লন্ডনে ‘বই-লিট উৎসব’

লন্ডনের মাটিতে বাংলার সংস্কৃতিকে পরিচিত করে তুলতে বৈশাখ মাসে আয়োজিত হয় ‘বই-লিট উৎসব’। বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র, লন্ডন ২০০২ সাল থেকে বৈশাখী লিটারেচার উৎসব বা বই-লিট উৎসব আয়োজন করে আসছে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 June 2016, 05:03 AM
Updated : 24 June 2016, 12:10 PM

বাংলা নববর্ষের পর দুদিনের এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে। লন্ডনের অধিবাসী বাঙালিদের কাছে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। তাছাড়া শিশুদের সৃজনশীল কাজে আগ্রহী করে তোলাও এই অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে।

২১ ও ২২ মে, ২০১৬ লন্ডনের রিচ মিক্স কালচারাল সেন্টারে এই অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দেশীয় ফ্যাশন ঘর ‘বিবিয়ানা’র কর্ণধার লিপি খন্দকার।

তিনি বলেন, “প্রবাসে এমন অনেক শিশু আছে যারা জন্ম থেকেই সেখানে রয়েছে। তারা বাংলাদেশের সাহিত্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে অতটা পরিচিত হয়। তাই তাদের সামনে বাংলা সংস্কৃতি তুলে ধরার উদ্দেশ্যে এই অনুষ্ঠানে নানা ধরনের আয়োজন করা হয়। বাংলা ভাষা, বাংলা সংস্কৃতি এবং সাহিত্য এগুলো ভিনদেশের মাটিতে উপস্থাপন করা হয় এই অনুষ্ঠানে।”

লিপি খন্দকার জানান তাকে সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয় সকলের সঙ্গে তার অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করার জন্য। এই যুগেও শিশুদের উদ্দেশ্য থাকে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বা অ্যাকাউন্টেন্ট হওয়া। কিন্তু সৃজনশীল কাজগুলোকেও যে পেশা হিসেবে বেছে নেওয়া যায় ওই বিষয়গুলো অনেকেরই মাথায় আসে না। আর এ কারণেই একজন ডিজাইনারকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয় যেন তিনি তার এই পেশা বেছে নেওয়ার বিষয়গুলো নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে পারেন।

লিপি খন্দকার বলেন, “সৃজনশীল কাজগুলোকে এখনও অনেকেই পেশা হিসেবে বেছে নিতে আগ্রহী হয় না। তাই আমি কীভাবে ডিজাইনার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছি সেই অভিজ্ঞতাগুলো সকলের সামনে তুলে ধরার জন্য আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। আসলে ছবি আঁকা, গল্প বলা বা লেখা ইত্যাদি এই সৃজনশীল কাজগুলো যে পেশা হিসেবে বেশ উপভোগ্য এই বিষয়গুলো অনেকেই জানে না। অনুষ্ঠানে একজন গল্প কথক উপস্থিত ছিলেন। তিনি গল্প বলার পর আবার কয়েকটি শব্দকে বাংলায় অনুবাদ করে দেন। এভাবে সবাইকে অনুপ্রাণিত করা হয়। পাশাপাশি বাংলা সাহিত্যের সঙ্গেও উপস্থিত সকলকে জানানো হয়।”

এছাড়া অনুষ্ঠানে গল্প বলা, মঞ্চ নাটক, গান, কবিতা আবৃতি ইত্যাদি উপস্থাপনা করা হয়। লন্ডনের শিশুরা একটি মঞ্চ নাটক উপস্থাপন করে। সেখানে তারা বাংলা সংলাপও বলে। শেক্সস্পিয়ারের ‘ম্যাগবেথ’ নাটকটি সংক্ষিপ্ত আকারে উপস্থাপন করে শিশুরা।

দুদিনের এই আয়োজনে বাংলা সাহিত্যে অবদান রেখেছেন এমন লেখকদের লেখা গল্প ও কবিতা নিয়ে উপস্থাপনা করা হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও মাইকেল মধুসূদন দত্ত কে নিয়ে ছিল বিশেষ উপস্থাপনা। যেন প্রাশ্চাত্যে বেড়ে ওঠা শিশুরা বাংলা সাহিত্য সম্পর্কে জানতে পারে।

প্রতি বছরই লন্ডনে বৈশাখী আয়োজনের অংশ হিসেবে এই অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।