একজন মানুষেল চেহারাই সবার আগে চোখে পড়ে। আর একবার ‘ডাবল চিন’ বা চোয়ালের নিচে জমে থাকা চর্বি কারো চোখে পড়ে গেলে আপনার পেশিবহুল শরীর কোনো কাজে আসে না।
শরীরের সব চর্বি নিয়ন্ত্রণে চলে আসলেও কিছু মানুষের মুখমণ্ডলের চর্বি কমতেই চায়না। অনেক সময় সবার আগে মুখেই চর্বি জমতে শুরু করে, আর ঝরে সবচাইতে দেরিতে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রত্যেকেরই চর্বি জমার পৃথক ক্রম থাকে। আর শরীরের যে অংশে চর্বি সবার আগে জমতে শুরু করবে, সেই অংশের চর্বি ঝরবে সবার শেষে।
মুখের গঠন: মুখের কঙ্কাল চেহারার গড়ন তৈরি করে এবং এর উপরের নরম কোষগুলোকে ধরে রাখে। পেশিগুলো মুখের বিভিন্ন অভিব্যক্তির প্রকাশের জন্য দায়ি। এই পেশির পরতের উপরে চর্বির পকেট থাকে যা ত্বকের তারুণ্য ও লাবণ্য ধরে রাখে।
বাড়তি চর্বি জমার আশঙ্কা নারীদের ক্ষেত্রে বেশি। ভারতীয় প্রসাধনী বিশেষজ্ঞ ডা. সাধনা দেশমুখ বলেন, “এ সমস্যার একটি বড় কারণ খাদ্যাভ্যাসে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেশি। বয়স, মদ্যপান, মানসিক দুশ্চিন্তা ইত্যাদিও দায়ি, যা ‘ফেইশল লিগামেন্ট’ দূর্বল করে দেয়। ফলে চর্বির স্থান পরিবর্তন হয়ে জমে যায় এবং ডাবল চিন তৈরি হয়। ফেইশল লিগামেন্টের কাজ হল চর্বির পকেটগুলো নিজ স্থানে ধরে রাখা।”
খাওয়া ও শারীরিক পরিশ্রম: পুষ্টিবিদদের মতে, খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন ও শরীরচর্চা এই চর্বি কমাতে সহায়ক। ভারতীয় পুষ্টিবিদ ডা. সারাদ বলেন, “আধা ঘণ্টার কার্ডিও শরীরচর্চা, সপ্তাহে পাঁচ দিন এই রুটিন মেনে চলতে পারলে উপকার পাবেন। খেতে হবে তাজা ফল, সবজি, বাদাম, বীজজাতীয় খাবার ইত্যাদি, যা অন্ত্র ও যকৃত পরিষ্কার রাখে। পরিষ্কারের এই প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত করতে ঘাম ঝরাতে হবে, তাই প্রয়োজন শরীরচর্চার। ব্যায়াম করলে ত্বকের বন্ধ হয়ে যাওয়া লোপকূপ খুলে দেয় এবং রক্তসঞ্চালন উন্নত করে।”
ধূপমান বর্জন: শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন সি যোগান দিতে দূপমান বর্জন করতে হবে। ফলে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বজায় থাকবে।
লবণ এড়ানো: শরীর থেকে পানি বের করে দেওয়ার পরিবর্তে শরীরে পানি ধরে রাখে সোডিয়াম। ফলে পেট ভরা অনুভূতি তৈরি হয়। তাই লবণ খাওয়া পরিমাণ কমাতে হবে। প্রক্রিয়াজাত খাবার কমিয়ে তাজা খাবারের প্রতি মনোযোগী হতে হবে। বাইরে খাওয়ার পরিমাণও কমাতে হবে। কারণ রেস্তোরাঁর খাবারে প্রচুর লবণ থাকে।
ক্যালসিয়াম: পালংশাক, ব্রকলি, তিল ইত্যাদি ক্যালসিয়ামে ভরপুর খাবার গ্রহণের পরিমাণ বাড়াতে হবে।
ছবি: রয়টার্স।