ঢাকার কাছে দশ কাশবন

ইট পাথরে বন্দী জীবনের একঘেঁয়েমি কাটাতে আজই বেড়িয়ে আসতে পারেন কোনো কাশবনে।

মুস্তাফিজ মামুনবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Oct 2015, 09:03 AM
Updated : 2 Oct 2015, 09:04 AM

ঋতু পরিক্রমায় এখন চলছে শরৎকাল। আশ্বিনের নীল আকাশের নিচে কাশবনগুলো এখন শুভ্রতায় ঢেকে দিয়েছে প্রকৃতি।

ঢাকার কাছের দশটি কাশবনে ভ্রমণ তথ্য নিয়েই লাইফস্টাইলের এবারের বেড়ানো।

আফতাবনগর

রাজধানীর রামপুরা সেতুর উত্তর পূর্ব পাশে জহুরুল ইসলাম সিটি দিয়ে যেতে যেতে হবে আফতাবনগরের কাশবনে। এ পথে কিছু দূর গেলে লোহার সেতু পেড়িয়ে ওপারে প্রায় আধা কিলোমিটার সামনে গেলে শুধুই কাশবন। এ জায়গা মূলত আফতাব নগরের পেছনের অংশ।

আশুলিয়া

হযরতপুরের কাশবন।

আফতাব নগরের কাশবন।

মিরপুর বেড়িবাঁধ ধরে আশুলিয়া যেতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পশ্চিম পাশের বিস্তীর্ণ জায়গাটি এখন কাশফুলে ঢাকা। উত্তরা এপার্টমেন্ট প্রকল্পের ফটক ধরে জায়গাটিতে প্রবেশ করা যায়। এখানে গাড়ি নিয়ে ভ্রমণে গেলে সুবিধা হবে।

পুরো জায়গাতেই রয়েছে সুন্দর পিচঢালা পথ। সড়কগুলোর পাশেই আছে ফুটন্ত কাশবন। উত্তরা আবাসিক এলাকার পেছনের দিক এটি। মাসকট প্লাজার পাশের সড়কটি ধরে সোজা পশ্চিমে চললেও এখানে পৌঁছান যায়।

ঢাকা উদ্যান

মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধের লাগোয়া পশ্চিম পাশে ঢাকা উদ্যান হাউজিংয়ের বিভিন্ন প্লটে এখন কাশফুলের মেলা। এখানকার সুন্দর কাশবন দেখতে হলে যেতে হবে একটু ভেতরের দিকে, বুড়িগঙ্গার তীরে।

ওয়াশপুর

মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ থেকে বছিলা সড়ক ধরে যেতে হবে ওয়াশপুর। এখানে বছিলা সেতুর পাশ দিয়ে হাতের বাঁয়ে চলে যাওয়া সড়কে গেলে বিভিন্ন আবাসন প্রতিষ্ঠানের জায়গাগুলো এখন কাশফুলের রাজ্য। এখানকার কাশবনগুলোও বুড়িগঙ্গা নদী পর্যন্ত ছুঁয়েছে।

ঝিলমিল আবাসিক এলাকা

বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় সেতু পেড়িয়ে মাওয়া সড়কে যাবার পথে দুই পাশে পড়বে বিস্তীর্ণ সাদা কাশবন। এটি রাজউকের ঝিলমিল আবাসিক এলাকা। এখানকার বালু ভরাট করা খালি প্লটগুলো এখন ছেয়ে গেছে কাশফুলে।

ধলেশ্বরীর তীরে

ঝিলমিল আবাসিক এলাকার কাশবন।

আশুলিয়ার কাশবন।

ঢাকা থেকে মাওয়া সড়কে যেতে কুচিয়ামারা এলাকার ধলেশ্বরী নদী। সেখান থেকে নৌকা ভাড়া করে যেতে হবে একটু ভেতরের দিকে। এখানে নদীর দুই পাশে বিস্তীর্ণ কাশবনে ঢাকা।

হযরতপুর

কেরাণীগঞ্জের আরেক কাশফুলের জগত হযরতপুর। এখানে কালিগঙ্গা নদীর বাঁকে বাঁকে দিগন্তে মিলিয়েছে কাশবনের বিস্তৃতি।

বছিলা সেতু পার হয়ে আটিবাজার ছেড়ে আরও কিছু দূর গেলে হযরতপুর। সেখান থেকে গুদারা (খেয়া নৌকা) পার হলেই এ কাশবন। নিজস্ব বাহন না থাকলে এই জায়গায় যাওয়ার সহজ বাহন অটো রিকশা।

মায়ার দ্বীপ

মেঘনার বুকে অনন্য সুন্দর এক জায়গা মায়ার দ্বীপ। এ দ্বীপের বিভিন্ন জায়গায় দেখতে পাবেন কাশফুলের সমাহার। মেঘনার বুকে জেগে ওঠা এ দ্বীপে কাশফুল ছাড়াও ভালো লাগবে এখানকার মানুষের জীবনযাত্রা।

ঢাকার গুলিস্তান থেকে বাসে বৌদ্দের বাজার। সেখান থেকে মেঘনার ঘাট থেকে ইঞ্জিন নৌকায় যেতে হবে মায়ার দ্বীপ।

যমুনার চর

যমুনার চরে কাশবন দেখতে যেতে হবে মানিকগঞ্জের আরিচা ঘাটে। সেখানকার পুরনো ফেরিঘাটে গিয়ে ইঞ্জিন নৌকায় চড়ে যেতে হবে যে কোন চরে। আরিচার বুকে জেগে ওঠা চরগুলো কাশফুলে এখন ভরপুর।

গাবতলী থেকে শুভযাত্রা, লাক্সারি পরিবহনে যাওয়া যাবে আরিচা। ভাড়া ৮০ থেকে ১২০ টাকা। পদ্মা কিংবা যমুনার চরে ভ্রমণের জন্য দশজনের উপযোগী একটি ইঞ্জিন নৌকার সারাদিনের ভাড়া পড়বে ১ হাজার ২শ’ থেকে ১ হাজার ৫শ’ টাকা। 

পদ্মার চর

পদ্মার চরে কাশবন দেখতে হলে যেতে হবে মাওয়ার শিমুলিয়া ঘাটে। সেখান থেকে ইঞ্জিন নৌকায় চড়ে যে কোনো চরে গেলেই পেয়ে যাবেন কাশবন।

ঢাকা থেকে মাওয়া যাওয়া জন্য ইলিশ পরিবহন ভালো। ছাড়ে গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়া থেকে।

ওয়াশপুরের কাশবন।

ওয়াশপুরের কাশবন।

প্রয়োজনীয় তথ্য

কাশবনগুলো সাধারণত নীরব এবং জনবিচ্ছিন্ন জায়গায় হয়। তাই সেখানে একাকী ভ্রমণে না গিয়ে দলবদ্ধভাবে যাওয়াই নিরপাদ। কাশফুলের পাতা বেশ ধারালো। তাই সেখানে সাবধানে চলতে হবে। এ ভ্রমণে ঘটা করে দিনক্ষণ ঠিক করার প্রয়োজন নেই।

যে কোনো ছুটির দিনে কিংবা অফিস শেষে একটু সময় বের করেই ঢুঁ মারতে পারেন কাছের কোনো কাশবনে। পানির বোতল, প্লাস্টিকের প্যাকেট কিংবা অন্য কোনো অপচনশীল বর্জ্য বেড়াতে গিয়ে ফেলে আসবেন না।

ছবি: মুস্তাফিজ মামুন।