ব্যায়াম যখন ক্ষতিকর

ব্যথাকে উপভোগ করতে হবে। ‘নো পেইন, নো গেইন’, ব্যায়ামের অনুপ্রেরণাই যখন এমন, তখন দাঁতে দাঁত চেপে ব্যায়াম করাটা স্বাভাবিক মনে হলেও সবসময় তা ঠিক নয়।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 May 2016, 11:31 AM
Updated : 20 July 2016, 12:11 PM

’আমেরিকান কাউন্সিল অফ এক্সারসাইজ’য়ের জ্যেষ্ঠ পরামর্শদাতা এবং স্যান ডিয়েগোর মিরামার কলেজের শরীরচর্চা-বিদ্যার সহকারী অধ্যাপক জেসিকা ম্যাথিউস বলেন, “এটা সত্য যে, ব্যায়ামের পর শরীরে অল্প ব্যথা হওয়া ভালো। এই ব্যথার মানে হল আপনার মাংস পেশি শক্তিশালী হচ্ছে।”

তবে তিনি সতর্ক করেন, “কিছু নির্দিষ্ট ব্যথা জটিলতার লক্ষণ, যেমন অতিরিক্ত ব্যায়ামের ব্যথা। সাধারণ ব্যথা আর জটিলতা লক্ষণ সূচক ব্যথার পার্থক্য চিহ্নিত করাটাই মূল কথা।”

উপায় জানিয়েছে শরীরচর্চাবিষয়ক এক ওয়েবসাইট।

মাংসপেশিতে কাঁপুনি: ম্যাথিউস বলেন, “ব্যায়ামের সময় মাংসপেশির সামান্য কাঁপুনি সমস্যা নয়। তবে থরথর করে কাপতে থাকলে এবং শক্তি কমে যেতে থাকলে তা পেশির ক্ষমতা কমে যাওয়ার লক্ষণ। এই অবস্থায় জোর করে ব্যায়াম করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। অবসাদগ্রস্ত অবস্থায় ব্যায়ামের স্বাভাবিক পারদর্শীতা থাকে না। এসময় ব্যায়াম করলে পেশি ছিড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।”

আকস্মিক ব্যথা: ধীর ও ক্রমবর্ধনশীল ব্যথা স্বাভাবিক। এর মানে হল ব্যায়ামটি আপনার জন্য চ্যালেঞ্জিং। তবে হঠাৎ করে তীব্র ব্যথা জটিলতার লক্ষণ।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থোপেডিক সার্জন মোরিয়া ম্যাক্কার্থি বলেন, “এক্ষেত্রেও জোর করে নির্দিষ্ট ব্যায়াম করা যাবে না। কারণ এতে পেশি ও হাড়ের জোড়ায় আঘাত লাগতে পারে।”

জগিংয়ের পর পা ফোলা: জগিং বা হাঁটাহাঁটির পর পায়ের পাতা বা হাঁটুতে ফোলা ভাব, পানি আসা কিংবা লালচে-ভাব দেখা দেয়া এবং নিয়মিত ব্যথা অতিরিক্ত হাঁটাহাঁটির উপসর্গ।

ম্যাক্কার্থি বলেন, “প্রথম কয়েক দিন রয়ে সয়ে। আপনার আরও বেশি সময় নিয়ে ‘ওয়ার্মআপ’ ও ‘স্ট্রেচিং’ করতে হবে।”

এরপরও ব্যথা হলে ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শ নিতে হবে।

ব্যায়াম তিন দিন আগে, ব্যথা আছে আজও: ব্যায়াম শুরু করার প্রথম কয়েকদিন ব্যথা হওয়া স্বাভাবিক। এর কারণ হল মাংসপেশির ছোট টিস্যু ছিড়ে যাওয়া। এই ছেড়া অংশগুলো যখন পুনর্গঠিত হয় তখন পেশি আরও শক্তিশালী হয়। তবে তা একদুদিনের মধ্যেই সেরে যাওয়া উচিৎ। আরও বেশি সময় ব্যথা থাকলে বুঝতে হবে আপনি মাংসপেশির উপর বেশি চাপ দিয়ে ফেলেছেন।

ব্যথা সেরে যাওয়ার পর ব্যায়ামাগারে যেতে হবে। কারণ এই অবস্থায় ব্যায়াম করলে ব্যায়াম একপেশে হতে পারে। যার কারণে পরে দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা দেখা দিতে পারে।

নির্দিষ্ট ব্যায়ামে ব্যথা পাওয়া: এটিও বিপদের পূর্বাভাস। ব্যথা যদি তীব্র হয় তবে অর্থোপেডিক স্পেশালিস্টের শরণাপন্ন হওয়া উচিৎ। আর সহনশীল ব্যথা হলে ব্যয়ামের আগে শরীরকে ব্যয়ামের জন্য প্রস্তুত করে নেওয়ার প্রতি সতর্ক হতে হবে।

ম্যাকআর্থি বলেন, “বাড়তি খেয়াল রাখতে হবে ‘ওয়ার্ম-আপ’ আর ‘স্ট্রেচিং’য়ের প্রতি। আর ব্যয়ামের ফাঁকে পানি পান করতে হবে। অন্যদের সঙ্গে পাল্লা দিতে যাবেন না। ভার উত্তোলনের ব্যায়াম কম ওজন দিয়ে শুরু করতে হবে। আর প্রশিক্ষকের নির্দেশনা সতর্কতার সঙ্গে অনুসরণ করতে হবে।