স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইট সম্প্রতি ছোট ঘুমের উপকারিতা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। এতে বলা হয়েছে কিছুক্ষণের ঘুম শরীরের জন্য এতই উপকারী যে প্রতিবেদন পড়ামাত্রই একটা ঘুম দিয়ে উঠতে চাইবেন।
ধৈর্য বৃদ্ধি করে: মিশিগান ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক প্রমাণ করে দেখিয়েছেন যে অল্প সময়ের একটা ঘুম বা তন্দ্রা মানুষের ধৈর্যশক্তি বাড়াতে পারে। তারা কিছু মানুষকে একটি কঠিন জ্যামিতিক ছবি আঁকতে দিয়েছেন। এদের মধ্যে একদলকে এক ঘণ্টা ঘুমানোর পরে কাজটি করতে দিয়েছিলেন এবং অন্যদলকে একটা ডকুমেন্টরি দেখানোর পরে কাজটি করতে দিয়েছিলেন। দেখা গিয়েছে ঘুমানোর দল ৯০ সেকেন্ড পর্যন্ত কঠিন কাজটি চালিয়ে গিয়েছে যেখানে না ঘুমানোর দল ৪৮ সেকেন্ডেই হাত গুটিয়ে নিয়েছে।
মস্তিষ্ককে সজাগ রাখে: নাসার একদল গবেষক অনুসন্ধান করে দেখেছেন যে যেসব বিমান চলক উড্ডয়নের আগে অন্তত এক ঘণ্টা ঘুমিয়ে নেন তাদের মস্তিষ্ক অন্যদের তুলনায় বেশি সজাগ থাকে। এরা সমস্যা অনেক আগেই আঁচ করতে পারেন। আরও একটা ছোট গবেষণায় দেখা গিয়েছে মাত্র ১০ মিনিটের একটা ঘুমও শরীরকে অনেক সতেজ করতে পারে।
স্মৃতিশক্তি বেড়ে যায়: জার্মানির একদল গবেষক জানিয়েছেন এক ঘণ্টা লম্বা একটা ঘুম দিলে মস্তিষ্কের তথ্য ধারণ ক্ষমতা আশ্চর্যজনকভাবে বেড়ে যায়। তারা কিছু মানুষকে কিছু শব্দ মনে রাখতে বলেছিলেন। এরপর অর্ধেক মানুষকে ঘুমাতে পাঠিয়ে দেন আর কিছুকে টিভি দেখতে। দিন শেষে দেখা যায় ঘুমানোর দল না ঘুমানোর দলের থেকে পাঁচ গুণ বেশি স্মৃতি ধরে রাখতে পেরেছে।
হৃদরোগ হ্রাস পায়: ২৩ হাজার প্রাপ্ত বয়স্ক গ্রিক মানুষের মধ্যে চালানো একটা সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যারা দুপুরে একটা ঘুম দেয় তাদের হৃদরোগের হার ৩০ ভাগ কম। বিশেষজ্ঞরা জানান দুপুরে ছোট্ট একটা ঘুম সারাদিনের চক্রটিকে দুইভাগে ভাগ করে ছন্দটা সুন্দরভাবে বজায় রাখে। দুপুরে না ঘুমালে কিছু মানুষের ক্ষেত্রে ছন্দপতন হওয়ার একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়। যা হৃদরোগের কারণ হতে পারে।
সৃজনশীলতা বৃদ্ধি পায়: ইউনিভার্সিটি অফ সান ডিয়াগোর একজন মানোরোগ বিশেষজ্ঞ ড. সারা মেডেনিক জানিয়েছেন ঘুমের মধ্যে দ্রুত চোখ নাড়ানোর (র্যাপিড আই মুভমেন্ট) মানে হচ্ছে সে সময় স্বপ্ন দেখছে। গভীর ঘুমে স্বপ্ন দেখার এই অংশ কম থাকে। অল্প সময়ের ঘুমে এটি বেশি থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা স্বপ্ন দেখাসহ ছোট একটা ঘুম দিয়ে ওঠেন তারা তুলনামূলক বেশি সৃজনশীল এবং সমস্যা সমাধানে বেশি দক্ষ হয়ে থাকেন।
ছবি: রয়টার্স।