ডায়েট করতে যেয়ে অনেকেই কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা ছেড়ে শুধু আমিষ গ্রহণে ব্যস্ত হয়ে যান। অথচ ইউএস ফুড পিরামিড’য়ে কার্বোহাইড্রেটকে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছে। আর তা কোনো ভাবেই বাদ দেওয়া ঠিক নয়। মূলত আমাদের দেহের যথাযথ ক্রিয়াকলাপগুলো সম্পন্ন করতে অনেক প্রকারের খাদ্য দরকার।
কেনটাকির লুইসভিলে’তে অবস্থিত ‘নিউট্রিশন ওয়ার্কস’য়ের কর্ণধার ও অনলাইন পুষ্টি বিশেষজ্ঞ সান্দ্রা মেয়েরোউইটজ বলেন, “প্রাথমিকভাবে শক্তির জন্য দেহের যে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট-গুলো দরকার, তার মধ্যে শর্করা অন্যতম।”
তিনি আরও বলেন, “পাশাপাশি আমিষ ও স্নেহ(চর্বি)ও শক্তির উৎস, কিন্তু তা দীর্ঘমেয়াদী শক্তির উৎস হিসেবে সঞ্চিত থাকে। বিপরীতে, শর্করা দেহের তাৎক্ষণিক শক্তির চাহিদা পূরণ করে। এটা দেহের প্রাথমিক শক্তির উৎস, এবং এটাকেই দেহ ব্যবহার করতে চায়।”
শক্তির উৎস হিসেবে দেহ শর্করাকেই প্রাধান্য দেয় কেননা, শর্করা সহজে ও দ্রুত ভেঙে শক্তির যোগান দেয়, যা আমিষ বা চর্বি ভাঙার চেয়ে দ্রুততর।
শর্করার প্রকারভেদ
শর্করা দুই প্রকার— সরল ও জটিল। আমাদের গ্রহণ করা শর্করার মধ্যে অধিকাংশই জটিল শর্করা, যা ভাঙতে অধিক পরিশ্রম ও সময়ের প্রয়োজন।
“সরল প্রকৃতির শর্করা যেখানে দ্রুত ভেঙে যায়, সেখানে জটিল শর্করাগুলো ধীর গতিতে ভেঙে দেহের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ মাত্রার শক্তি যোগান দেয়। এভাবে সরল শর্করা থেকে উদ্ভূত শক্তিপ্রবাহের ‘ওঠানামা’ এড়ানো যায়। তাই জটিল শর্করা তুলনামূলক ভাবে ভালো।” ব্যাখ্যা করে বলেন মেয়েরোউইটজ।
শর্করার সবচেয়ে ভালো উৎস
মেয়েরোউইটজের মতে, দৈনন্দিন ক্যালোরির ৫০ থেকে ৬০ ভাগ শর্করা থেকে আসা উচিত। এর অধিকাংশ হওয়া উচিত অপরিশোধিত শস্যজাত খাবার ও অন্যান্য জতিল শর্করা। সরল শর্করার জন্য বেছে নিতে হবে বিভিন্ন আঁশযুক্ত ফল ও শাকসবজি। পর্যাপ্ত শর্করার অভাবে দেহে ক্যালোরি ও পুষ্টির স্বল্পতা হতে পারে। এছাড়াও স্বাস্থ্যকর শর্করা প্রতিস্থাপিত হতে পারে ক্ষতিকর চর্বির মাধ্যমে।
শর্করার কিছু ভালো উৎস হতে পারে- ওটস বা বার্লি, বাদামি চাল, ফলমূল ও শাকসবজি, শিম, বরবটি, মটরশুঁটি, মসুরডাল ইত্যাদি। প্রতিদিনকার খাবারে এসব অবশ্যই থাকতে হবে।
তবে লক্ষ রাখতে হবে, যেন জটিল শর্করা শক্তির প্রাথমিক উৎস হয়ে না দাঁড়ায়। অধিক জটিল শর্করা সমৃদ্ধ খাবার বেশি ক্যালোরি সঞ্চয় করে রাখে, যা আপনার ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।
ছবি: রয়টার্স।