আর সেই পূর্ণতার গল্পই শোনাচ্ছেন সাংবাদিক পরিব্রাজক মুস্তাফিজ মামুন।
পাহাড়ি কাশফুলে বিকালের মিষ্টি রোদ্দুর, ঠিক নিচেই ছোট্ট একটি গ্রাম। কংলাক পাহাড়ের উপরে দাঁড়িয়ে ছবির মতোই লাগছিল গ্রামটিকে।
কংলাক ঘুরতে ঘুরতে ততক্ষণে বিকেলও গড়িয়েছে। সঙ্গের পথপ্রদর্শক অনেক দিনের বন্ধু সুপর্ণ দাদাকে বললাম যেতে চাই, ছবির মতো ওই গ্রামে।
এত সুন্দর যে গ্রামটির রূপে মুগ্ধ হয়ে তার কাছে যাওয়ার জন্য ছুটলাম।
এতক্ষণে তো তার নামটাই জানা হল না। দাদাকে জিজ্ঞেস করে জানলাম, নাম তার পাইলিং পাড়া। ত্রিপুরা আদিবাসী সম্প্রদায়ের বসবাস এ গ্রামে।
কংলাকপাড়া থেকে নিচে নামতে দেখা হল আদিবাসী এক নারী গোসল থেকে ফিরছিলেন ছড়া থেকে। পিঠে ঝুড়ি ভর্তি ধোয়া কাপড় আর পানির বোতল।
ওই যে নিচের পাইলিং পাড়া, তারও নিচে কংলাক ঝরনা এলাকার মানুষের পানির চাহিদা মেটায়।
নিচে নামতে নামতে আরও অনেক আদিবাসী নারী-পুরুষকে ফিরতে দেখলাম সেই ছড়া থেকে।
নিচে নামতে নামতে পাইলিং পাড়ার বেশ কিছু বার্ডস-আই ভিউ তুললাম। চারপাশে ঘন সবুজ পাহাড়ের দেয়াল। তার নিচে ছোট্ট একটি পাহাড় চূড়ায় ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের গ্রাম পাইলিং পাড়া। দশ-বারোটি বাড়ি নিয়ে এ গ্রামের বাসিন্দাদের প্রধান কাজ জুমচাষ।
পাহাড়ে নিচে নামার কষ্ট কম। উপর থেকে গ্রামটিতে তাই পৌঁছাই সহজেই। শেষ বিকেলের আলো তখনও গ্রামটিকে রাঙিয়ে রেখেছে।
সামনে আরেকটি বাড়ির সামনে শুকাতে দেওয়া জুমের আদা তোলা হচ্ছিল।
পাইলিং পাড়ায় ঘুরতে ঘুরতে একেবারে শেষ বাড়িটির সামনে এসে পৌঁছে গেছি। বাড়ির সামনের মাচানে বসে জুমের চাল ঝারছিলেন এক নারী। পাহাড়ে এলেই জুমের চালের ভাত খেতে চেষ্টা করি। সুপর্ণ দা সেটা জানেন বলেই হয়ত কিছু চাল কেনার ব্যবস্থা করে দিলেন।
ততক্ষণে সূর্য ডুবে গেছে। জুমের চালের প্যাকেট নিয়ে হাঁটা শুরু করেছি কংলাকের দিকে। যত সহজে এই গ্রামে নেমেছিলাম, ওঠা ততটাই কঠিন।
পাহাড়ি পথটা এখানে একেবারেই খাড়া। দুপা চলার পর আর যেন চলছে না। বিশ্রাম নিয়ে নিয়ে উঠছি উপরের দিকে। অন্ধকার দ্রুত চারপাশ ঘিরে ফেলেছে।
কীভাবে যাবেন
পাইলিং পাড়ায় যেতে হবে সাজেক থেকে। রাঙামাটি জেলায় সাজেক হলেও যাতায়াত সুবিধা খাগড়াছড়ি হয়ে।
ঢাকা থেকে বেশ কয়েকটি পরিবহন খাগড়াছড়ি যায়। তারপর সেখান থেকে চাঁন্দের গাড়ি।
পাইলিংপাড়ায় যেতে গাড়ি নিয়ে পৌঁছা যাবে কংলাক পাহাড়ের নিচ পর্যন্ত। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে কংলাক গ্রামে উঠে আবার নিচে হেঁটে নামতে হবে।
কোথায় থাকবেন
সাজেকে বেশ কয়েকটি থাকার মতো হোটেল রয়েছে। আগেভাগে বুকিং করে গেলে ভালো।