পরিস্থিতি বদলাবে, সেই আশায় পথ চেয়ে চাতক পাখির মতো বসে আছে এই দেশের তরুণদল। ‘হায়! ফেইসবুক’ ছাড়া যেন জীবন অচল।
এই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমটি বেশিরভাগই নিজের জন্য ব্যবহার করেন। আর এই ব্যক্তিগত ব্যবহার থেকে অনেকেই বনেছেন ‘ফেইসবুক তারকা’।
এখন ফেইসবুক ছাড়া জীবন কেমন যাচ্ছে, সেটাই জানার চেষ্টা করা হয়েছে এই প্রতিবেদনে।
আরিফ আর হোসেন
বাংলাদেশে বন্ধ বলে অনেকেই প্রক্সি ব্রাউজার ব্যবহার করে ফেইসবুক সচল রেখেছেন।
এ সম্পর্কে তিনি বলেন, “নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও প্রক্সি দিয়ে এই যে আমরা ফেইসবুক চালাচ্ছি, এটা কি ঠিক হচ্ছে? খুব খোলামেলা ভাবে যদি বলি, জবাব হচ্ছে, না এটা ঠিক হচ্ছে না। মজার ব্যাপার হল, কিছু সরকারি পেইজও কিন্তু এভাবে চলছে। কিছু সরকারি মানুষও কিন্তু এভাবে চালাচ্ছে। তো...? আমাদের চালাতে সমস্যা কোথায়?”
“ব্যাপারটা অনেকটা এরকম— ওই মন্ত্রী আজকে উল্টা রাস্তা দিয়ে গিয়েছে। কাজেই, আমিও যাবো। বিষয়টা ভয়াবহ এবং সরকারের জন্য খুব এলার্মিং। ভেবে দেখুন, একটি সুন্দর সকালে দেখা যাবে কোনো গাড়িই আর রাইট বা রং সাইড মানছে না। ট্রাফিক দুই হাত তুলে বুঝাচ্ছেন ‘স্টপ স্টপপ... দিস ইজ রং... দিস ইজ রং’ কিন্তু কেউ কথা শুনছে না। হাজার হাজার গাড়ি রং সাইড দিয়ে আসছে। এর কারণ, রাইট সাইড ছাড়া যে রং সাইড দিয়েও আসা যায় এটা আপনারা রেগুলেটরি অথরিটি হয়েই দেখিয়েছেন।” বললেন তিনি।
তার কথায়, “দোষ কিন্তু স্যার আপনাদের। আমরা তো জাস্ট ফলোয়ার।”
আসীফ এন্তাজ রবি
তাই সরকারের ফেইসবুকের উপর এই নিষেধাজ্ঞা জারিতে তিনি কিছুটা ক্ষুব্ধই।
তিনি বলেন, “ফেইসবুক আমার দৈনন্দিন আশা-আকাঙ্ক্ষা, সুখ দুঃখ প্রকাশের একটি মাধ্যম। হঠাৎ করে এভাবে ফেইসবুক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মনে হচ্ছে যেন আমার মুখ বন্ধ করে দিয়েছে। মনে হচ্ছে যেন আমার স্বাধীন মত প্রকাশে একটা বাধা তৈরি করা হয়েছে। আজকের দিনে ফেইসবুক শুধু আলাপ করা বা ছবি শেয়ার করার মতো ছেলেখেলায় সীমাবদ্ধ নেই।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের মতো এরকম অনেকেই ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর কাজ ফেইসবুকে করেন। এই মোষ তাড়ানোর ফলে সমাজে অনেকের অনেক উপকার হয় যেটা থেকে তারা এখন বঞ্চিত।”
“ফেইসবুক যেদিন বন্ধ হয় তার আগের দিন রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টের কোলন ক্যান্সারে ভোগা একজন ছাত্রের চিকিৎসার অর্থ সংগ্রহের পরিকল্পনা চলছিল। আমি জানি না এখন কীভাবে এই ছাত্রের জন্য অর্থ সংগ্রহ করব, কীভাবে তার চিকিৎসা আগাবে।” বললেন তিনি।
তাছাড়া এইসময় শীতের কাপড় বিতরণের জন্য নানান রকম ইভেন্ট চলে ফেইসবুকে। সেগুলোতেও বাধা পড়ছে।
রবি বলেন, “সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করতে হবে। আমিও বলি সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করতেই হবে। কিন্তু সেটির জন্য অন্য উপায়ও বের করা যায়। সারা পৃথিবীতে সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে আছে। শুধুমাত্র ফেইসবুক বন্ধ করে কি তাদের প্রতিহত করা সম্ভব?”
“আর আমরা যারা সাধারণ আছি, নিজেদের অবস্থার উন্নতির জন্য সমাজের উপকারের কাজে ফেইসবুক ব্যবহার করছি তাদের কী হবে? আমার তো মনে হয় আমাদের সংখ্যাটাই বেশি। ধুলাবালি আসার ভয়ে দরজা-জানালা বন্ধ করে রাখলে চলবে? তবে যে আলো আর বাতাসও আসতে পারবে না। বদ্ধঘরে দম আটকে সবাই মরে যাব।” বললেন তিনি।
অনিক খান, ছড়াকার এবং টিভি ও রেডিও উপস্থাপক
তার ‘চেক ইন শিল্প’ নিয়ে অতিষ্ট হয়েছেন অনেকে। এমনকি তার এই ‘অত্যাচার’ থেকে বাঁচতে কে বা কারা যেন ‘হে ফেইসবুক, অনিক খানের ফেইসবুক লোকেটর বন্ধ করো!’ শিরোনামে ফেইসবুক গ্রুপও খুলে ফেলেছিল।
অনিক বলেন, “ফেইসবুকের ‘চেক ইন’ মানে আমি ঠিক কখন, ঠিক কোথায় এবং ঠিক কার কার সঙ্গে আছি, অনলাইনে তার তালিকা থেকে যাওয়ার বিষয়টি যখন প্রথম চালু হয় তখন আমি ভীষণ মুগ্ধ হই। মনে হল এ যেন এক অমোচনীয় প্রামাণ্য দলিল!”
তার কথায়, “মনে হয়- এই যে, এই তো আমার ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ পদে পদে যেখানে থেকে যাচ্ছে আমার ব্যক্তিগত ইতিহাসের ডিজিটাল পদরেখা!”
তিনি আরও বলেন, “চেক ইন’য়ের প্রতি আমার মুগ্ধতা রীতিমতো ‘ভালোবাসায়’ রূপ নেয় যখন কিছুদিনের জন্য ‘গুম কালচার’ চালু হয়। আমি সামান্য লেখালেখি করলেও সেটা ‘গুম’ হওয়ার লেভেলের না, ফোকলা দাঁতের নির্বিষ সাপের মতো। তবু বলা তো যায় না, যদি হয়েই যেতাম গুম, অন্তত ‘চেক ইন’য়ের কল্যাণে আমাদের পুলিশ ও ইন্টেলিজেন্সের ভাইয়েরা এক ক্লিকেই জানতে পারতেন— গুম হওয়ার আগে আমি ঠিক কখন, ঠিক কোথায়, ঠিক কার কার সঙ্গে ছিলাম! এতে আমার বন্ধুদের একটু ঝামেলায় পড়তে হলেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভাইদের প্রাথমিক গ্রেফতার ও রিমান্ডে নেওয়ার জন্য পার্টি খোঁজাখুঁজির খাঁটনি তো একটু কমতো!”
তবে, শুধু ‘চেক ইন’ নয়, নিয়মিত ফেইসবুক ব্যবহারকারী হিসেবে এবং ফেইসবুক থেকে ব্যাপক উপকৃত হয়েও এই ২০১৫ সালে এসে দেড় ঘণ্টার জন্য পুরো ইন্টারনেট সেবা বন্ধ এবং এখন অবদি ফেইসবুক বন্ধ থাকাটা তিনি বেশ উপভোগই করছেন।
আড্ডায়, মিটিংয়ে অনেকদিন পর মানুষজনের সঙ্গে চোখেচোখ রেখে কথা বলা যাচ্ছে। কেউ আর মাথা নিচু করে হু-হা দিয়ে কথা চালিয়ে ফেইসবুক, ম্যাসেঞ্জার, হোয়াটস্অ্যাপ বা ভাইবারে বুঁদ হয়ে থাকছে না।
তিনি বলেন, “সরকার আরও একবার আমাদের ‘মাথা উঁচু’ করে কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছেন! এবং রসিকতা না করেই বলছি, সোশাল মিডিয়ার এই ‘ব্যান’ আমাকে ব্যক্তিগতভাবে নানান ঝামেলায় ফেললেও এই ভেবে খুশি যে নিশ্চয়ই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ধরতে পেরেছেন যে সোশাল মিডিয়া এরইমধ্যে দেশের মানুষ বিশেষ করে তরুণদের মাঝে শুধু জনপ্রিয়ই নয়, রীতিমতো প্রয়োজনীয় একটি মাধ্যম হয়ে উঠেছে। প্রবাসী বাংলাদেশিসহ দেশে থাকা অন্যান্য মানুষের কথা বাদই দিলাম। বাদ দিলাম আমার আপতকালীন সিএনজি’অলার কথা, পথে বিপদে পড়লেই যাকে ভাইবার করতাম!”
“তবে আমি কোনো মতেই এর প্রতিবাদ করছি না, কারণ প্রতিটি সরকারের প্রতিই আমার কিছুটা হলেও বিশ্বাস থাকে এবং আছে। সমর্থন বিষয়টা ভিন্ন।” বললেন এই ফেইসবুক তারকা।
তিনি আরও বলেন “আমি বিশ্বাস করি সরকার বা তার আইসিটি বিভাগ কোনো হুমকির সম্ভাবনা টের পেয়ে আমাদের জনগনেরই নিরাপত্তার জন্য এই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন এবং সময় মতো এই নিষেধাজ্ঞা আবার তুলে নেবেন।”
“এই ফাঁকে আরও বলতে চাই কোনো কিছুর হুমকির সম্ভাবনা টের পেয়েই সুইচ টিপে ইন্টারনেট ‘বন্ধ’ না করে সত্যিকারের সমস্যাগুলোকে যদি ‘নিয়ন্ত্রণ’ করার চর্চাটা একটু করতেন, তবে ওই যে শুরুতেই আমার ভালোবাসা হয়ে যাওয়া মুগ্ধতাটুকু কথা বলেছিলাম, তা পুরোপুরি ‘প্রেম’ হয়ে যাবে!” এভাবেই আশা প্রকাশ করলেন তিনি।
ফখরুল আবেদীন মিলন
তবে মিলনের বন্ধুরা অনেকেই দেশের নামকরা তারকা। বন্ধুদের জন্মদিনে মিলন ভাবতেন কীভাবে কী দিয়ে তাদের খুশি করা যায়? বিশেষ করে যখন বন্ধুরা সবাই প্রায় সফল এবং তাদের কাছে সব কিছুই আছে। মিলন তখন বন্ধুদের সঙ্গে সুন্দর স্মৃতি নিয়ে গল্প লেখা শুরু করলেন। তাঁর যে লেখালেখির হাত এত ভালো বন্ধুরাও তা জানতেন না। তারা সবাই এক কথায় মিলনের ভক্ত বনে যান।
এদিকে তারকাদের ভিতরের গল্প তাদের মুহূর্ত জানার জন্য সবসময় তাদের ভক্তরা ব্যকুল থাকেন। মিলনের সেইসব ‘প্রাইসলেস গিফট’ গল্পগুলোও হয়ে যায় ভক্তদের আকর্ষণের জায়গা। যার জন্মদিন সে তো বটেই অন্যেরাও বসে থাকেন মিলনের লেখা অসাধারণ জন্মদিনের শুভেচ্ছাসহ গল্প পড়তে।
মিলনের গল্প লেখা ভালোই চলছিলো হঠাৎ তাতে ছন্দপতন হয় ফেইসবুক বন্ধ করায়। মিলন অবশ্য এতে নাখোশ, তা নয়। তিনি সরকারের সিদ্ধান্তের উপর আস্থা রাখেন।
তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি মানুষের সুন্দর দিকটা যদি সামনে আনা যায় তবে পৃথিবীটা অনেক সুন্দর হয়ে যায় সহজেই। জন্মদিন ধরে গল্প লেখার উদ্দেশ্যও ছিল তাই। ভাবতাম এই সুন্দর গল্পগুলো হয়ত অন্যের জীবনেও সুন্দর কিছু মুহূর্ত তৈরি করতে পারবে।”
তাই তিনি আশা রাখেন শিগগিরই ফেইসবুকের উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে এবং আনন্দের সঙ্গে সবাই ফেইসবুকে বসবাস করতে পারবে।
নায়লা নাঈম, মডেল
হঠাৎ ফেইসবুক বন্ধে তার এ ধরনের কাজে কেমন ব্যাঘাত ঘটলো?
নায়লার সরল উত্তর “এতে চিন্তার কিছু নাই, কারণ এটি একটি সাময়িক অবস্থা।”
তিনি আরও জানান, বাস্তব জীবনে তার কাজের ব্যস্ততা এতটাই বেশি যে ফেইসবুক না থাকায় তার খুব বেশি অসুবিধাও হচ্ছে না। এমনকি তিনি কোনো প্রক্সি সার্ভার দিয়েও ঢোকার চেষ্টা করেননি।
তার কথায়, “আসলে ফেইসবুকের প্রতি ভালোবাসা এক রকম আসক্তিতে পরিণত হয়েছে। এই আসক্তি থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পেরে আমি বেশ ভালো অনুভব করছি।”
ইয়ারুজ্জামান, বাংলার গেঞ্জি
তাদের এই উত্থানের পেছনে ফেইসবুকের ভূমিকা স্বীকার করে অকপটে। এভাবে ফেইসবুক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা বেশ সমস্যার মুখেই পড়েছেন। পেইজ ভিউ কমে গিয়েছে শতকরা ৮০ ভাগ। ব্যবসাও শতকরা ৫০ ভাগ কম হচ্ছে, জানালেন তারা।
বাংলার গেঞ্জির উদ্যোগতা ইয়ারুজ্জামান অবশ্য ফেইসবুক বন্ধের সমস্যা থেকে দুইটি ইতিবাচক সিদ্ধান্তে এসেছেন। তিনি তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলেছেন। এই পরিকল্পনাটা অনেকদিন ধরে বাস্তবায়নের অপেক্ষায় ছিল। ফেইসবুক বন্ধের ধাক্কায় দ্রুতই তা বাস্তবে চলে আসে।
দ্বিতীয়ত, ফেইসবুক বন্ধ হওয়ায় তিনি অনেক সময় কাজে ব্যয় করতে পারছেন। তবে কাজ যতই ভালো হোক, ব্যবসা প্রসার এবং পসারের জন্য ফেইসবুক ফিরে আসলে তার খুব সুবিধা হয় এমনটি জানিয়েছেন ইয়ারুজ্জামান।
আশিকুর রহমান রিয়ান, ঢাকা ফুডিজ
সম্প্রতি ঢাকা ফুডিজের আয়োজনে একটি খাদ্যোৎসব করার পরিকল্পনাও চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। এরকম একটি সময়ে ফেইসবুক বন্ধ হওয়ায় তাদের যোগাযোগ এবং সমন্বয়ের সমস্যা দেখা দেয়। ফলে তারা বাধ্য হয় অনুষ্ঠানটির তারিখ পরিবর্তন করতে, জানান ঢাকা ফুডিজের কর্ণধার আশিকুর রহমান রিয়ান।
এতে শুধু যে তাদের কাজে ব্যাঘাত ঘটে তাই নয়, বেশ আর্থিক ক্ষতিও হয়।
ফেইসবুক বন্ধ হওয়ার পরেও ঢাকা ফুডিজের ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ বেশ ভালোভাবেই চলছে। চাইলে যে কেউ গুগল প্লে স্টোর থেকে অ্যাপটি নামিয়ে কাজে লাগাতে পারেন।
ফাহমিদা ইসলাম, লা মোড
বাংলাদেশে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও বড় উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসতে পারেন এবং সেটা ভালোভাবে সফলও হয়— এই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ফাহমিদা ইসলাম। তিনি ফ্যাশন হাউজ লা মোড’য়ের কর্ণধার।
প্রথমে ফেইসবুকে হাঁটি হাঁটি পা পা করে এগিয়ে চললেও, দেশীয় পণ্য এবং ফেইসবুকে নারীদের বিপুল আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারার কারণে লা মোড এখন পুরো দমে চলছে নিজস্ব বিক্রয়কেন্দ্র নিয়ে। তবে এখনও ফেইসবুক তাদের মার্কেটিংয়ে এবং প্রমোশনের সবচেয়ে বড় মাধ্যম।
হঠাৎ ফেইসবুক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ফাহমিদা তার ক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগের সেতু বলতে গেলে হারিয়েই ফেলেছেন। কমেছে বিক্রিবাট্টা।
তিনি বলেন, “নতুন কালেকশন পরে আছে অথচ শীতের কালেকশনের কথা জানানোও সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ব্যবসার তো ক্ষতি হচ্ছেই।”
ফারহানা মুনা, মুনাটিক
যেন বন্ধুকে বলার জন্য মনে অনেক কথা রয়ে গেছে, এদিকে আম্মু ফোন জব্দ করে রেখেছে তাই আর বলা যাচ্ছে না।
মুনা দেশের বাইরে থাকেন। তিনি নিজে ফেইসবুকে অনায়াসে ঢুকতে পারছেন। তবে যতবারই ঢুকছেন ততবারই হতাশ হচ্ছেন, কারণ তার ভক্তরা বেশিরভাগই বাংলাদেশে থাকেন। তার ফেইসবুক পেইজ এবং ইউটিউব চ্যানেলের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা এখন অনেকটাই নেমে গিয়েছে।
মুনা বলেন, “এতে কাজের অগ্রগতি এবং প্রেরণা দুটোরই ভারসাম্যই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। অনেকেই দেখতে পারবেন না বলে নতুন যে ভিডিও নিয়ে কাজ করছিলাম সেটির কাজ আগাতেও উৎসাহ পাচ্ছি না। এভাবে বন্ধ থাকার জন্য অনেক সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।”
এরকম রাজিব হাসান, মারিয়া নূর, আলিশা প্রধান কিংবা মজা লস’য়ের মতো পেইজও আজ অন্তঃসারশূন্য। বহু ফেইসবুকবাসীর জীবনও হয়ত এরকমভাবেই কাটছে রাতদিন। অনেকেই হয়ত গাইছেন ‘দিনগুলি মোর সোনার খাঁচায় রইলো না, রইলো না সেই যে আমার নানা রংয়ের দিনগুলি।’
তবে এটাও ঠিক, সরকার থেকে বারবার বলা হয়েছে পরিস্থিতির উন্নতি হলে অবশ্যই ফেইসবুকসহ অন্যান্য সোশাল মিডিয়ার কার্যক্রম স্বাভাবিক ভাবেই বাংলাদেশে চলবে। তাই হতাশ হওয়ার কিছু নেই।
পুনশ্চ: এই প্রতিবেদন প্রকাশকাল পর্যন্ত ফেইসবুক বন্ধ থাকায় ’লিংক’ ‘শেয়ার’ করা গেল না, (আপাতত)।
প্রচ্ছদের ছবি বাদে অন্যান্য ছবি স্ব স্ব ফেইসবুক থেকে।