ঘর স্বাস্থ্যকর রাখার ১২ উপায়

শরীরের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি ঘরেরও যত্ন নেওয়া উচিত। কেননা ঘরের পরিবেশ স্বাস্থ্যকর না থাকলে তা থেকে ছড়াতে পারে অনেক রোগ জীবাণু।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Nov 2016, 10:46 AM
Updated : 13 Nov 2016, 10:46 AM

টিভি দেখা কিংবা খাবার খাওয়া, শুয়ে-বসে থাকতে নিজের ঘরের তুলনা হয়না। সেই ঘর স্বাস্থ্যকর রাখার জন্য জীবনযাপন-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন অবলম্বনে এখানে কিছু পন্থা দেওয়া হল।

জবুথবু হয়ে টেলিভিশন দেখা: সারাদিন কাজ শেষে অলস ভঙ্গীতে টেলিভিশনে পছন্দের অনুষ্ঠান দেখা বেশ আরামদায়ক বা লোভনীয় মনে হতে পারে। তবে এটি প্রকৃত অর্থে আপনার জন্য ক্ষতিকারক।

জবুথবু ভাবে বসে থাকার ফলে মেরুদণ্ডের উপর অতিরিক্ত চাপ ফেলে। যা পরে পিঠ ব্যথা হতে পারে। তাই বসার সময় পিঠের নিচে একটি ছোট বালিশ অথবা পা প্রসারিত করে বসার জন্য বিছানা কিংবা চেয়ারের সামনে আরেকটি ছোট চৌকি রাখুন। এতে পিঠে চাপ পড়বে কম ও ব্যথা অনুভূত হবে না।

প্রশান্ত পরিবেশ: আপনার ঘর আপনার ব্যক্তিগত স্থান। তাই এটি অবশ্যই প্রশান্তিকর হওয়া উচিত।

আপনার পছন্দের কোনো ছবি যা দেখলে আনন্দ অনুভব করেন, এমন কোনো ছবি ঘরের দেওয়ালে ঝোলাতে পারেন। অথবা হাতের তৈরি কোনো সামগ্রী বা ভ্রমণ থেকে কেনা কোনো সামগ্রী ইত্যাদিও স্থান পেতে আপনার ঘরে।

বিশেষজ্ঞদের মতে এই ধরনের সামগ্রী দিয়ে ঘর সাজানো হলে তা প্রশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে ও মনকে শান্ত রাখে।  

ঘরের আলোকসজ্জা: ঘরে অতিরিক্ত আলোকসজ্জা মাথা ব্যথার সৃষ্টি করে এবং কম আলো দৈনন্দিন কাজে বাঁধা সৃষ্টি করে।

তাই ঘরে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা উচিত। পাশাপাশি ঘরে প্রাকৃতিক আলো প্রবেশের দিকেও মনযোগ দিতে হবে। সূর্যের আলো কেবল ঘর আলোকিত করে না এটি বোনাস হিসেবে বায়ু চলাচলেও সাহায্য করে।

কার্পেটের ব্যবহার: আভিজাত্যের ভাব ফুটিয়ে তুললেও জীবাণু ও পোকামাকড়ের আখড়া হতে পারে কার্পেট। তাই সবসময় এটি পরিষ্কার রাখা উচিত। প্রতিদিন ঝাড়া মোছার করতেই হবে।

বিন ব্যাগ ও আরাম কেদারা: বিন ব্যাগ এবং আরাম কেদারা দেখতে বেশ আরামদায়ক মনে হয়। তবে মনে রাখা উচিত যে, এতে বেশি সময় কাটালে পিঠব্যথা হতে পারে।

তাই এই ধরনের চেয়ারে বা বসার জায়গায় সময় কাটানোর বিষয়ে একটু সচেতন হওয়া উচিত। নির্দিষ্ট বিরতি দিয়ে এগুলো ব্যবহার করতে হয়।

এয়ার কন্ডিশনারের ব্যবহার করলে: যেসব ঘরে এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করা হয় সেখানে একদিন পরপর প্রাকৃতিক বায়ু প্রবেশের ব্যবস্থা করা ভালো। এতে ঘরের স্বাভাবিক আর্দ্রতা বজায় থাকে ও শোবার ঘরের স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ বজায় থাকে।

বিছানায় বৈদ্যুতিক যন্ত্র না রাখা: শোবার ঘর ঘুমের জন্যই বেশি পরিচিত। তাই শোবার আগে বিছানায় বৈদ্যুতিক যন্ত্র যেমন- স্মার্ট ফোন, ল্যাপটপ ইত্যাদি না রাখাই ভালো। এতে ঘুমে ব্যঘাত ঘটে।

গবেষণা অনুযায়ী এটি অবসাদের কারণ হতে পারে। তাই সকল বৈদ্যুতিক যন্ত্র বিছানা থেকে দূরে রাখাই বেশি ভালো। 

পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন বাথরুম: খুব তাড়াতাড়ি স্যাঁতসেঁতে হয়ে যায় তাই গোসলখানা নিয়মিত পরিষ্কার রাখা উচিত। স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ দ্রুত জীবাণু বিস্তারে সহায়তা করে। তাই বাথরুমকে শুকনা রাখার জন্য ব্যবহারের পর মপ দিয়ে পানি মুছে ফেলা উচিত। আর বাতাস চলাচলের জন্য ছোট ‘ইক্সস্ট ফ্যান’ লাগাতে পারেন।

বাথরুমের দুর্ঘটনা এড়াতে: পিছলে পড়ার মতো দুর্ঘটনা প্রায়ই শোনা যায়, এতে মারাত্মক দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। এরকম দুর্ঘটনা এড়াতে বাথরুমের বাইরে রাবারের ম্যাট ব্যবহার করুন। 

ওষুধ সংরক্ষণ: অনেকেই বাথরুমে ওষুধ রাখেন, এটি মোটেও ঠিক নয়। বাথরুমের স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ ওষুধের কার্যক্ষমতা কমিয়ে ফেলে।

রান্নাঘরের যত্ন: বাসার সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় রান্নাঘর। তাই এটি পরিচ্ছন্ন রাখা দরকার। রান্নাঘরের কাটা ও ধোয়া মোছার জায়গা এবং খাবার সংরক্ষণের জায়গা ব্যবহারের পর পরিষ্কার রাখা উচিত।

কারণ এইসব স্থানে খাবার সংক্রান্ত জীবাণু দ্রুত বংশবিস্তার করে। ফলে কেবল খাবারই নষ্ট হয় না পাশাপাশি রান্নাঘরও নোংরা হয়।    

রান্নাঘরের দুর্ঘটনা এড়াতে: রান্নাঘরের কাজ শেষ করার পর এটি মপ দিয়ে মুছে যতটা সম্ভব শুষ্ক রাখুন। এতে রান্না ঘরে পিছলে পড়ার দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে।