বড়কর্তার মেজাজ যখন তুঙ্গে

অন্য সবার মতো অফিসের বড় কর্তাদেরও কাজের চাপ, সমস্যার মধ্য দিয়ে পার হতে হয়। কাজের চাপে ‘বস’য়ের মেজাজ যখন চড়ে যায় তখন তার মর্জি বুঝে চলা খুবই জরুরি।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 August 2016, 10:21 AM
Updated : 22 August 2016, 10:21 AM

দৈনন্দিন কাজগুলো করতে করতে জীবন যখন অতিষ্ঠ হয়ে যায় তখন আমাদের কতোই না খারাপ লাগে। আমরা ভাবি অফিসের বসেরা হয়তো খুব আরামে আছে। তারা শুধু খবরদারিই করে দিন কাটিয়ে দেন।

বাস্তবে বিষয়টা এমন না।

লাইফস্টাইলবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে জানানো হয়, যারা চাকরি করেন তারা নির্দিষ্ট একটা পরিকল্পনার মধ্যে চলেন। যারা এই পরিকল্পনাটা তৈরি করেন তারাই হলেন ‘বস’। এ পরিকল্পনা করতে তাদের অনেক ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়, নানান প্রতিযোগিতা অসুবিধার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। ফলে কর্মচারীদের তুলনায় তাদের আরাম তো কিছু বেশি নয়ই বরং অনেক কম।

যখন অফিসের বড়কর্তা কাজের চাপে অতিষ্ঠ থাকেন তখন অধীনস্থ কর্মচারিরা কীভাবে সহযোগিতা করতে পারেন এই বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন ভারতের এইগন লাইফ ইনস্যুরেন্সের মুখ্য মানবসম্পদ কর্মকর্তা সাবা আদিল—

তিনি বলেন, যখন কার্যনির্বাহী সংস্থা কোনো সমস্যায় থাকে তখন সহজ নিয়ম হচ্ছে, সমস্যাটার কারণ অনুধাবন করা আর সেই সমস্যার প্রতি সহানুভূতিশীল থাকা। বসের মানসিক চাপের সঙ্গে সমন্বয় তৈরি করার পূর্বশর্ত হচ্ছে সমস্যাটা অনুধাবন করা।

বস যখন চাপে থাকেন তখন কীভাবে তাকে সাহায্য করা যায় এই বিষয়ে আদিল কিছু উপায় জানান—

একা থাকতে দেওয়া: কর্মকর্তারা যখন সমস্যায় থাকে আর সেটা বাইরে থেকে বেশ বোঝা যায় তখন সবচেয়ে বুদ্ধিমত্তার কাজ হচ্ছে তাদের নিজের মতো সময় কাটাতে দেওয়া। তিনি হয়ত কর্ম তালিকা, কর্ম পন্থা, মিটিং, বিভিন্ন সিদ্ধান্ত, সময়ের স্বল্পতা ইত্যাদি নিয়ে বিরক্ত আছেন। এরকম অবস্থায় তাকে বিরক্ত করার অর্থ হচ্ছে নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারা। তাই যখন ‘বস সমস্যায় আর চাপে অতিষ্ঠ তখন তাকে নিজের মতোই থাকতে দেওয়া উচিত।

নিজের মতো সমাধান করা: বস যখন নিজের কাজে ব্যস্ত তখন কর্মচারীদের হাতেও এমন একটা কাজ আসতে পারে যেটায় বসের মন্তব্য প্রয়োজন। সুযোগ মতো বসের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা যায়। তবে নিজের মতো কাজটার সমাধান করে ফেলতে পারাই হবে সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত। বস যখন জানতে পারবেন প্রতিটা খুঁটিনাটি কাজ তার জন্য বসে থাকে না তখন তিনি খুশি ছাড়া বেজার হবেন না।

তবে এরকম সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বসের কাজের ধরণ বোঝা খুব জরুরি।

আদিল বলেন, “নিজের সাধ্য এবং ক্ষমতার মধ্যে কিছু সিদ্ধান্ত নিজে নিজে নিতে পারাও একটা সুযোগ। বড়কর্তাকে এই বিষয়ে সচেতন করা যায় তবে সব কাজের জন্য তার অনুমতি চেয়ে শুধু শুধু তাকে বিরক্ত করা ঠিক না।”

শুধুমাত্র জরুরি বিষয়ে প্রশ্ন করা

বড় কর্তা যখন কাজের চাপে অনেক বিরক্ত তখন তাকে কিছু জিজ্ঞেস করার আগে বুঝে নেওয়া দরকার প্রশ্নটা কতটা গুরুত্ব বহন করে। এমনও হতে পারে সমস্যাটা খুব ছোট এবং অন্য যে কেউ এটার সমাধান জানেন। সেক্ষেত্রে বড় কর্তাকে বিরক্ত না করে সমাধান করে ফেলা যায়।

যে সমস্যাগুলোর সমাধান এখুনি লাগবে না সেগুলো নিয়ে শুধু শুধু বড় কর্তাকে বিরক্ত করার কোনো মানে হয় না। নিজের সমস্যার কথা যতটা সংক্ষেপে সম্ভব বুঝাতে হবে- মন্তব্য করলেন এলআইসি মিউচুয়াল ফান্ডের মানব সম্পদ বিষয়ক প্রধান শেফালি সুরি।

তিনি আরও বলেন, “এরকম অবস্থায় দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে এবং নিজে থেকে ভেবে চিন্তে সমস্যার সমাধানে আসতে হবে। বসের সমস্যার প্রতি সহানুভূতি দেখাতে হবে এবং সঠিক আলোচনার মাধ্যমে তাকে সাহায্য করতে হবে। যেন সঠিক অবস্থানে ফিরতে তার সুবিধা হয়।”

এগুলো এক একটা অবস্থা যেখানে আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাহায্য করতে পারি। এ সমস্যাগুলো এক সময় কেটে যায়। যখন সমস্যাগুলো মিটে যায় তখন এই দায়িত্বশীল আচরণ বড় কর্তার মনে সন্তুষ্টি জাগিয়ে তোলে যা কর্মক্ষেত্রে পরে কাজে আসে।

ছবি: রয়টার্স।