জেনে রাখা ভালো

মানুষের আঙুলের নাম কীভাবে রাখা হয়? প্রশ্নটি পাঠিয়েছে: তৌসিফ মাহমুদ ইরাজ, কাঁঠালবাগান, ঢাকা

উত্তর: মানুষের এক এক হাতে পাঁচটি করে আঙুল, পায়েও তেমনই। আঙুলগুলোর নাম তো জানোই-- বৃদ্ধাঙ্গুলি, তর্জনী, মধ্যমা, অনামিকা ও কনিষ্ঠা। ইংরেজিতে বললে-- থাম্ব, ইনডেক্স ফিঙ্গার, মিডল ফিঙ্গার, রিং ফিঙ্গার ও লিটল ফিঙ্গার।

একটা মজার জিনিস কি জানো? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় আঙুলগুলোর কিন্তু কোনো নাম নেই; সংখ্যা দিয়ে ওদের চিহ্নিত করা হয়। বুড়ো আঙুল ১ নম্বর, তারপর পর্যায়ক্রমে কনিষ্ঠা ৫ নম্বর আঙুল। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অবশ্য আমাদের আঙুলগুলোকে দুভাগে ভাগ করা হয়-- বুড়ো আঙুল একরকম, বাকি চারটা আঙুল আরেক রকম।

এখন, এই নামগুলো কী করে এল, তাই তো জানতে চাচ্ছ? বলছি, শোনো। প্রথম আঙুলটিকে বাংলায় বলে বুড়োআঙুল বা বৃদ্ধাঙ্গুলি। কেন বলা হয়, তা জানি না; সম্ভবত আঙুলটি দেখতে বুড়োদের মতো বলেই এমন নাম দেওয়া হয়েছে। ইংরেজিতে আঙুলটিকে বলে থাম্ব।

দুই নম্বর আঙুল, মানে ইনডেক্স ফিঙ্গারের নাম এসেছে ল্যাটিন শব্দ ‘ইন্ডিকেটাস’ থেকে, যার অর্থ নির্দেশ করা। খেয়াল করে দেখ, তুমি কোনো কিছু নির্দিষ্ট করে দেখাতে গেলে, এই আঙুল দিয়েই দেখাও। সে জন্য এই আঙুলকে ইংরেজিতে পয়েন্টার ফিঙ্গারও বলে। আরও বলে ফোরফিঙ্গার, ট্রিগার ফিঙ্গার।

পরের আঙুলটার নাম মিডল ফিঙ্গার বা মধ্যমা কেন রাখা হল, তা তো তুমি নিজেই বুঝতে পারছ; এটি পাঁচটি আঙুলের মধ্যে তিন নম্বর, মানে মাঝের আঙুল কিনা, তাই।

চার নম্বর আঙুলটি, যার নাম রিং ফিঙ্গার, সেটি কিন্তু খুবই বিখ্যাত। প্রাচ্যে, মানে আমাদের এই অঞ্চলে আঙুলটিকে ডাকা হত নামহীন বলে। আমরা এখনও আঙুলটিকে সেই নামেই ডাকি। ‘অনামিকা’ শব্দটি কিন্তু একটি সংস্কৃত শব্দ, অর্থ-- নামহীন। আঙুলটির চীনা নামটির অর্থও তাই। আবার, পশ্চিমের দেশগুলোতে আগে মনে করা হত, এই আঙুলটির কিছু জাদুকরি ক্ষমতা আছে। তারা মনে করত, আঙুলটির সঙ্গে হৃদয়ের সরাসরি যোগ আছে। আর তাই, তারা বিয়ে করার পর বিয়ের আংটি এই আঙুলে পরত। এখন সেই রীতিটিই সারাবিশ্বে প্রচলিত হয়ে পড়েছে। তোমার বাবা-মাকেও দেখবে, বিয়ের আংটি এই আঙুলে পরে থাকেন। তবে সব্বাই হেসে দেবে, যদি এখন কাউকে বলো, আঙুলটির সঙ্গে হৃদয়ের সরাসরি যোগ আছে। তবে রীতি অনুযায়ী আঙুলটির নাম এখনও সেটিই থেকে গেছে; আঙুলটিকে এখনও রিং ফিঙ্গারই বলা হয়।

আর পাঁচ নম্বর আঙুলটি, মানে হাতের একদম ছোট্ট আঙুলটির নাম যে কনিষ্ঠা হবে, তা আর আশ্চর্য কী! ইংরেজিতেও নামটি লিটল ফিঙ্গার। অনেকে আবার আদর করে আঙুলটিকে পিংকি ফিঙ্গারও বলেন।