সাজে বসন্তের রং

বসন্তের শুরুতে প্রকৃতির মতো মানুষের মনেও দোলা দেয় ফাল্গুনের হাওয়া। আর তাই তো সবাই বাসন্তী রংয়ে সেজে নেমে পরে বসন্তকে স্বাগত জানাতে।

ইরা ডি. কস্তাবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Feb 2017, 01:34 PM
Updated : 7 Feb 2017, 01:34 PM

বসন্তের প্রথম দিন নিয়ে সবার মধ্যেই থাকে আগ্রহ। আর বসন্তের আয়োজনে মধ্যমণি হয়ে থাকে ‘একুশে বইমেলা’। তাই বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলা একাডেমির আশপাশেই তরুণ-তরুণী এবং নানান বয়সিদের ভিড় জমে বেশি।

ফাল্গুন মানেই বাসন্তী রংয়ের মেলা। তবে এ যুগে বসন্ত বরণে লাল, সবুজ, কমলা, মেরুন ইত্যাদি রংও বেশ চোখে পরে।

ফাল্গুনের পোশাক হিসেবে শাড়িই বেশি জনপ্রিয়। হলুদ-লাল পাড়ের শাড়ি, হাত ভর্তি চুড়ি আর মাথায় গাঁদাফুল—   সব মিলিয়ে পূর্ণতা পায় বসন্তের সাজ। তবে এখন অনেকেই শাড়ি ছাড়াও সালোয়ার-কামিজ বা ফতুয়া পরেন।

বসন্ত বরণ উপলক্ষ্যে ইতোমধ্যে দেশীয় ফ্যাশন ঘরগুলো সেজেছে নানান রংয়ে।

রঙ বাংলাদেশ।

‘বিশ্ব রঙ’ ফ্যাশন ঘরের কর্ণধার বিপ্লব সাহা বলেন, “বিশ্বরঙে বার মাসই যেন ফাল্গুন লেগে থাকে। বসন্তের রং হিসেবে ফাল্গুনের শাড়িতে বাসন্তী ও হলুদ রংয়ের আধিপত্য বেশি। নতুন পাতার রং সবুজও স্থান করে নিয়েছে শাড়ির নকশায়। এর পাশাপাশি লাল-কমলা রংয়ের ও ব্যবহার হয়েছে। সালোয়ার-কামিজ, পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্ট, শিশুদের পোশাকের রং ব্যবহারেও বসন্তকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।”

“বসন্তে যেহেতু প্রকৃতিতে ফুলের ছড়াছড়ি, তাই নকশার ক্ষেত্রেও ফুল প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদানকে মোটিফ হিসাবে ব্যাবহার করা হয়েছে। এক কথায় পোশাকের নকশায় প্রকৃতিকে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।” এমনটাই জানান বিপ্লব সাহা।

`বিশ্ব রঙ’ ছাড়াও প্রায় প্রতিটি ফ্যাশন ঘরই এরমধ্যে বসন্ত বরণের পসরা সাজিয়ে বসেছে।

শাড়ির সঙ্গে এবার ব্লাউজে কিছুটা ভিন্নতা আনা যেতে পারে। হালকা প্রিন্ট বা এক রঙা শাড়ির সঙ্গে প্রিন্টের ব্লাউজ বেশ মানিয়ে যাবে।

সুন্দর পোশাকের সঙ্গে নিজেকেও সুন্দরভাবে সাজিয়ে নেওয়া জরুরি। এ বিষয়ে পরামর্শ দেন ‘রেড’ বিউটি পার্লারের কর্ণধার আফরোজা পারভিন।

কে ক্র্যাফ্ট।

তিনি বলেন, “শাড়ি, কামিজ বা ফতুয়া যেই পোশাকই বেছে নেন না কেনো বসন্ত বরণে পরুন দেশীয় অলঙ্কার। কাপড়ের তৈরি মালা বা চুরি, মাটির গয়না বা ধাতুর তৈরি গয়না বসন্তের সাজে আনবে পূর্ণতা।”

বসন্তে প্রকৃতিতে রং বুলিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি একটি স্নিগ্ধ আমেজও তৈরি করে। তাই এদিনের সাজেও থাকা চাই সেই আভা।

আফরোজা পারভিন বলেন, “বসন্তে ভারী মেইকআপ না দিয়ে বরং নিজের স্বাভাবিক রূপকেই রঙিন করে ফুটিয়ে তুলুন। চোখে গাঢ় করে কাজলের রেখা টেনে ঠোঁটে দিন লাল লিপস্টিক। কপালে টিপ দিতে ভুললে চলবে না। আর হাতে পরুন কাচের চুরি।”

তবে মেইকআপ ঠিক কতটুকু বা কীভাবে করবেন তা ব্যক্তিগত পছন্দ। কিন্তু দিনের সাজে কখনও ভারী মেইকআপ মানায় না। তাই ফাউন্ডেশন বা বেইজ মেইকআপ স্বাভাবিক রাখাই ভালো। রাতের সাজে কিছুটা ভারী মেইকআপ মানিয়ে যায়। আর সেক্ষেত্রে রাতের সাজে চাইলে চোখে সিমারি আইশ্যাডোও বেছে নেওয়া যেতে পারে।

আফরোজা পারভিন বলেন, “বসন্তের সাজে চুলে ফুল না দিলে কি চলে! তাই খোঁপা বা বেণি করে চুলে গাদা ফুলের মালা পেঁচিয়ে নিন। চুল ছাড়া রাখতে চাইলে এক পাশে গুঁজে নিতে পারেন গোলাপ বা জারবেরা ফুল।”

বিশ্বরঙ।

বসন্ত বরণে সারাদিনের জন্য বের হলে হাই হিল এড়িয়ে আরামদায়ক স্যান্ডেল পরুন। অল্প উঁচু বা ফ্ল্যাট স্যান্ডেল পরলেই হাঁটতে সুবিধা হবে।

বেরোনোর আগে প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস সঙ্গে নিয়ে নিন। এক বোতল পানি, ছাতা, টিস্যু পেপার সঙ্গে রাখা চাই। পাশাপাশি লিপস্টিক, কম্প্যাক্ট পাউডার আর চিরুনিও গুছিয়ে নিন যেন প্রয়োজনে ব্যবহার করা যায়। সঙ্গে রাখা চাই ছোট একটি আয়নাও।

ঘর থেকে বেরোনোর আগে ছিটিয়ে নিন সুগন্ধি। তারপর বেড়িয়ে পরুন প্রিয় মানুষদের সঙ্গে বসন্ত বরণে।