ত্বকের যত্নে খাবার পানীয়

চা-কফি যদি নিমিষেই ক্লান্তি দূর করে মন চাঙ্গা করে তুলতে পারে তবে এগুলো চুল আর ত্বকে মাখলে কেমন হয় তা কখনও ভেবে দেখেছেন কি!

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Dec 2016, 08:19 AM
Updated : 5 Dec 2016, 08:23 AM

এ সম্পর্কেই জানিয়েছে রূপচর্চাবিষয়ক এক ওয়েবসাইট।

কফি: ভারতীয় রূপবিশেষজ্ঞ নিশি করমচাঁদনি বলেন, “চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে কফি বেশ উপকারী। ভালো অসংখ্য প্রসাধনিতে কফি ব্যবহার করা হয়। চোখের নিচে রক্ত জমার আশঙ্কাও কমায় এটি।”

এছাড়াও বয়সের ছাপ দূর করতেও কফি বেশ কার্যকর। কফিতে থাকা ‘ফাইটোস্টেরল’ ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং রোদে পোড়া থেকে রক্ষা করে। শরীর ও মুখের জন্য স্ক্রাবার হিসেবেও কফি ব্যবহার করা যেতে পারে।

চুলের যত্নেও কাজে লাগে কফি। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পরিবেশ দূষণজনিত ক্ষতি থেকে চুল রক্ষা করে। ক্ষতিগ্রস্ত চুল মেরামত, চুলের আগাল ভাঙা রোধ, চুলের বৃদ্ধি বাড়ানো এবং চুল ঘন করতে কফি উপকারী। চুলের প্যাক হিসেবেও কফি ব্যবহার করা যায়। অনেকে বিউটি পার্লারে মেহেদিও অন্যান্য উপকরণের সঙ্গে কফি মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করা হয়।

ত্বকের যত্নে গ্রিন টি: ওজন নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ত্বকের যত্নেও ভূমিকা রাখে গ্রিন টি। এতে থাকা ইজিসিজি (এপিগ্যালোকাটেচিন গালেট) নামক উপাদানটি ত্বকের মৃতকোষগুলো কর্মক্ষম করে তোলে। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকেও এটি রক্ষা করে, দেয় উজ্জ্বল ত্বক।

করমচাঁদনি বলেন, “স্কিন টোনার হিসেবে ব্যবহার করা হয় গ্রিন টি, বিশেষত তৈলাক্ত ত্বকে। গরম পানিতে গ্রিন টি’য়ের পাতা আধা ঘণ্টা ডুবিয়ে রাখতে হবে। পরে ওই পানি ঠাণ্ডা করে তা টোনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন।”

ভেজা গ্রিন টি-ব্যাগ চোখের উপর রাখলে চোখে আরাম পাবেন, কমবে চোখের ফোলাভাব।

ত্বক বিশেষজ্ঞ নেহা মাতাঙ্গ বলেন, “এক্সফোলিয়েটর হিসেবেও কাজ করে গ্রিন টি। একে ফেইস মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করলে ত্বক থেকে বিষাক্ত উপাদান দূর হবে প্রাকৃতিক উপায়ে, ফলে ত্বক হবে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল।”

চুলের যত্নে গ্রিন টি: চুল ধোয়ায় গ্রিন টি ব্যবহার করলে চুলে আসবে বাড়তি ঝলমলে ভাব। ব্যবহৃত গ্রিন টি ফুটন্ত পানিতে সিদ্ধ করতে হবে। তারপর এই পানি ঠাণ্ডা করে তাততে লেবু মেশাতে হবে। শ্যাম্পু করার পর এই পানি দিয়ে চুল ধুযে নিতে হবে।

মাতাঙ্গ বলেন, “খুশকি দূর করতেও কার্যকর গ্রিন টি। চুলের বৃদ্ধি বাড়ায় ও নরম করে। ভিটামিন সি, ভিটামিন ই ও প্যানথেনল থাকে গ্রিন টি’য়ে, যা সাধারণত হেয়ার কন্ডিশনার তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।”

ক্যামোমাইল টি: চুলের কিছু অংশ সোনালি রং করতে এটি ব্যবহার করতে পারেন। দুই কাপ গরম পানিতে দুটি কামোমাইল টি ব্যাগ পাঁচ থেকে ১০ মিনিট ডুবিয়ে রাখতে হবে। পরে এতে দুই চা-চামচ লেবুর রস মিশিয়ে শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহারের পর সবশেষে এই পানিতে চুল ধুয়ে নিতে হবে। এতে চুলের প্রাকৃতিক সোনালি কিংবা লালচে রং বেরিয়ে আসবে।

ব্ল্যাক টি: ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ার জন্য দায়ি মুক্তমৌলের সঙ্গে লড়াই করে এটি। চোখের নিচের ফোলাভার দূর করতে দুটি ভেজা ব্ল্যাক টি ব্যাগ চোখের উপর ধরে রাখতে দ্রুত উপকার মিলবে। এছাড়া ব্ল্যাক টি দিয়ে বানানো চা ঠাণ্ডা করে মুখে ছিটা দিলে মুখ সতেজ অনুভূত হবে।

আদা চা: আদার প্রদাহবিরোধী উপাদান ব্রণের আশঙ্কা কমায়। ত্বক রাখে পরিষ্কার, কাটায় ত্বকের চর্বিও। চুলের জন্যও এটি উপকারী। মাথার ত্বকে রক্তপ্রবাহ বাড়ায়, খুশকি দূর করতে সাহায্য করে। সপ্তাহে একদিন আদা চা দিয়ে চুল পরিষ্কার করলে উপকারগুলো পেতে পারেন।

ছবি: দীপ্ত।