প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে এই গ্যালারি।
দীর্র্ঘদিন ধরে শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করছেন শামীম সুব্রানা। শিল্পীদের জন্য কাজ করতে গিয়ে কিংবা ব্যক্তিগত কারণেই হোক না কেনো, নিজের শিল্পী সত্তাটাকে একরকম চাপা দিয়েই রেখেছিলেন তিনি।
২০০৫ সালে অবশ্য একবার প্রদর্শনি করবার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। তবে মর্মান্তিক এক ঘটনায় নিজের ছেলেকে হারানোর পর, সেইবার নিজের শিল্পকর্ম নিয়ে কোনো প্রদর্শনী করেননি তিনি। মাঝে বেশ কিছু দলীয় প্রদর্শনীতে অংশ নিলেও, দর্শকদের কাছে এবারই প্রথম শুধু নিজের কাজ নিয়েই হাজির হলেন সুব্রানা।
২৩ দিনের এই প্রদর্শনীতে শিল্পীর মোট ৪১টি কাজ প্রদর্শিত হচ্ছে। অধিকাংশ কাজই করেছেন অ্যাক্রেলিক মাধ্যম ব্যবহার করে। যদিও মিশ্র মাধ্যমে কয়েকটি ছবি এঁকেছেন।
শিল্পীর সঙ্গে কথায় কথায় জানা গেল, ২০০৭ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে করা শিল্পচর্চারই একটি প্রতিফলন ‘হোয়াট আই টক অ্যাবাউট ওয়েন আই টক অ্যাবাউট লাইফ’ শিরোনামের প্রদর্শনীটি।
বিমূর্ত ধারায় শিল্পচর্চা করেন শিল্পী শামীম সুব্রানা। তার কাজে নানা রকম রংয়ের পাশাপাসি রেখা আর অবয়বের ব্যবহার বেশ জোরালো।
সমসাময়িককালে, বাংলাদেশে যে ধরনের বিমূর্ত শিল্পচর্চা হয়, সে জায়গায় একটু হলেও ভিন্নতা আছে শিল্পী সুব্রানার ফর্মে। উজ্জ্বল রংয়ের মাঝে টানা রেখার আস্ফালন কোনো কোনো ক্ষেত্রে ‘ক্যালিগ্রাফিক লাইন’য়ের কথা মনে করিয়ে দিতে পারে।
পাশাপাশি ‘ফোর গ্রাউন্ডে’ জোরালো রংয়ের মাঝেও যেভাবে ‘মিড টোন’কে কোনো কোনো ক্ষেত্রে আলাদাভাবে দৃশ্যমান করেছেন সেটাও বর্তমান সময়ে খুব একটা দেখা যায় না।
‘টেক্সচার’ কখনও কখনও প্রাচ্য থেকে উড়ে ঘুরে বেড়িয়েছে মধ্য প্রাচ্যে এমনটাও মনে হতে পারে।
‘সার্কেল অব লাইফ’, ‘দ্যা লাইট ইনসাইড আস’, র্যাডিকল থটস’, ‘রোড নাম্বার থার্টি টু’, ‘আরবানাইজেশন’, ‘কনসেনশাস’, ‘চাইল্ড ম্যারেজ’, ‘মাইগ্রেশন’, ‘মুনলিট সোনাটা’ - প্রতিটি ছবিকে এভাবে নাম দেওয়ার পাশাপাশি ছবি সম্পর্কে দু-একটি কথাও তুলে ধরেছেন শিল্পী।
এ প্রসঙ্গে শিল্পী বলেন, “আসলে আমি ইচ্ছা করেই নাম আর ক্যাপশন দিয়েছি। কারণ অনেকেই হয়তো বুঝতে পারে না, সুতরাং কাজের সঙ্গে যোগাযোগটা তৈরি হয় না। এই যেমন আমার কাজ নিয়ে এখন মানুষ বিভিন্ন রকম কথা বলছে আমাকে, এটা তো ছবি একেবারেই না বুঝে বলতে পারত না।”
এছাড়া ছবি আঁকতে গিয়ে সমসাময়িক ঘটনাপ্রবাহ কিংবা গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয়কেও প্রাধাণ্য দিয়েছেন শিল্পী শামীম সুব্রানা। এ কারণেই, প্রদর্শিত ছবির মাঝে খুঁজে পাওয়া যায় – গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন, জাতির পিতার হত্যাকাণ্ড, মক্কায় হজ্জ্ব যাত্রীদের দূর্ঘটনার মতো নানান সামাজিক অনুসঙ্গ।
নিজের ছেলের নামে প্রতিষ্ঠিত ‘শাবাব মুরশিদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন’য়ের মাধ্যমে ৬০ জন সুবিধাবঞ্চিত শিশুর জীবন পাল্টে দেওয়ার চেষ্টা তিনি করছেন।
গ্যালারি টোয়েন্টি ওয়ানের ঠিকানা: ৭৫১, সাত মসজিদ রোড (১১ তলা), ঢাকা ১২০৫।