ঘরের শোভা বাড়াতে আয়না

আয়না কেবল প্রয়োজনের জন্যই নয় ঘরের সৌন্দর্য বাড়াতেও সাহায্য করে।

তৃপ্তি গমেজবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Feb 2017, 11:11 AM
Updated : 15 Feb 2017, 11:13 AM

বাংলাদেশ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের ‘ব্যবহারিক শিল্পকলা’ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ইসমাত জাহান বলেন, “আয়না শুধু প্রয়োজনেই ব্যবহৃত হয় না এটি ঘরে সৌন্দর্য বাড়াতেও ব্যবহার করা যায়। আয়না আলো প্রতিফলিত করে বলে এটি ব্যবহারে ঘর বড় দেখায়। উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করে আয়না লাগালে তা অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।”

যেখানে সেখানে আয়না লাগানো হলে ঘরের কাঠামোগত পরিবেশ বিশৃঙ্খল মনে হতে পারে বলে জানান, ইসমাত জাহান।

শোবার ঘরে ঘুম থেকে উঠেই চোখে পড়বে এমন স্থানে কখনও আয়না লাগানো ঠিক নয়, কারণ ঘুম থেকে ওঠার পরে মস্তিষ্ক সচল হতে খানিকটা সময় নেয়। এই সময় হঠাৎ করে নিজের চেহারা দেখেও অস্বস্তি হতে পারে।

তাই বিছানা থেকে খানিকটা দূরে অথবা বিছানার যে পাশে মাথা দেওয়া হয় সেই স্থানের উপর বরাবর আয়না লাগাতে পারেন। একান্তই যদি বিছানা বরাবর ড্রেসিং টেবিল বা আয়না রাখতে হয় তাহলে তা রাতে শোবার আগে পর্দা দিয়ে ঢাকার পরামর্শ দেন ইসমাত জাহান।

“পড়ার ঘরে চাইলে আয়না ব্যবহার করতে পারেন। আয়নাতে আলো প্রতিফলিত হয়ে ঘর বড় দেখায়। ফলে পড়ার ঘরে যথেষ্ট আলো পাওয়া যায়। তাছাড়া যে কোনো ছোট ঘরেও দেয়ালের একপাশে আয়না ব্যবহার করে ঘরকে আনুপাতিক হারে বড় দেখাতে পারেন।” বললেন এই অধ্যাপক।

তিনি আরও পরামর্শ দেন, “আয়নায় নিজেকে দেখতে সবাই পছন্দ করেন। বসার ঘরে যেহেতু অতিথিদের সমাগম বেশি হয় তাই সেখানে সাজানোর জন্য আয়না ব্যবহার করতে পারেন। সেক্ষেত্রে এমন একটি দেওয়াকে বেছে নেওয়া প্রয়োজন যা খুব সহজেই অতিথিদের চোখে পড়ে। বসার ঘরে টুকরা দেওয়াল অর্থাৎ পিলার থাকলে সেখানেও সুবিধাজনক স্থান বেছে নিয়ে আয়না ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে বসার ঘরকে খানিকটা বড় দেখাবে, অতিথিরাও আনন্দ পাবে।”

বর্তমানে নানা আকৃতি, নকশা ও রংয়ের আয়না পাওয়া যায় বাজারে। আভিজাত্য ফুটিয়ে তুলতে চাইলে ঘরের বাইরের দরজার পাশে অথবা সিঁড়ির সামনে নকশাদার আয়না লাগাতে পারেন বলে জানান ইসমাত জাহান।

বাজার ঘুরে কাঠ, কাগজ, কাপড়, বাঁশ, বেত, সুতা, চুমকি ইত্যাদির কাজ করা ফ্রেমের আয়না দেখা যায়। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন আকৃতি যেমন- গোল, লম্বা, ডিম, মাছ, ফুল, পাতা ইত্যাদির আকারের আয়না। এর মধ্যে কোনোটি হাতে সুতার কাজ করা বা খোদাই করা আবার কোনটি পাথর, চুমকি, পুঁতি ইত্যাদি লাগানো।

দরদাম: সাধারণ আকারের কাগজ, কাপড় ও সুতার কাজ করা আয়নার দাম ৫শ’ টাকা এবং বড় আয়নার দাম ২ হাজার ৫শ’ টাকা থেকে শুরু।

বাঁশ ও বেতের ফ্রেমের মাঝারি আকারের আয়না পাওয়া যাবে ৮শ’ থেকে ১৫শ’ টাকার মধ্যে।

কাঠের তৈরি ফ্রেমের আয়নার দাম তুলনামূলক ভাবে বেশি। এই ধরনের ফ্রেমের আয়নার মাপ ও খোদাইয়ের কাজ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দামও বৃদ্ধি পাবে। কাজ করা ছোট আকারের আয়নার দাম ৮শ’ টাকা থেকে শুরু। বাঁশ ও কাঠের কাজ করা আয়নার দাম সাড়ে ১২শ’ টাকা। মাঝারি আকারের আয়নার দাম ২ হাজার ৫শ’ টাকা থেকে শুরু।

এছাড়াও বিভিন্ন আকৃতি যেমন- মাছ, পাতা, ফুল ইত্যাদি আয়নার দাম ১ হাজার টাকা থেকে শুরু, আকার ও মাপের পরিবর্তনের জন্য দামের পার্থক্য ঘটে।

রাজধানীর দোয়েল চত্বরে ১২০ টাকা থেকে শুরু ২০ হাজার টাকারও আয়না পাওয়া যায় বলে জানান সেখানকার এক আয়না বিক্রেতা রাজু। আয়নার মান, আকার ও তার নকশাভেদে দামের ভিন্ন হয়।

এছাড়াও নিজের পছন্দ মতো আয়না বানাতে চাইলে যে কোনো কাঠ অথবা আসবাবপত্রের দোকানে যোগাযোগ করতে পারেন।