ডেঙ্গু নিয়ে সাবধানতা

প্রতিকারের চাইতে প্রতিরোধের ব্যবস্থাই কার্যকর বেশি।

মামুনুর রশীদ শিশিরবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Sept 2015, 10:29 AM
Updated : 7 Oct 2015, 09:44 AM

এডিস মশার মাধ্যমে মানুষের শরীরে আসে এবং এডিস মশাই আক্রান্ত রোগীর রক্ত খাওয়ার মাধ্যমে এই রোগ সুস্থ মানুষের দেহে ছড়ায়।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন ফাস্ট কেয়ার হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. মোহাম্মদ কামরুল হাসান।

তিনি বলেন, “শুনতে খটকা লাগলেও ডেঙ্গু জ্বর মূলত অভিজাত শ্রেণির মানুষদের রোগ। বস্তিতে, ডোবার আশপাশে বসবাসকারী মানুষের এই রোগ খুব কম হয়। বরং বাড়ির আশপাশে, বারান্দায় টবে গাছ করেন যারা তাদেরই এই রোগ বেশি হতে দেখা যায়। কারণ গাছের টবে বা অন্যান্য স্থানে জমে থাকা পানিতে এডিস মশা বংশবিস্তার করে।”

লক্ষণ

কামরুল হাসান বলেন, “ডেঙ্গু জ্বরকে সাধারণত তিনটি পর্যায়ে ভাগ করা হয়, ফ্রেব্রাইল, অ্যাফেব্রাইল ও ক্রিটিকাল।”

এই চিকিৎসক জানান, ফেব্রাইল পর্যায়ে রোগীর প্রচণ্ড জ্বর থাকে। সঙ্গে শরীর, হাত, পা, মাথা ও চোখের চারপাশে ব্যথা হতে পারে। রোগী প্রচণ্ড দুর্বল অনুভব করবে। সাধারণত তিন থেকে পাঁচ দিন পর্যন্ত এই পর্যায় থাকে। এরপর জ্বর সেরে যায় এবং শুরু হয় অ্যাফেব্রাইল পর্যায়।

এই পর্যায় বেশি বিপজ্জনক। জ্বর সেরে যাওয়ার পর রোগীর রক্তের শ্বেতকণিকা, অনুচক্রিকার পরিমাণ কমতে শুরু করে। পাশাপাশি দাঁত মাজার সময় রক্তক্ষরণ, পায়খানার সঙ্গে রক্ত যাওয়া, শরীরে ছোট লাল দানা দেখা দেওয়া ইত্যাদি হতে পারে। অরুচি, প্রচণ্ড দুর্বলতা, মাথা ঘোরা, পেটে ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদিও থাকতে পারে।

প্রতিরোধ

পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাই এর মূল প্রতিরোধ ব্যবস্থা। বাসার আশপাশে কোথাও যাতে পানি জমে থাকতে না পারে সেবিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। নিয়মিত মশার ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে। মশার বংশবৃদ্ধি রোধ, মশা নিধন ও প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

ঘরের আঙিনা, ফুলের টব, বারান্দা, এসির নিচে জমানো পানি নিয়মিত পরিষ্কার করে রাখতে হবে। দিনের বেলা এডিস মশা কামড়ায় বলে দিনে মশানাশক স্প্রে বা মশারি ব্যবহার করতে হবে। শিশুদের ফুলপ্যান্ট পরানো উচিত। আক্রান্ত ব্যক্তিকে আলাদা বিছানায় মশারির ভেতর রাখতে হবে।

চিকিৎসা

ডা. কামরুল হাসান বলেন, “ডেঙ্গু জ্বর সাধারণত পাঁ থেকে সাত দিনের মধ্যেই সেরে যায়। জ্বর হলে পূর্ণ বিশ্রামে থাকুন। পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে পানি, স্যালাইন, ডাবের পানি, ফলের শরবত পান করা উচিত। স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিতে ভেজানো কাপড় দিয়ে বারবার শরীর মুছে দিতে পারেন। জ্বর কমাতে প্যারাসিটামল ট্যাবলেট খাওয়া যাবে।

তবে কোনো অবস্থায়ই ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া যাবে না। ডেঙ্গু হেমোরেজিক জ্বর দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে।

আরও প্রতিবেদন: