।
আসলে অ্যাকোয়ারিয়ামে মাছ পালন বেশ সহজ। প্রতিমাসে একদুবার পানি পরিবর্তন করাই যথেষ্ট। এভাবে মাছ ভালো এবং স্বাস্থ্যবান থাকে। পানির অবস্থা ভালো থাকলেই মাছের জন্য যথেষ্ঠ।