ঘর সাজানোর জন্য ফুল

উৎসবে ঘর সাজাতে ফুলের খোঁজ নিতে পারেন শাহবাগ মোড় এবং কাঁটাবনে।

ইরা ডি. কস্তাতানভীর মাহমুদ ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Nov 2015, 09:30 AM
Updated : 22 Jan 2016, 11:59 AM

শীতের আগমন মানেই উৎসবের সমারোহ। আর উৎসবের অন্যতম অংশ হলো ঘর সাজানো। ঘর সাজাতে ফুলের জনপ্রিয়তা নতুন করে বলার কিছু নেই। তাছাড়া শীতের মৌসুমে ফুল উৎপাদন বাড়ে এবং ফুল তাজাও থাকে দীর্ঘসময়, তাই বছরের অন্য সময়ের তুলনায় এ সময় দামটাও থাকে কিছুটা কম।

রাজধানীতে ফুলের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় শাহবাগ চত্তর এবং কাঁটাবন। এ ছাড়াও বনানী, গুলশান ২, ফার্মগেইট খামারবাড়ি ইত্যাদি স্থানেও রয়েছে ছড়ানো ছিটানো ফুলের দোকান। তবে উৎসব ‍উপলক্ষ্যে এবং কমদামে ও পাইকারিতে ফুল কিনতে সবার পছন্দের তালিকায় শীর্ষে থাকে শাহবাগ এবং এরপর কাঁটাবন।

অনুষ্ঠানের ধরন হিসেবে বা চাহিদা অনুসারে শাহবাগ এবং কাঁটাবন থেকে ফুল কেনা যাবে পাইকারি এবং খুচরায়। তাছাড়া প্রয়োজনে অর্ডারও নিয়ে থাকে এ দোকানগুলো। অর্ডার এবং ক্রেতার চাহিদামতো দোকানের কর্মীরা সাজিয়ে দেয় বিয়ের স্টেজ, গেইট, বাসর ঘর, বিয়ের গাড়ি এবং অনুষ্ঠানের অডিটরিয়াম বা প্রাঙ্গণ।

শাহবাগের দোকানগুলোতে বিয়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে স্টেজ সাজানোর জন্য অর্ডার নেওয়া হয়। অর্ডার দেওয়ার জন্য দোকানগুলোতে বিভিন্ন ডিজাইনের স্টেজ-এর ছবি ভর্তি অ্যালবাম রয়েছে। সেখান থেকে পছন্দমতো ছবি বাছাই করে দিলে তারা সেই অনুসারে স্টেজ সাজিয়ে দিয়ে থাকে। তাছাড়া নিজের পছন্দের ডিজাইনের ছবি দেওয়া হলেও সেই অনুসারে সাজিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে থাকেন বলে জানান দোকানদাররা।

অর্ডার দিয়ে বিল পরিশোধ করার পর নির্ধারিত সময়ে কারিগর পাঠিয়ে স্টেজ প্রস্তুত করা হয়। ডিজাইনভেদে খরচ বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। তবে সর্বনিম্ন মূল্য দুই হাজার থেকে শুরু হয়।

বর্তমানে ওইসব দোকানে খুচরা বিভিন্ন ফুল পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য গোলাপ প্রতিটি ২ থেকে ৩ টাকা, গ্ল্যাডিওলাস প্রতিটি ১০ টাকা, জারভেরা ১৫ থেকে ২০ টাকা প্রতিটি, দোলনচাঁপা মুঠা ২০ টাকা, অর্কিড প্রকার ভেতে প্রতিটি ২০ থেকে ৫০ টাকা, রজনীগন্ধা এক স্টিক ৫ টাকা, গাঁদা ফুল বাসন্তি রংয়ের প্রতি চেইন ১৫ টাকা, কমলা রংয়ের প্রতি চেইন ১০ টাকা। কাঠবেলী ১০ টাকা।

শাহবাগ মোড়ে অবস্থিত 'শাহজালাল পুষ্পবিতান' এর স্বত্ত্বাধিকারী মোহাম্মদ হেলাল বলেন, “বছরের বিভিন্ন সময় এমন কি সারাদিনে সময়ভেদে ফুলের দাম ওঠানামা করে। এই শীতের মৌসুমে ফুলের উৎপাদন ও মান ভালো থাকায় এখন দাম একটু কম। আরও কিছুদিনের মধ্যে আরও বিভিন্ন ধরনের ফলু উঠবে। এদের মধ্যে আছে বেলী, চন্দ্রমল্লিকা, স্ট্রোমা, স্টাডিজ, জিপসি, ক্রিসেনথিমাম, কার্নিসান ইত্যাদি।”

শোলা বা স্টায়রোফোম

গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানের জন্য নকশা করা শোলা পাওয়া যায় যার প্রচলিত নাম কর্কশিট। তবে এক্ষেত্রে সাধারণত নকশার অর্ডার নেওয়া হয় না। বরং বিভিন্ন নকশাদার কর্কশিট থেকে বেছে নিতে হয়। শুধু কেনার সময় তার উপর প্রয়োজনমত নাম লিখিয়ে নিতে হয়। দাম সর্বনিম্ন আড়াইশ টাকা থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত।

এ ছাড়াও নকশাবিহীন প্লেইন কর্কশিট পাওয়া যায়, সেগুলো বিক্রি হয় পুরুত্বের হিসাবে।

যেমন- আধা ইঞ্চি পুরু কর্কশিটের দাম দেড়শ থেকে তিনশ টাকা। এক ইঞ্চি পুরু কর্কশিটের দাম হতে পারে আড়াইশ থেকে তিনশ টাকার মধ্যে।

এ বিষয়ে শাহবাগ মোড়ে মদিনা আর্ট নামের কর্কশিটের দোকানের স্বত্তাধিকারী আসলাম হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “কর্কশিটের শিল্প বাংলাদেশে বরাবরই অবহেলিত হয়ে আসছে। উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে অনেক প্রতিভাবান কর্কশিট শিল্পীরা এই পেশা ছেড়ে যাচ্ছেন।”

ছবি: আব্দুল মান্নান