সাজুন ভালোবাসার টানে

ভালোবাসার আবার দিন কি! এমন কথা মনে হতেই পারে। তবে পুরানো ভালোবাসাকে নতুন করে ঝালাই করে নিতে যদি একটি দিন বেছে নেওয়া হয় তবে মন্দ কি!

ইরা ডি. কস্তাবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Feb 2017, 11:06 AM
Updated : 12 Feb 2017, 11:06 AM

বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উদযাপিত হয় ১৪ ফেব্রুয়ারি। বাংলা পঞ্জিকা হিসেবে বসন্তের দ্বিতীয় দিন। তাই বসন্তের সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক বেশ পুরানো।

ভালোবাসার দিনে শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, জিন্স-টপস, স্কার্ট-টপস, ফতুয়া যে কোনো পোশাক বেছে নিতে পারেন নিজের পছন্দ অনুযায়ী। চাইলে হালফ্যাশনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গাউন, স্কার্টের উপর লম্বা ফতুয়া বা ম্যাক্সি ড্রেসও পরতে পারেন। পোশাক যাই হোক না কেনো সাজতে হবে পোশাকের রংয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে। তাছাড়া দিনের এবং রাতের সাজের পার্থক্যও মাথায় রাখতে হবে।

ভালোবাসার দিনের রং বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রথমেই মাথায় আসে লাল রংয়ের কথা। তবে নীলও বেছে নেওয়া যায় ভালোবাসার রং হিসেবে।

এই দিনের পোশাক বাছাই সম্পর্কে পরামর্শ দেন দেশীয় ফ্যাশন ঘর ‘বিবিয়ানা’র কর্ণধার লিপি খন্দকার।

তিনি বলেন, “ভালোবাসার রং বাছাইয়ে কোনো বাঁধাধরা নিয়ম নেই। ভালোবাসার রং হিসেবে লাল সবার মাথায় আসলেও নীলও ভালোবাসার রং। তাছাড়া প্রিয়জনের পছন্দের রংয়ের পোশাকও বেছে নেওয়া যেতে পারে এদিনের পোশাকে।”

ফাল্গুনের দ্বিতীয় দিন ভালোবাসা দিবস, তাই লিপি খন্দকার মনে করেন এদিনের পোশাকে বসন্তের রংগুলোও স্থান করে নিতে পারে।

“বসন্তের দ্বিতীয় দিনেই আমরা ভালোবাসা দিবস পালন করে থাকি তাই হলুদ, সবুজ, লাল, কমলা, টিয়া ইত্যাদি রংগুলোও বেশ মানিয়ে যাবে এই উৎসবে।” এমনটাই বলেন তিনি।

পহেলা ফাল্গুনে মেয়েদের পছন্দের তালিকার শীর্ষে থাকে শাড়ি। আর সেই সঙ্গে দেশি সাজ। আর ভ্যালেন্টাইনস ডে যেহেতু পাশ্চাত্য সংস্কৃতির একটি অংশ তাই অনেকেই এদিনে ‘ওয়েস্টার্ন’ পোশাক পরতে পছন্দ করেন। তবে এক্ষেত্রে লিপি খন্দকার মনে করেন ফাল্গুনের ধারায় ভালোবাসা দিবসেও দেশি সাজে নিজেকে উপস্থান করা যেতে পারে।

ভ্যালেন্টাইন পাশ্চাত্য সংস্কৃতির একটি অংশ। তাই অনেকেই এদিনে ‘ওয়েস্টার্ন’ পোশাক পরতে পছন্দ করেন। ছবি সৌজন্যে: বিশ্ব রঙ।

তিনি বলেন, “ভালোবাসার মানুষটির সামনে এ দিনেও নিজেকে ‘ট্রেডিশনাল লুক’-এ উপস্থাপন করা যেতেই পারে। আমাদের দেশের সব বয়সি মেয়েদের শাড়িতেই সব থেকে সুন্দর মানায়। তবে শাড়ি পরতে না চাইলে পছন্দ মতো যে কোনো পোশাকই বেছে নেওয়া যেতে পারে।”

পোশাক বাছাইয়ের পর আসে অনুষঙ্গ বাছাই এবং সাজগোজ। এ বিষয়ে পরামর্শ দেন ‘রেড বিউটি পার্লার’য়ের কর্ণধার আফরোজা পারভিন।

তিনি বলেন, “পহেলা ফাল্গুনে দেশীয় সাজের পর ১৪ ফেব্রুয়ারি কিছুটা ভিন্নতা আনা যেতেই পারে। দুটি দিনে নিজেকে চাইলেই দুই ধরনের ‘লুকে’ উপস্থাপন করা যেতে পারে।”

“ভালোবাসা দিবসে চোখের সাজ হওয়া চাই মনকাড়া। স্মোকি আই মেইকআপ হতে পারে এদিনের জন্য আদর্শ। তবে দিনের মেইকআপ হবে হালকা আর ন্যাচারাল। আর রাতে বের হতে চাইলে জমকালো সাজ মানাবে পরিবেশ হিসাবে।” পরামর্শ দিলেন আফরোজা পারভিন।

মেইকআপের আগে ত্বকের কিছু বাড়তি যত্ন নিতে হবে। কারণ সুন্দর মেইকআপের জন্য সুন্দর ত্বকই বড় শর্ত।

ভালো কোনো স্ক্রাবার দিয়ে প্রথমেই স্ক্রাবিং করে নিতে হবে। এতে ত্বকে জমে থাকা ময়লা, ব্ল্যাকহেডস ও মৃত কোষ পরিষ্কার হয়ে যাবে এবং মেইকআপ সুন্দরভাবে বসবে।

চাইলে ঘরেই স্ক্রাব বানিয়ে নেওয়া যেতে পারে। চালের গুঁড়ার সঙ্গে মধু ও খানিকটা পানি বা গোলাপ জল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিলেই মিশ্রণটি স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। এছাড়া মধু, লেবু ও চিনি মিশিয়েও স্ক্রাব তৈরি করে নেওয়া যাবে। এরপর মুখ ভালোভাবে মুছে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিতে হবে। দিনের বেলা বের হলে অবশ্যই ভালো মানের সানস্ক্রিন লাগাতে হবে।

ভ্যালেন্টাইনেও পোশাকে বসন্তের রংগুলোও স্থান করে নিতে পারে। ছবি সৌজন্যে: রঙ বাংলাদেশ।

মেইকআপ কতটা এবং কীভাবে করবেন তা নির্ভর করবে নিজস্ব পছন্দের উপর। তবে সব সময় নিজের সঙ্গে মানানসইভাবে মেইকআপ করা উচিত।

পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে ব্যাগ ও স্যান্ডেল বাছাই করতে হবে। যদি বাইরে হাঁটাহাঁটি বেশি হয় তাহলে অবশ্যই আরামদায়ক স্যান্ডেল বেছে নিতে হবে। তাছাড়া কানের দুল, গলার মালা, চুরি বা বালা ইত্যাদিও পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে পরতে হবে।

সব শেষে বের হওয়ার আগে মন মাতানো সুগন্ধি ছিটিয়ে নিতে ভুললে চলবে না।