বর্ষায় রূপচর্চা

স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ার কারণে ত্বক এবং চুল প্রাণহীন হয়ে যায়। কারণ এই সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ অন্য মৌসুমের তুলনায় বেশি থাকে। ফলে ত্বক ও চুলের নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 July 2015, 12:25 PM
Updated : 22 July 2015, 02:46 PM

রূপচর্চাবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে বর্ষা মৌসুমে ত্বকের ধরন ভেদে বিশেষ যত্ন নেওয়ার পন্থা জানানো হয়। 

শুষ্ক ত্বক

বর্ষার মৌসুমে আর্দ্রতা আরও কমে যায়। ফলে ত্বকে চুলকানি বা অস্বস্তি অনুভূত হতে পারে। তাই বর্ষার গুমোট আবহাওয়ায় ত্বকে ক্ষারযুক্ত সাবান বা অন্যান্য প্রসাধনী ব্যবহার এড়িয়ে চলতে হবে। তাছাড়া এই সময় অতিরিক্ত গোসল এবং সাবান ব্যবহারের ফলে এই মৌসুমে ত্বকে একজিমা এবং অন্যান্য সমস্যা হতে পারে।

মুখের ত্বকের যত্ন

- ত্বক কোমল রাখতে ক্ষারবিহীন সাবান ব্যবহার করতে হবে।

- ত্বক পরিষ্কারের পর নমনীয়তা ধরে রাখতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।

- এই মৌসুমে ত্বকে যতটা সম্ভব কম স্ক্রাবার ব্যবহার করা উচিত।

- রাতে ঘুমানোর আগে মধুর সঙ্গে দুধ মিশিয়ে ত্বকে মাখলে কোমল থাকবে।

ছবি: মুস্তাফিজ মামুন / বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

পুরো শরীরের ত্বকের যত্ন

- গোসলের জন্য হালকা সাবান ব্যবহার করতে হবে।

- কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করতে হবে।

- গোসলের পর ত্বক বেশি ঘষে মোছা উচিত নয়। কাপড় দিয়ে চেপে চেপে পানি মুছে নেওয়া উচিত।

- ক্যাফেইন এবং কোমল পানীয় এড়িয়ে চলা উচিত। এই পানীয়গুলো ত্বক শুষ্ক করে দেয়।

- পুরো শরীরের ত্বক কোমল রাখতে পানি সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত।

তৈলাক্ত ত্বক

বর্ষার মৌসুমে তৈলাক্ত ত্বকের লোমকূপ থেকে আরও বেশি পরিমাণে তেল নিঃসৃত হতে থাকে। অতিরিক্ত তেলের সঙ্গে বাইরের ধুলাময়লা জমে লোমকূপ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে ব্ল্যাক হেডস, ব্রণ ইত্যাদি সমস্যা আরও বেশি মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। তাই এ সময় তৈলাক্ত ত্বক নিয়ম মতো ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।

তৈলাক্ত ত্বকের জন্য অয়েল ফ্রি ফেইস ওয়াস এবং টোনার ব্যবহার করতে হবে। আর তৈলাক্ত হলেও ত্বক ময়েশ্চারাইজ করা অত্যন্ত জরুরি। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য অ্যালোভেরা জেল খুবই উপকারী।

ঠোঁট ফাটা

এই মৌসুমে ঠোঁট ফাটা বা ঠোঁটের চামড়া ওঠা খুবই সাধারণ সমস্যা। বর্ষায় ঠোঁট নরম রাখতে ঠোঁটে লিপ বাম ব্যবহার করা উচিত। এতে ঠোঁটের নমনীয়তা বজায় থাকবে এবং ঠোঁট ফাটার সম্ভাবনাও কমবে।

নিস্তেজ চুল

ভেজা মৌসুমে চুলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চুল দেখায় নিস্তেজ ও প্রাণহীন। তাই ত্বকের মতো চুলেরও যত্ন নেওয়া উচিত।

এই সময় চুল পরিষ্কারে কেমিকলযুক্ত শ্যাম্পু যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলাই ভালো। আর শ্যাম্পুর পর অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।

সুন্দর চুলের জন্য পুষ্টিকর খাবার খাওয়া জরুরি। প্রচুর পানি ও প্রোটিনযুক্ত খাবার খেতে হবে সুন্দর চুলের জন্য।

খুশকি

বর্ষায় চুলে খুশকি হওয়া খুবই স্বাভাবিক সমস্যা। বাতাসে আর্দ্রতা, মাথার তালু চুলকানো ইত্যাদি কারণে খুশকি বাড়ে। মাথার তালুতে সিবাম তেল, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এবং জিঙ্ক ও নিয়াসিন পুষ্টির অভাবের কারণে খুশকি হয়ে থাকে।

খুশকি দূর করতে নিয়ম মতো হালকা শ্যাম্পুর সাহায্যে চুল ও মাথার তালু পরিষ্কার করতে হবে। তাছাড়া অ্যান্টি-ড্যানড্রাফ এবং অ্যান্টি-ফাংগাল শ্যাম্পু ব্যবহার বেশ উপকারী।

এছাড়াও ভেজা মৌসুমে ত্বকের কিছু বিশেষ যত্ন নেওয়া জরুরি।

- শুধু দিনে নয়, রাতেও ত্বক ময়েশ্চারাইজ করা উচিত। কারণ সারাদিনে ত্বকের যা ক্ষতি হয় তা রাতে পুনর্গঠিত হতে সাহায্য করে। প্রতি রাতে ঘুমানোর আগে ত্বক ময়েশ্চারাইজ করা হলে ত্বকে অকালে বলি রেখা পড়ার সম্ভাবনা কম থাকে এবং ত্বক উজ্জ্বল হয়।

- ত্বক গভীরভাবে পরিষ্কার করতে এবং ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে সপ্তাহে একবার এক্সফলিয়েট করা জরুরি।

- মেঘলা দিনের মেঘ ভেদ করে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি পৃথিবীতে পৌঁছায়। তাই এই মৌসুমেও সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত।