ত্বকের যত্নে গ্রিন টি

ওজন, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ বা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানো ছাড়া সৌন্দর্যচর্চাও করা যায়।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Sept 2015, 10:50 AM
Updated : 8 Sept 2015, 10:58 AM

খাদ্য ও পুষ্টিবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে জানানো হয়, সাধারণ চা এবং গ্রিন টি’র মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে প্রক্রিয়াজতকরণে। অন্যান্য চা তৈরি করতে ‘ফারমেনটেইশন বা গাঁজন প্রক্রিয়া চালানো হয়ে, গ্রিন টি’র ক্ষেত্রে তা করা হয় না।

ফলে অন্যান্য চা থেকে গ্রিন টি’র অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ও পলি-ফেনলস বেশি থাকে। তাই এই চায়ে উপকারিতাও বেশি।

‘আর্কাইভস অফ ডার্মাটলজি’র একটি জার্নালে গ্রিন টি বিষয়ক কিছু তথ্য প্রকাশিত হয়।

গবেষণাটির একজন লেখক এবং ‘কেইস ওয়েস্টার্ন রিসার্ভ ইউনিভার্সিটি ইন ক্লেভল্যান্ড’য়ের ডার্মাটলজি রিসার্চ বিভাগের পরিচালক হাসান মুখতার (পিএইচডি) বলেন, “মানুষের ত্বকের জন্য গ্রিন টি বেশ উপকারী।”

এই গবেষণার এক পর্যায়ে মুখতার এবং তার দল মানুষের ত্বকের উপর গ্রিন টি’র প্রভাব নিয়ে গবেষণা করেন। সেখানে দেখা যায়, গ্রিন টি’য়ে থাকা পলিফেনল ত্বকের জন্য উপকারী। তাছাড়া এতে আরও রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লামাটরি এবং অ্যান্টিক্যান্সার উপাদান।

গ্রিন টি’র উপকারিতা নিয়ে কথা বলেন অ্যারোমা থেরাপিস্ট শিবানি দে। তিনি রূপচর্চায় গ্রিন টি’র বিভিন্ন ব্যবহারের বিষয়ে পরামর্শ দেন।

তার কথায় “গ্রিন টি খুব ভালো টোনার হিসেবে কাজ করে। এটি ত্বকের এলার্জি ও প্রদাহ দূর করতে সাহায্য করে।”

টোনার তৈরির জন্য এক কাপ পানিতে পাঁচ চা-চামচ গ্রিন টি, এক চা-চামচ পুদিনা পাতা ১০ মিনিট ফুটিয়ে নিতে হবে। এরপর ঠাণ্ডা করে ছেঁকে একটি বোতলে সংরক্ষণ করে রাখা যাবে। এই টোনার দিনে দুই থেকে তিন বার ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যাবে।

চোখের ফোলা ভাব এবং চোখের ডার্ক সার্কেল কমাতেও গ্রিন টি বেশ উপকারী।

ব্যবহৃত দুটি গ্রিন টি’র ব্যাগ দুই ঘণ্টা ফ্রিজে রেখে দিতে হবে। চোখ বন্ধ করে চোখের উপর ঠাণ্ডা টি ব্যাগ ১০ মিনিট রাখুন। এক সপ্তাহ এভাবে ব্যবহারে চোখের ফোলাভাব ও কালি পড়ার সমস্যা কমে আসবে।

শুকনা গ্রিন টি’র পাতা মধুর সঙ্গে মিশিয়ে স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করা যায় যা লোমকূপের ময়লা এবং মৃত কোষ দূর করে ত্বক নরম ও মসৃণ করতে সাহায্য করে।

গ্রিন টি দিয়ে ঘরোয়া মাস্ক তৈরির উপায় জানান শিবানি দে।

এই মাস্ক তৈরি করতে প্রয়োজন হবে একটি কলা, এক চা-চামচ গ্রিন টি, এক চা-চামচ মধু এবং এক চা-চামচ টক দই। সব উপাদান ভালো মতো মিশিয়ে ঘন প্যাক তৈরি করে মুখে লাগাতে হবে। ২০ মিনিট অপেক্ষা করে মাস্ক শুকিয়ে আসলে ধুয়ে ফেলুন।

এটি শুষ্ক ত্বকের জন্য খুব ভালো ময়েশ্চারাইজিং মাস্ক হিসেবে কাজ করে।

তাছাড়া গ্রিন টি ও বেকিং সোডা মিশিয়েও একটি মাস্ক তৈরি করা সম্ভব, যা ত্বকের লালচেভাব ও অস্বস্তি দূর করতে সাহায্য করবে।

মাস্ক তৈরিতে প্রয়োজন হবে দুটি টি ব্যাগ, বেকিং সোডা ও মধু।

টি ব্যাগ ছিড়ে গ্রিন টি বের করে এর সঙ্গে বেকিং সোডা ও পরিমাণ মতো মধু মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করতে হবে। মিশ্রণ বেশি আঠালো মনে হলে সামান্য পানি মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে। এটি ত্বকে মেখে ১০ থেকে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলতে হবে।

গ্রিন টি চুলের জন্যও খুব উপকারী। তিনচারটি গ্রিন টি ব্যাগ এক লিটার পানিতে এক ঘণ্টা ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে নিন। এরপর চুল শ্যাম্পু এবং কন্ডিশন করার পর সেই পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।

শিবানি দে বলেন, “এটি চুল শক্ত ও মজবুত করবে। চুল পড়া কমাতেও ব্যবহার করা করতে পারেন গ্রিন টি। গ্রিন টি চুলের গোড়া শক্ত করে এবং হেয়ার ফলিকল অ্যাক্টিভ করে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।”

ছবি: দীপ্ত।

আরও খবর: